দেশে কর্তৃত্ববাদী প্রভুর দেশে ‘কঠোর কর্তৃত্ববাদের প্রভু’র শাসন চলছে অভিযোগ করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, মনে হচ্ছে আবার সেই পুরনো টার্গেট কিলিং করা হচ্ছে।
আজ সোমবার (৩০ অক্টোবর) বিকেলে এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করে তিনি বলেন, দেশ এখন ক্রমান্বয়ের প্রভু ও দাসের রেখা দ্বারা বিচ্ছিন্ন। এখানে ব্যক্তির স্বয়ং সম্পূর্ণতা হওয়া সম্ভব নয়। এখানে কঠোর কর্তৃত্ববাদের প্রভু সরকার প্রধান গোটা দেশকে পরাধীন করেছে। এই পরাধীনতার শৃঙ্খল ভাঙতে জনগণ এখন দৃঢ় সংকল্প বদ্ধ। আদর্শ ও ন্যায়ের সংগ্রাম কখনো পরাজিত হয় না। চক্রান্তকারী নিষ্ঠুর আওয়ামী সরকারের পতন অত্যাসন্ন। গণতন্ত্রের প্রত্যাবর্তন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি, উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে প্রেরণ, নির্বাচনকালীন নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের দাবিতে চলমান আন্দোলন মামলা-হামলা-গ্রেপ্তার দিয়ে কখনোই থামানো যাবে না। এই অবস্থায় বিএনপিসহ সমমনাদের ঘোষিত মঙ্গলবার থেকে দেশব্যাপী সড়ক-রেল-নৌ পথ অবরোধ কর্মসূচি সফল করার দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান রিজভী।
পরিকল্পিত সন্ত্রাস ও টার্গেট কিলিংয়ের অভিযোগ তুলে রিজভী বলেন, গত ২৮ অক্টোবর থেকে প্রতিদিন ক্রমান্বয়ে আওয়ামী পরিকল্পিত সন্ত্রাসের অনেক দৃশ্য এর ভিডিও এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হচ্ছে, এর বিভিন্ন ফুটেজ নানাভাবে দেখা যাচ্ছে। সায়েদাবাদ থেকে লাঠিসোঁটা নিয়ে পুলিশ প্রটেকশন প্রধান বিচারপতির বাসভবনের গেইটে আক্রমণ ও ভাঙচুর করতে দেখা যায়। দেখুন এটা ব্যাপকভাবে ভাইরাল হয়েছে এবং যারা হাতে লাঠি নিয়ে প্রধান বিচারপতি বাসভবনের গেইটে ভাঙচুর করছে... এদের সাথেই কিন্তু পুলিশরা রয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেক এগুলো বের হচ্ছে।
তিনি বলেন, আরেক উদ্বেগজনক ঘটনা হচ্ছে যেগুলো না বললেই নয়। মনে হচ্ছে কিছু টার্গেট কিলিং হচ্ছে। রাজশাহীতে দুই ডাক্তার একজন এমবিবিএস ডাক্তার, আরেকজন পল্লী চিকিৎসক দুজন এক রাতেই নিহত হয়েছে। তারা একটি রাজনৈতিক সংগঠনের এলাকার নেতা এবং জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের কুমিল্লা জেলার মোকাম ইউনিয়নের নেতা জাকির হোসেনকে পুলিশ ধাওয়া করে, এই ধাওয়ার মুখে সে পড়ে যায় এবং মৃত্যুবরণ করে। এগুলো সব টার্গেটেড বিষয় বলে আমাদের কাছে মনে হচ্ছে। আমি এসব ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করছি।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের প্রধানমন্ত্রী নিজেকে প্রভু ও জনগণকে দাসে পরিণত করেছেন। দেশের মানুষ বিরোধী দল সব অধমের অধম বলে তার আচরণের মধ্যে ফুটে ওঠে। ক্ষমতা-উন্মত্ত আওয়ামী লীগ জনগণের আস্থা ও সমর্থন হারিয়ে এখন অভিশপ্ত হয়ে শয়তানি মার্কা কাজ করছে। ২৮ তারিখের মহাসমাবেশ ঘিরে সরকার করেছিল এক বিস্ময়কর চক্রান্ত। সেই চক্রান্তের আলামতগুলো এখন প্রতিদিনই পাওয়া যাচ্ছে।
রিজভী বলেন, কূলভাঙা নদীর স্রোতের মতো মানুষের খরস্রোত দেখে দিশাহারা হয়েছিল সরকার। উপচেপড়া মানুষের ঢলের কারণেই অজুহাত খাড়া করে বিএনপির ঘাড়ে দোষ চাপানোর পুরোনো খেলায় মেতে ওঠে তারা। সমাবেশের জন্য আগত বিপুল সংখ্যক মানুষকে ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদুনে গ্যাস ও রাবার বুলেটের বৃষ্টি নেমে আসে, সাউন্ড গ্রেনেড বিস্ফোরণ ও রাস্তার কালো ধোঁয়া থেকে নিজেদের রক্ষা করতে হাজারো নেতাকর্মী প্রাণভয়ে ছোটাছুটি করতে থাকে। শর্টগান থেকে অবিরাম গুলি নিক্ষেপ করতে থাকে বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মীদের লক্ষ্য করে। স্প্রিন্টারে অনেকের দেহ চালুনির মতো ঝাঁঝরা হয়ে যায়।
ভার্চুয়াল এই সংবাদ সম্মেলনে দলের স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য করুন