বিএনপি, গণতন্ত্র মঞ্চসহ আন্দোলনরত দলগুলো কখনো ‘জনগণের ট্রেন’ মিস করে না বলে দাবি করেছেন মঞ্চের অন্যতম শীর্ষ নেতা ও ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু। তিনি বলেন, আমরা বিজয় লাভ করেছি। বরং একতরফা নির্বাচন করে তাদের (সরকারের) নৈতিক পরাজয় ঘটেছে।
মঙ্গলবার (৯ জানুয়ারি) দুপুরে সেগুনবাগিচার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে নির্বাচন পরবর্তী গণতন্ত্র মঞ্চের সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন শেখ বাবলু।
শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু বলেন, জনগণ আমাদের পক্ষে আছে, তার প্রমাণ ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রের ভোটার উপস্থিতি। ফলে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের যে ট্রেন মিসের কথা বলে ঢেঁকুর তুলছেন, তাতে তিনি আত্মতৃপ্তি পেতে পারেন। কিন্তু বাস্তবতা হলো- তাদের (আওয়ামী লীগ) সাথে জনগণ নেই।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, যে ধারায় আমরা আন্দোলন করেছি, তাতে আমরা বিজয় অর্জন করেছি। সরকার যে নির্বাচন করেছে, তা সমস্ত জায়গায় ধিকৃত হয়েছে। বেশিরভাগই বলেছে, এটা কোনো নির্বাচনই হয়নি।
তিনি আরও বলেন, আমরা আন্দোলনে আছি। ২৮ অক্টোবর সরকারের সেই বর্বর আক্রমণের পর থেকে ধারাবাহিতভাবে হরতাল-অবরোধসহ সমস্ত কর্মসূচি শান্তিপূর্ণভাবে পালন করেছি। আমরা লাগাতারভাবে এ আন্দোলনের কর্মসূচি চালিয়ে যাবো। একটি কমন দাবি নিয়ে আমরা যুগপৎ আন্দোলনে আছি। যুগপৎ আন্দোলন কনটিনিউ করতে চাই। সেটাকে পারলে আরও সম্প্রসারিত করব।
‘নির্বাচনে জনগণের বিজয় হয়েছে’- প্রধানমন্ত্রীর এহেন বক্তব্যের সমালোচনা করে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি) সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন বলেন, এ সরকার অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের পথে হাঁটেনি। তারা জোর করে একটি একতরফা নির্বাচন করেছে, সেখানে জনগণ ভোট দেয়নি। সেই একতরফা নির্বাচনকে প্রধানমন্ত্রী জনগণের বিজয় বলছেন, যার সাথে বাস্তবতার মিল নেই।
তিনি আরও বলেন, এ নির্বাচনে দশ শতাংশ ভোটার অংশগ্রহণ করেছে কিনা- সেটা নিয়ে আমরা সন্দেহ পোষণ করেছি। যদি তর্কের খাতিরে ধরেও নেওয়া যায় যে, সেটি ২০ শতাংশ হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে একটি দেশের ৮০ শতাংশ ভোটারের অংশগ্রহণ ছাড়া কীভাবে নির্বাচনের ফলকে জনগণের বিজয় বলা হয়, সেটি জনগণ ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানের কোন জায়গায় কীভাবে আছে- সেটি আমাদের জানা নেই। যেখানে ৮০ শতাংশ ভোটারকে বাইরে রেখে গণতন্ত্রের চর্চা হয়- এটি পৃথিবীর ইতিহাসে কোথাও নেই, সেই গণতন্ত্রকে গণতন্ত্র বলা যায় না।
সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের রাজনৈতিক সমন্বয়ক ফরিদুল হক।
আরও উপস্থিত ছিলেন নাগরিক ঐক্যের শহীদুল্লাহ কায়সার, জেএসডির মো. সিরাজ মিয়া. ভাসানী অনুসারি পরিষদের হাবিবুর রহমান রিজু, গণসংহতি আন্দোলনের আবুল হাসান রুবেল, মনির উদ্দিন পাপ্পু, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির বহ্নি শিখা জামালী, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের হাসিব উদ্দিন আহমেদ প্রমুখ।
মন্তব্য করুন