কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৫ এপ্রিল ২০২৪, ০৮:২১ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

বিএনপি আরও শক্তিশালী হয়েছে : মির্জা ফখরুল

জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে বিএনপিপন্থি সাংবাদিকদের সংগঠন বিএফইউজে ও ডিইউজের যৌথ উদ্যোগে ইফতার মাহফিল। ছবি : কালবেলা
জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে বিএনপিপন্থি সাংবাদিকদের সংগঠন বিএফইউজে ও ডিইউজের যৌথ উদ্যোগে ইফতার মাহফিল। ছবি : কালবেলা

বিএনপির নেতৃত্বাধীন যুগপৎ আন্দোলন ব্যর্থ হয়নি, বরং শক্তিগুলো আরও শক্তিশালী হয়েছে বলে দাবি করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, ২৮ অক্টোবর আমাদের সমাবেশে পুলিশ নির্লজ্জভাবে ঢুকে পণ্ড করে দিয়েছে। অনেকে ভাবতে পারেন- বিএনপির আন্দোলন নস্যাৎ হয়ে গেছে, বিরোধী দলের আন্দোলন শেষ হয়ে গেছে। কিন্তু মানুষের গণতান্ত্রিক আন্দোলন কখনো শেষ হয় না। বরং প্রতিটি আন্দোলনের পরে আরও শক্তিশালী হয়েছে এই শক্তিগুলো। এটা আমাদের সবচেয়ে বড় অর্জন।

শুক্রবার (৫ এপ্রিল) বিকেলে জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে বিএনপিপন্থি সাংবাদিকদের সংগঠন বিএফইউজে ও ডিইউজের যৌথ উদ্যোগে ইফতার মাহফিলপূর্ব সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন।

বিএনপি মহাসচিব বলেন,

আজকে শুধু রাজনৈতিক দল বা ব্যক্তি নয়, শুধু পেশাজীবীরা নয়, সমস্ত জাতি একটা ভয়াবহ পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছে। এই প্রসঙ্গে আমার মনে পড়ছে যে, সাবেক একজন প্রধান বিচারপতি তার বইতে লেখেছিলেন- তার একটি রায়ের মধ্যে বলেছেন যে, একজন মনোস্টার সবকিছু দখল করে নিচ্ছে, সবকিছু তছনছ করে দিচ্ছে। আসলে আজকে ব্যাপারটা সেটাই হয়েছে। একজন ভয়াবহ দৈত্য সমস্ত আক্রোস নিয়ে পুরো বাংলাদেশটাকে তছনছ করে ফেলছে। আমরা এই ১৫ বছরের মধ্যে যখন গণতন্ত্রকে হারিয়েছি সেই সময় থেকে রাষ্ট্রের সব প্রতিষ্ঠান ধবংস করে ফেলা হয়েছে।

দেশের বর্তমান অবস্থার পরিবর্তন ঘটাতে বিরোধী দলের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনে যাওয়ার কথা তুলে ধরে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা যুগপৎ আন্দোলনের মধ্য দিয়ে একদফায় বিরোধী রাজনৈতিক দল ও বাম রাজনৈতিক দল সকলকে ঐক্যবদ্ধ করে সংগ্রাম শুরু করেছি। ২৮ অক্টোবর আমাদের সমাবেশে পুলিশ নির্লজ্জভাবে ঢুকে পণ্ড করে দিয়েছে। অনেকে ভাবতে পারেন- বিএনপির আন্দোলন নস্যাৎ হয়ে গেছে, বিরোধী দলের আন্দোলন শেষ হয়ে গেছে। কিন্তু কখনো মানুষের গণতান্ত্রিক আন্দোলন শেষ হয় না। বরং প্রতিটি আন্দোলনের পরে আরও শক্তিশালী হয়েছে এই শক্তিগুলো। এটা আমাদের সবচেয়ে বড় অর্জন। আমাদের মনে রাখতে হবে, প্রতিটি ইটের ওপর ইট বিছিয়ে যেমন একটি স্তম্ভ গড়ে ওঠে- আমরা অবশ্যই আন্দোলনের মধ্য দিয়ে এই ফ্যাসিবাদকে পরাজিত করতে সক্ষম হব। আমরা সংগ্রাম আরও বেগবান করব।

গণমাধ্যমের ওপর সরকারের দমননীতির কথা তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন,

আমরা যাদের ওপরে বিশ্বাস করি, আস্থা রাখি সেই গণমাধ্যমের ওপরে সবচেয়ে আগে আঘাত করা হয়েছে। অনেক পত্রিকা বন্ধ করা হয়েছে। যারা সত্য লেখেন, যারা লিখতে চান, লিখতে পারেন তাদেরকে সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্ট থেকে শুরু করে ডিজিটাল আইনে গ্রেপ্তার করা হয়, তুলে নিয়ে যাওয়া হয় এমনকি নির্যাতন করে মেরে ফেলা হয়। ফ্যাসিবাদ যখন শক্তিশালী হয়, তখন কেউই রেহাই পায় না। মনে হয় না যে, এটা একটা স্বাধীন রাষ্ট্র। মনে হয়, একটা পুরোপুরিভাবে আধিপত্যবাদ, একটা নির্মম ফ্যাসিবাদ আমাদের ওপর চেপে বসেছে।

