সরকারের পদত্যাগ দাবিতে চলমান যুগপৎ আন্দোলনে জনগণ সম্পৃক্ত হওয়ায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক পরাজয় ঘটেছে বলে মন্তব্য করেছেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না। তিনি বলেন, দুর্নীতি-লুটপাট ও দুঃশাসনের কারণে আওয়ামী লীগকে মানুষ এখন ঘৃণার চোখে দেখে। সর্বস্তরের মানুষ এই সরকারের পদত্যাগ চায়। এরা বিদায় না হওয়া পর্যন্ত এ দেশের কারোরই কোনো ভালো সম্ভব না।
বুধবার (৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজধানীর পুরানা পল্টনে ভাসানী অনুসারী পরিষদের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ভাসানী ছাত্র পরিষদ আয়োজিত ‘বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক সংকটে ছাত্রসমাজের ভূমিকা’- শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মান্না এসব কথা বলেন।
মান্না বলেন, আমরা যখন কোনো কর্মসূচি দেই, তখন আওয়ামী লীগ পাল্টা কর্মসূচি দেয়। তারা আমাদের কর্মসূচিতে গুলি চালিয়ে অশান্তি করে। আওয়ামী লীগ আন্দোলন ভাঙতে পারে, গড়তে পারে না। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার সময় তারা একটা মিছিলও করতে পারেনি।
তিনি বলেন, অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবি এখন গণদাবিতে পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশে সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবিতে এখন আন্তর্জাতিক মহলও জোর দিয়েছে। চলমান যুগপৎ আন্দোলনে আগামী চার মাসের মধ্যে এই সরকারের পতন, চার মাসের মধ্যেই নির্বাচন।
মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, মুক্তিযুদ্ধসহ দেশের বিভিন্ন আন্দোলনে ছাত্রসমাজের ভূমিকা ছিল অপরিসীম। কিন্তু গত সাড়ে ১৪ বছরে ছাত্রসমাজ মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারেনি। চলমান আন্দোলন সফলে ছাত্রসমাজকে এগিয়ে আসতে হবে।
সর্বদলীয় ছাত্রঐক্যের ব্যাপারে ডাকসুর সাবেক এই ভিপি বলেন, যদি এক প্ল্যাটফর্মে আসা যায় তা সবচেয়ে ভালো- যদি না পারা যায়, তাহলে যুগপৎভাবে গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার পুনরুদ্ধারের আন্দোলন চালিয়ে যেতে হবে। ’৫২'র ভাষা আন্দোলন এবং ’৬২'র শিক্ষা আন্দোলনে মূল রাজনৈতিক সংগঠনগুলো পুরোপুরি ঐক্যবদ্ধ ছিল না, এমনকি ৬ দফা আন্দোলন বেগবান-দুর্বার করার লক্ষ্যে সংগঠনগুলোকে অগ্রবর্তী করতে বড় ভূমিকা রেখেছিল ছাত্র সংগঠনগুলোই।
অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তার বক্তব্যে গণতন্ত্র মঞ্চের সমন্বয়ক ও ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু বলেন, একদফা দাবিতে যুগপৎ আন্দোলন চলছে। আন্দোলনে ইতোমধ্যে জনগণ সম্পৃক্ত হয়েছে। সুতরাং সরকারের পতন সন্নিকটে। সরকার যদি গণদাবি মেনে অবিলম্বে পদত্যাগ করে নির্দলীয় সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর না করে, তাহলে জনগণই আন্দোলনের মধ্য দিয়ে তাদের দাবি মানতে বাধ্য করবে। এ সময় চলমান আন্দোলনে ছাত্রদের সম্পৃক্ততার ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
ভাসানী ছাত্র পরিষদের আহ্বায়ক মোহাম্মদ শাকিলের সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব মো. ফাইজুল্লাহ নোমানের সঞ্চালনায় এতে আরও বক্তব্য দেন- বিএনপির মিডিয়া সেলের আহবায়ক জহির উদ্দিন স্বপন, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, ভাসানী অনুসারী পরিষদের সদস্য সচিব হাবিবুর রহমান রিজু, বিএনপির কেন্দ্রীয় সদস্য মো. দুলাল হোসেন, ইসলামি ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের সভাপতি শরিফুল ইসলাম রিয়াদ, ছাত্রদলের সহসভাপতি তাবিবুর রহমান সাগর, নাগরিক ছাত্রঐক্যের সভাপতি মোশাররফ হোসেন, সাধারণ সম্পাদক মো. তরিকুল ইসলাম, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক সৈকত আরিফ, বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি তরিকুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম আদিব, ছাত্র পক্ষের সভাপতি মো. প্রিন্স, জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক ছাত্র আন্দোলনের সভাপতি মাসুদ রানা জুয়েল, ছাত্র জমিয়ত বাংলাদেশের সভাপতি নিজাম উদ্দিন আল আদনান, জাগপা ছাত্রলীগের সভাপতি আব্দুর রহমান ফারুকী, বাংলাদেশ খেলাফত ছাত্র মজলিসের সভাপতি মোল্লা মো. খালেদ সাইফুল্লাহ, গণতান্ত্রিক ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক কাজী কামরুল হাসান প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।
মন্তব্য করুন