জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৫:৫৩ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

‘আমিন আমিন’ ধ্বনীতে শেষ হলো তিন দিনের সুন্নাতেভরা ইজতেমা

দাওয়াতে ইসলামির তিন দিনের সুন্নাতেভরা ইজতেমায় আখেরি মোনাজাতে অংশগ্রহণ করে দলীয় নেতাকর্মী। ছবি : সংগৃহীত
দাওয়াতে ইসলামির তিন দিনের সুন্নাতেভরা ইজতেমায় আখেরি মোনাজাতে অংশগ্রহণ করে দলীয় নেতাকর্মী। ছবি : সংগৃহীত

লাখো মুসল্লির অশ্রু সজল নয়নে আমিন আমিন ধ্বনীতে আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হলো দাওয়াতে ইসলামীর তিন দিনের সুন্নাতেভরা ইজতেমা। শেষ দিনে মুসল্লির ঢল নামে। সুবিশাল প্যান্ডেলের ভিতরে-বাইরে মুসল্লির উপস্থিতি ছাড়িয়ে রাস্তায় গিয়ে পৌঁছে। অনেকেই জায়গা না পেয়ে রাস্তাঘাটে, এমনকি বাসা বাড়িতে, ছাদে জুমার নামাজ আদায় করেছেন। শুক্রবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) জুমার নামাজ শেষে অনুষ্ঠিত হয় আখেরি মোনাজাত। মুসল্লিরা রবের প্রার্থনায় দুই হাত তুলে কান্নায় আবেগ তাড়িত হয়ে পড়েন। এ সময় ‘আমিন আমিন ধ্বনী’-তে ইজতেমা ময়দানে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়।

ইসলামের জীবন বিধান মেনে সারা বিশ্বে নেকির দাওয়াত পৌঁছে দিতে মহান রবের সাহায্য কামনা করা হয়। দেশ, জাতি ও মুসলিম উম্মাহর সুখ-শান্তি-সমৃদ্ধি, বিশেষ করে ফিলিস্তিনসহ বিশ্বের নির্যাতিত মুসলমানদের হেফাজত কামনা করে আখেরি মোনাজাত পরিচালনা করেন দাওয়াতে ইসলামী বাংলাদেশের সভাপতি (নীগরান) মাওলানা আব্দুল মোবিন আত্তারি।

এর আগে জুমার নামাজে ইমামতি করেন সংগঠনটির মুবাল্লিগ হাফেজ মাওলানা আরাফাত আত্তারী। জুমার পূর্বে দাওয়াতি কার্যক্রমসহ সার্বিক বিষয়ে বয়ান করেন দাওয়াতে ইসলামীর জিম্মাদার (মিডিয়া বিভাগ) মুফতি মুহাম্মদ জহিরুল ইসলাম মুজাদ্দেদী আত্তারী।

শেষ দিন শুক্রবার সকাল থেকে জুমার নামাজের আগ পর্যন্ত দাওয়াতে ইসলামীর মুবাল্লিগগণ কোরআন-হাদিসের আলোকে ইসলামের মৌলিক বিষয়ে বয়ান করেন। তার মধ্যে ইসলামী শরীয়তের বিধি-বিধান, নামাজের গুরুত্ব ও বেনামাজির শাস্তি, আজান-ইকামত ও নামাজ পড়ার নিয়ম-পদ্ধতি, মা-বাবার প্রতি সন্তানের হক, জুলুম-অত্যাচারের পরিণতি, নামাজের গুরুত্ব ও বেনামাজির ভয়াবহ পরিণতি, ব্যভিচার থেকে নিজেকে রক্ষা করে কুরআন হাদিসের আলোকে জীবন গড়া, মৃত্যু, কবর ও হাশরের প্রস্তুতি ইত্যাদি। এসব বয়ানের ফাঁকে ফাঁকে চলে হামদ ও নাতের মনোমুগ্ধকর পরিবেশনা এবং দোয়া মোনাজাত। শেষ দিনের ইজতিমায় ধারাবাহিকভাবে এসব বিষয় তুলে ধরে বয়ান করেন দাওয়াতে ইসলামির মোবাল্লিগ মাওলানা মুহাম্মদ কলিম মাদানী আত্তারী, মাওলানা গোলাম ইয়াসিন আত্তারী ও মাওলানা সোহেল মাদানী প্রমুখ।

আল্লাহ পাকের নির্দেশিত পথে প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিঃশর্ত অনুসরণের আহ্বান জানিয়ে দাওয়াতে ইসলামীর মুবাল্লিগণ বলেন, আল্লাহর হাবিব সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জীবনাদর্শ অনুসরণেই মানবতার মুক্তির সনদ নিহিত। ইসলামের জীবন বিধান মেনে চলা গেলে এবং প্রিয় রাসুলের সুন্নাতের রঙ্গে রাঙ্গায়িত হয়ে মোত্তাকি হতে পারলেই আপনার দুনিয়া-আখিরাতের মুক্তি মিলবে। আর প্রিয় হাবিবের প্রতি সর্বোচ্চ ভালোবাসাই ইমানের পূর্বশর্ত।

আল্লাহপাক ও তার প্রিয় রাসুলের সৃষ্টির জন্যই হতে হবে আমাদের নিয়ত, চিন্তাধারা, কর্মকাণ্ড সবকিছুই।’ বিশ্বের প্রত্যেকটি মানুষের কাছে ইসলামে নেকির দাওয়াত পৌঁছে সুন্দর পৃথিবী গড়ে তোলার আহবান জানান তারা।

