তপশিল বাতিল, সরকারের পদত্যাগ ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে বিরোধীদলসমূহের ডাকা দেশব্যাপী নবম দফা অবরোধের সমর্থনে রাজধানীতে বিক্ষোভ মিছিল ও সড়ক অবরোধ করে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেছে নুরুল হক নুরের নেতৃত্বাধীন গণঅধিকার পরিষদ।
আজ রোববার (৩ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পুরানা পল্টন আল রাজী কমপ্লেক্সের সামনে থেকে মিছিল শুরু করে পল্টন মোড়, নাইটিংগেল মোড় ঘুরে বিজয়নগর পানির ট্যাংকির মোড়ে এসে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।
সংক্ষিপ্ত সমাবেশে গণঅধিকার পরিষদের একাংশের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক সভাপতি নুরুল হক নুর বলেন, দুর্বল পরাগায়নে ওবায়দুল কাদের সাহেবরা শত ফুল ফোটাতে পারেনি। ফুল যেহেতু ফোটেনি, সেহেতু ফল হওয়ার সম্ভাবনা নেই। এখন যা হবে সেটা মাকাল ফল। ওবায়দুল কাদের আর নির্বাচন কমিশন মিলে মাকাল ফল মার্কা নির্বাচন করতে চাচ্ছে। জনগণ এই মাকাল ফল মার্কা নির্বাচন প্রতিহত করবে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় রাখতে আজকে দেশের সব প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করা হয়েছে। সরকারের একঘেয়েমির কারণে ’৯০-এর পর থেকে তিন দশকে তিলে তিলে গড়ে ওঠা রপ্তানির বড় খাত গার্মেন্টস শিল্প এখন ঝুঁকিতে। পাট, চিনি, চামড়ার পর সরকারের কারণে গার্মেন্টস শিল্পও আজ ধ্বংসের পথে। ইউরোপ-আমেরিকা পরিষ্কারভাবে বলছে, শ্রমিকদের সংগঠন, ট্রেড ইউনিয়ন করার অধিকার, গণতন্ত্র, মানবাধিকার, সুশাসন না থাকলে তারা বাণিজ্য অবরোধ, নিষেধাজ্ঞা দিবে।
নুর অভিযোগ করেন, ইসরায়েলের কারাগারে যেভাবে বন্দিদের অমানবিক নির্যাতন করা হয় বাংলাদেশও আজ বিরোধীদলের নেতাকর্মীদের সাথে একই আচরণ করা হচ্ছে। মিথ্যা, ভিত্তিহীন মামলায় গ্রেপ্তার করে নির্যাতন করছে, সাজা দেওয়া হচ্ছে।
ঢাকা মহানগর ৩৯ নং ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য ইমতিয়াজ বুলবুলের ঘটনা উল্লেখ করে গণঅধিকার পরিষদের একাংশের এই সভাপতি বলেন, অন্যায়ভাবে বিএনপি নেতা বুলবুলকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে নির্যাতন করে মেরে ফেলা হয়েছে। মারার পর চুপিসারে দাফন সম্পন্ন করেছে। এভাবে দেশে চলতে পারে না। দেশের অস্তিত্ব রক্ষায় সর্বদলীয় সংগ্রাম পরিষদ গঠন করে এই ফ্যাসিবাদ হঠাতে হবে। বিএনপি, জামায়াত-হেফাজত, বাম-ডান সবাইকে এক হয়ে পাড়া-মহল্লায় ফ্যাসিবাদবিরোধী গণঐক্য গঠন করতে হবে। ’৯৬ সালে আওয়ামী লীগ জামায়াতকে নিয়ে আন্দোলন করলে আজ আমাদের সমস্যা কোথায়?
তিনি বলেন, জামায়াতের মতো শক্তিকে বাইরে রাখা যাবে না। যারা বিভাজনের কথা বলছেন তারা প্রকারান্তরে সরকারের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছেন। আমাদের এ লড়াই কারও বিরুদ্ধে নয়, এ লড়াই দেশের অস্তিত্ব রক্ষার, এ লড়াই নাগরিক মর্যাদা প্রতিষ্ঠার। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই চলবে।
গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ রাশেদ খান বলেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেছিলেন- নির্বাচনের আগে শত ফুল ফুটবে, কিন্তু ফুল ফুটেছে? বরং বিএনপির একজন নেতাকে কারাগারে নিয়ে জিম্মি করে নৌকায় উঠানো হয়েছে। এভাবেই বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতাকে জিম্মি করে, হয়রানি করে নির্বাচনে নেওয়া হচ্ছে। গণঅধিকার পরিষদকেও জিম্মি করার চেষ্টা করা হয়েছিল, কিন্তু আমরা মাথানত করিনি।
গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদের সদস্য শহিদুল ইসলাম ফাহিমের সঞ্চালনায় কর্মসূচিতে আরও উপস্থিত ছিলেন দলের উচ্চতর পরিষদের সদস্য আবু হানিফ, শাকিল উজ্জামান, ফাতিমা তাসনিম, আব্দুজ জাহের, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাসান আল মামুন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রবিউল হাসান, জিলু খান, যুব পরিষদের সভাপতি মনজুর মোর্শেদ মামুন, সাধারণ সম্পাদক নাদিম হাসান, ছাত্র অধিকার পরিষদের সহসভাপতি সাব্বির, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হাসান, গণঅধিকার পরিষদ মহানগর দক্ষিণের সভাপতি নাজিম উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহিমসহ অন্যান্য নেতাকর্মীরা।
মন্তব্য করুন