ভারতের অভিজ্ঞ ব্যাটার ও অধিনায়ক রোহিত শর্মা টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়েছেন। এই ঘোষণার মধ্য দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে চলা গুঞ্জনের অবসান ঘটল। ৩৮ বছর বয়সী এই ক্রিকেটার এবার শুধুমাত্র ওয়ানডে ফরম্যাটে ভারতের নেতৃত্বে থাকবেন। ইতোমধ্যেই টি-টোয়েন্টি থেকেও বিদায় নিয়েছেন তিনি।
নিজের টেস্ট ক্যারিয়ারে ৬৭ ম্যাচে ৪৩০১ রান করেছেন রোহিত, যেখানে রয়েছে ১২টি সেঞ্চুরি ও ১৮টি হাফ-সেঞ্চুরি। তবে এই পরিসংখ্যানই নয়, রোহিতকে ঘিরে আলোচনার কেন্দ্রে উঠে এসেছে তার সৎ এবং আবেগী কথাগুলো, যা তিনি শেয়ার করেছেন সাংবাদিক বিমল কুমারের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে।
রোহিত অধিনায়কত্ব পাওয়া নিয়ে বলেন, ‘হ্যাঁ, আমারও এক সময় মনে হয়েছিল হয়তো আমাকে অধিনায়কত্ব আর দেওয়া হবে না। সবাই তো চায় একজন তরুণ ক্যাপ্টেন, যে ১০-১৫ বছর ধরে দলকে নেতৃত্ব দিতে পারবে। তখন আমার মনে হয়েছিল আমার সময় বুঝি শেষ। কিন্তু আমি কৃতজ্ঞ, যে সুযোগটা পেয়েছি।’
এই কথায় ঝরে পড়েছে তার কৃতজ্ঞতা, অভিজ্ঞতা ও একটা ভিন্ন ধরণের উপলব্ধি—যা তরুণ ক্রিকেটারদের জন্যও অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে।
রোহিত আরও বলেন, ‘আমি জানি, আমি ১০ বছর অধিনায়কত্ব করতে পারব না। কিন্তু যতদিন পেয়েছি, সেটা পুরোপুরি কাজে লাগাতে চেয়েছি। যতটা সম্ভব দলের সর্বোচ্চটা বের করে আনতে চেয়েছি।’
গত বছর পার্থ টেস্টে সন্তান জন্মের কারণে খেলতে পারেননি রোহিত। এরপর মেলবোর্নে ওপেনিংয়ে ফিরে এলেও সিডনি টেস্টে নিজেই বাদ পড়েন। ওই সিরিজেই ভারত হারায় বর্ডার-গাভাস্কার ট্রফি। এর আগেই, নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে হোম সিরিজে ০-৩ ব্যবধানে হোয়াইটওয়াশের স্বাদ পায় ভারত—সবকিছু মিলিয়ে কঠিন সময় পার করেছেন রোহিত।
রোহিতের বিদায়ে ভারতের টেস্ট দলের নেতৃত্ব কে সামলাবেন, তা এখন বড় প্রশ্ন। সম্ভাব্য তালিকায় এগিয়ে রয়েছেন শুভমান গিল। তবে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা এখনো আসেনি।
রোহিত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লেখেন, ‘সাদা জার্সিতে দেশের প্রতিনিধিত্ব করা আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ সম্মানগুলোর একটি। আমি টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসর নিচ্ছি। আপনাদের ভালোবাসা ও সমর্থনের জন্য ধন্যবাদ। আমি ওয়ানডে ফরম্যাটে ভারতের হয়ে খেলা চালিয়ে যাব।’
শুধু একটি ঘোষণা নয়, এটা যেন এক অধ্যায়ের সমাপ্তি। রোহিত শর্মার সাদা পোশাকের সফর শেষ হলেও, তার অভিজ্ঞতা ও ব্যক্তিত্ব ভারতের ক্রিকেটে প্রভাব ফেলবে আরও বহু বছর।
রোহিতের বিদায় একদিক দিয়ে কষ্টের, তবে তার খোলামেলা মনের কথা এবং নেতৃত্বে শেখা বাস্তবতাগুলো অনেকের মনে দাগ কেটে যাবে। তিনি শুধু একজন ওপেনার ছিলেন না, ছিলেন একজন দৃঢ় নেতৃত্বদানকারী যিনি দল ও দেশকে ভালোবেসে নিজের সীমিত সময়কে সেরা করে তুলেছেন।
মন্তব্য করুন