প্যালেস্টাইনের গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর নির্মম হত্যাযজ্ঞের ঘটনায় নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, কত নৃশংস হতে পারে একটা জনপদকে সম্পূর্ণ নিশ্চিহ্ন করে দেওয়ার পর তারা যাতে বাঁচতে না পারে- সেজন্য সেখানে খাদ্য সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে। বিশ্বজনমত যেভাবে গড়ে উঠা উচিত ছিল সেভাবে হয়নি। আরও দুঃখের কথা, মুসলিম বিশ্ব তারা সেভাবে প্রতিবাদ করেনি। আজকে মানবতার দাবি যে, প্যালেস্টাইনের পাশে দাঁড়ানো, তাদের সংগ্রামের পাশে দাঁড়ানো।

বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক, সংবাদ সংস্থা এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকগণ, রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, শিক্ষক-চিকিৎসক-প্রকৌশলী-আইনজীবীসহ পেশাজীবী নেতৃবৃন্দ এই ইফতারে অংশ নেন।

বিএফইউজের একাংশের সভাপতি রুহুল আমিন গাজীর সভাপতিত্বে ও ডিইউজের একাংশের সাধারণ সম্পাদক খুরশীদ আলমের সঞ্চালনায় ইফতারপূর্ব সংক্ষিপ্ত আলোচনায় জামায়াতের ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার, বিএফইউজের মহাসচিব কাদের গণি চৌধুরী ও ডিইউজের সভাপতি শহিদুল ইসলাম বক্তব্য রাখেন।

ইফতারে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, কেন্দ্রীয় নেতা মাহবুব উদ্দিন খোকন, শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, জহির উদ্দিন স্বপন, রিয়াজ উদ্দিন নসু, রফিকুল আলম মজনু, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের জোনায়েদ সাকি, লেবার পার্টির মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, কেন্দ্রীয় জামায়াতের রফিকুল ইসলাম খান, আবদুল হালিম, মতিউর রহমান আকন্দ, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের অ্যাডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন, ড. আব্দুল মান্নান, মহানগরী উত্তরের ড. ফখরুদ্দিন মানিক, আতাউর রহমান সরকার, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের অ্যাডভোকেট আতিকুর রহমান, খেলাফত মজলিসের আহমেদ আবদুল কাদের, সাংবাদিক নেতাদের মধ্যে আবদুল হাই সিকদার, এমএ আজিজ, এলাহি নেওয়াজ খান সাজু, সৈয়দ আবদাল আহমেদ, ইলিয়াস খান, মোস্তফা কামাল মজুমদার, ইলিয়াস হোসেন, রফিক মোহাম্মদ, বাছির জামাল, রাশেদুল হক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় শিক্ষার্থী নিহত

বিনা টিকিটে ১২ বছর রেল ভ্রমণ, অতঃপর...

বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে নারী শ্রমিককে যৌন হয়রানি

ইন্টারন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড ইউনিভার্সিটির ইংরেজি বিভাগের প্রথম জার্নাল প্রকাশিত

প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটিতে ‘সেমিস্টার ডে ২০২৪’ উদ্‌যাপন

ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি শ্রাবণের ওপর হামলার অভিযোগ

খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার খোঁজ নিলেন ফখরুল

যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ধরাশায়ী হলো বাংলাদেশ

রাজধানীতে বিটিআরসির অভিযান, সরঞ্জামাদি জব্দ

৫৪ মণ ওজনের গরু প্রধানমন্ত্রীকে উপহার দিতে চান হামিদা

১০

নরসিংদীতে বিদ্যুৎস্পর্শে ঝলসে গেছে দুই শিক্ষার্থী

১১

হবিগঞ্জে খড়ের গাদা থেকে পড়ে কৃষকের মৃত্যু

১২

কুমিল্লায় শিশু হত্যা মামলায় যুবকের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

১৩

মৌলভীবাজারে গরম মসলার বাজারে অভিযান

১৪

শাবি কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি রমজান, সম্পাদক জাবেদ

১৫

নরসিংদীতে নেতাকর্মীদের ভালোবাসায় সিক্ত বিএনপি নেতা খায়রুল কবির খোকন

১৬

আশাশুনি উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলেন মোস্তাকিম 

১৭

চসিকে যুক্ত হলো ময়লার ৪০ কন্টেইনার

১৮

ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হয়ে রিকশাচালকের আত্মহত্যা

১৯

ক্রিকেট খেলায় পাওয়ারপ্লে কি? কখন এবং কেন পাওয়ারপ্লে দেখানো হয়?

২০
X