কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ১৮ এপ্রিল ২০২৫, ০৭:০০ পিএম
আপডেট : ১৮ এপ্রিল ২০২৫, ০৭:০১ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়ে প্রাণ দিলেন বৃদ্ধ, জানা গেল পেছনের কারণ

ছবি : সংগৃহীত
ছবি : সংগৃহীত

রাজশাহীর বাঘায় গত ১৪ এপ্রিল ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়ে রুহুল আমিন (৬০) নামে এক বৃদ্ধ আত্মহত্যা করেন। বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা হয়।

এর মধ্যে কে ভেবেছিল সে এমন করবে। ঘটনা রাজশাহীতে। ওই বৃদ্ধের স্ত্রী ৮ মাস আগে মারা যান। এরপর দুই ছেলে ও দুই মেয়ে কিছুদিন বাবাকে রাখার পর আর রাখতে চায় না ওনাকে। এ নিয়ে অনেক ঝগড়া। এমনও রাত গেছে বৃদ্ধ সারারাত উঠানে ছিল, ছেলেরা দরজা খোলেনি। মৃত্যুর দিন সকালে দুই ছেলের বৌয়ের সঙ্গে খুব ঝগড়া হয় এবং তাকে বেরিয়ে যেতে বলে, ছেলেরাও তার জিনিসপত্র উঠানে ফেলে দেয়। এরপর স্টেশনে ভোর থেকে বসে ছিলেন। কিছু খাননি। দুপুরে চলন্ত ট্রেনের সামনে শুয়ে পড়েন।’ শীর্ষক শিরোনামে বৃদ্ধের আত্মহত্যার একটি ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।

তবে বিষয়টি নজরে পড়েছে ফ্যাক্টচেক বা তথ্য যাচাইকারী প্রতিষ্ঠান রিউমর স্ক্যানারের। শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে ঘটনার নেপথ্য কারণ অনুসন্ধান করে সন্তানদের কারণে বৃদ্ধ আত্মহত্যা করেননি বলে দাবি করেছে সংস্থাটি।

রিউমর স্ক্যানার টিম অনুসন্ধান করে বলেছে, ‘আলোচিত ভিডিওতে স্ত্রীর মৃত্যুর পর দুই ছেলে ও দুই মেয়ের অত্যাচারে আত্মহত্যা করেননি বৃদ্ধ এবং তার স্ত্রীও মৃত নন। বরং তার দুটি সন্তান, এক ছেলে ও এক মেয়ে এবং তার স্ত্রী বেঁচে আছেন। প্রচারিত গল্পটি গুজব।’

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে প্রথম আলোর ওয়েবসাইটে গত ১৬ এপ্রিল ‘রাজশাহীতে পেঁয়াজচাষির আত্মহত্যা নেটিজেনরা ‘ধুয়ে দিচ্ছে’ পরিবারকে, বাস্তবতা ভিন্ন’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

ওই প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, মীর রুহুল আমিনের বাড়ি রাজশাহীর বাঘা উপজেলার মাঝপাড়া বাউসা গ্রামে। বাড়িতে গিয়ে জানা যায় তার স্ত্রী মরিয়ম বেঁচে আছেন। ফেসবুকে নিজের মারা যাওয়ার খবর দেখে তিনি হতভম্ব।

ফেসবুকে বলা হচ্ছে, তার দুই ছেলে ও দুই মেয়ে কিন্তু বাস্তবে তাদের দুটি সন্তান, এক ছেলে ও এক মেয়ে। মেয়ের ২০ থেকে ২২ বছর আগে বিয়ে হয়েছে, শ্বশুরবাড়ি ঈশ্বরদীতে। ছেলে ঢাকায় একটি বেসরকারি কোম্পানিতে স্বল্প বেতনের চাকরি করেন, থাকেন সেখানেই। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে মীর রুহুল আমিনের খুবই ভালো সম্পর্ক।

মূলত স্থানীয় তিনটি বেসরকারি সংস্থা থেকে যথাক্রমে ৫০ হাজার, ৬৪ হাজার ও ৮০ হাজার টাকা ঋণ নিয়েছিলেন মীর রুহুল আমিন। প্রতি সপ্তাহে তাকে ৪ হাজার ৪৫০ টাকা কিস্তি দিতে হতো। এখনো ৯৯ হাজার ২৯০ টাকা ঋণ অবশিষ্ট রয়েছে। মীর রুহুল আমিনের ভাতিজা মীর মোফাক্কর হোসেন জানান ঋণ শোধ করার দুশ্চিন্তায় তিনি আত্মহত্যা করতে পারেন বলে তার ধারণা।

একই বিষয়ে দেশের একাধিক সংবাদমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।

সুতরাং আলোচিত ভিডিওতে স্ত্রীর মৃত্যুর পর দুই ছেলে ও দুই মেয়ের অত্যাচারে আত্মহত্যার দাবিটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

এর আগে গত সোমবার (১৪ এপ্রিল) রাজশাহীর বাঘা উপজেলার আড়ানী রেলস্টেশনে ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেন তিনি। যার একটি ভিডিও ইতোমধ্যে ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। এরপর থেকেই উৎসুক মানুষ ভিডিওটি শেয়ার করে নিজেদের মতো মতামত তুলে ধরছেন।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

মুক্তবাণিজ্য এলাকা স্থাপনে জাতীয় কমিটি গঠন

পাকিস্তানে সেনাবাহিনীর সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত ১০

বজ্রপাতে দুই কৃষকের মৃত্যু

প্রিপেইড গ্যাস মিটার নিয়ে তিতাসের সতর্কবার্তা

৮ জেলায় বজ্রবৃষ্টির শঙ্কা

জনগণের ম্যান্ডেট নিয়েই সংবিধান পরিবর্তন করতে হবে : নাহিদ 

দ্য ইকোনমিস্টের প্রতিবেদন / কাশ্মীর হামলায় পাকিস্তান জড়িত তা প্রমাণ করতে হবে ভারতকে

অন্তর্বর্তী সরকারকে ইসলামী আন্দোলনের আমিরের হুঁশিয়ারি

ভারতে কোচিং সেন্টারে বোমা হামলা

জবি শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা প্ররোচনা মামলায় আটক ১

১০

১৪ পুলিশ সুপারের বদলি

১১

গাজীপুরে বকেয়া বেতন ও কারখানা বন্ধের প্রতিবাদে শ্রমিকদের বিক্ষোভ

১২

এনবিআরে কর্মবিরতি ও অবস্থান কর্মসূচির ডাক

১৩

নাগরিকদের বড় সুখবর দিল সরকার

১৪

‘পিপিপি ডিভিশনাল কনফারেন্স চট্টগ্রাম ২০২৫’ অনুষ্ঠিত

১৫

৫ বছরের শিশু ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামি গ্রেপ্তার 

১৬

চিন্ময় দাসের জামিন 

১৭

জেলে থেকেও অস্ত্র মামলায় আসামি স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা

১৮

অভিনেতা সিদ্দিক ৭ দিনের রিমান্ডে

১৯

প্রধান উপদেষ্টার পক্ষ থেকে ৭০ ঘর পেলেন কুমিল্লার বন্যা দুর্গতরা

২০
X