শরীয়ত মতে যথাযথভাবে নামাজ আদায়ের আহ্বান জানিয়ে তারা আরও বলেন, আল্লাহ পাক ও তার রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যেভাবে নামাজ আদায় করতে বলেছেন ঠিক সেভাবেই নামাজ পড়তে হবে।

নামাজেই যত প্রশান্তি। লোক দেখানো নামাজে হবে না। বরং শেষ বিচারে এর পরিণতি হবে ভয়াবহ, রয়েছে কঠিন শাস্তি। সন্তানকে ইসলামের আলোয় আলোকিত করতে হবে। সুসন্তানের আমল নিজের জন্য তো বটে, তার মা-বাবার জন্যও নাজাতের অছিলা হবে- বলেন দাওয়াতে ইসলামির মুবাল্লিগরা।

দাওয়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সদস্য ও রাজশাহী বিভাগের জিম্মাদার আরমান আত্তারী সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, আল্লাহর রহমতে সুন্দরভাবে তিন দিনের সুন্নাতেভরা ইজতেমা শেষ হয়েছে। ইজতেমার আয়োজনে সহযোগিতার জন্য সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, পুলিশ প্রশাসন, পীর মাশায়েখ ও আশেকে রাসুলদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। ইজতেমায় অনেক গুরুত্বপূর্ণ বয়ান হয়েছে। বাস্তবজীবনে একে কাজে লাগানো গেলে তাহলেই স্বার্থকতা। আসুন প্রত্যেক মানুষের কাছে আমরা ইসলামের নেকির দাওয়াত পৌঁছে দেই।

গত বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) ফজরের নামাজের পর শুরু হয় তিন দিনের সুন্নাতে ভরা এ ইজতেমা। ইজতেমায় সারা দেশ থেকে লাখো আশেকানে রাসুল (সা.)-এর যোগদানের মধ্য দিয়ে মাদানী পরিবেশ সৃষ্টি হয়।

তিন দিনের ইজতেমায় বিষয়ভিত্তিক বয়ান করেন দাওয়াতে ইসলামির মুবাল্লিগরা। ইজতেমায় এতলোক তিন দিন তিন রাত যাপন করলেও কোনো প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। তাৎক্ষণিক সুকিচিৎসার জন্য করা হয় মেডিকেল ক্যাম্প। দাওয়াতে ইসলামির স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার পাশাপাশি ইজতেমায় আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্যরা দিনরাত নিরাপত্তা ব্যবস্থা করে।

ইজতেমার আখেরি মোনাজাতের পরপরই নেকির দাওয়াত পৌঁছে দিতে দেশের বিভিন্ন স্থানে ৩দিন, ১২দিন,৩০দিন ও ৬৩দিনের জন্য সংগঠনটির ১১২টি টিম মাদানি কাফেলা সফর শুরু করেন।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

শিক্ষানীতি মানছেন না সিদ্ধিরগঞ্জের ৪ শিক্ষক

অপসারণের দাবিতে সড়ক অবরোধ, ভয়ে পালালেন স্বাস্থ্য কর্মকর্তা

সিভাসুতে তিন কর্মকর্তার পদাবনতি

দেশের শত্রুরাই পিআর নির্বাচনের বিরোধিতা করতে পারে : চরমোনাই পীর

ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী ঘোষণা, দুটিতে লড়বেন ফয়জুল করীম

দুই সন্তানসহ গৃহবধূকে গলা কেটে হত্যা, দেবর নিখোঁজ

ওয়ার্ডপ্রেস কন্ট্রিবিউশনের গর্বিত মুখ বাংলাদেশের নাসিম

বরিশালে এনসিপির পদযাত্র‍ায় ২০ সহস্রাধিক জনতার জমায়াতের প্রস্তুতি

১৪৮ বছরের টেস্ট ইতিহাসে নতুন করে লেখালেন স্টার্ক

মালয়েশিয়ায় প্রবেশের সময় ৯৬ বাংলাদেশি আটক

১০

চেয়ারে শহীদদের স্বজনেরা, মেঝেতে বসেন ৫ উপদেষ্টা

১১

শ্যামলীতে ছিনতাইকারীদের একজন গ্রেপ্তার, মোটরসাইকেল জব্দ

১২

নারীদের বীরত্বপূর্ণ অবদানে জুলাই উইমেন্স ডে উদযাপন

১৩

এসএসসি-এইচএসসিতে ভালো ফল করা শিক্ষার্থীদের জন্য সুখবর

১৪

মাকে জীবনের জন্য হুমকি দাবি, বাড়িতে ঢুকতে দেয়নি ছেলে 

১৫

চরমোনাইর দরবারে এনসিপির কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল

১৬

মিটফোর্ডে ব্যবসায়ী হত্যার প্রতিবাদে এনসিপির বিক্ষোভ মিছিল 

১৭

বাড়ির পেছনে পড়ে ছিল শিশুর বস্তাবন্দি মরদেহ

১৮

আশুলিয়া কলেজ প্রশাসনের ভুলে বিপাকে ১৮৬ এইচএসসি পরীক্ষার্থী

১৯

উপদেষ্টা শারমিন মুরশিদ পশ্চিমা এজেন্ডা বাস্তবায়নে লিপ্ত : হেফাজতে ইসলাম

২০
X