উত্তরার মাইলস্টোন স্কুলে সোমবারের মর্মান্তিক বিমান দুর্ঘটনায় স্তব্ধ পুরো দেশ। সেই বিষাদই ছায়া ফেলেছে ক্রিকেটের মঞ্চেও। আজ রাষ্ট্রীয় শোক পালন করা হচ্ছে, আর এই দিনেই মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে মাঠে নামছে বাংলাদেশ ও পাকিস্তান—দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচে।
স্টেডিয়ামে আজ থাকবে না কোনো উৎসবের রং। বাজবে না কোনো গান। খেলোয়াড় ও টিম ম্যানেজমেন্ট কালো বাহুবন্ধনী পরে নামবেন মাঠে। ম্যাচ শুরুর আগে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হবে। বিসিবির পক্ষ থেকে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখার পাশাপাশি সকালে আয়োজন করা হয়েছে কোরআন তিলাওয়াত ও বিশেষ দোয়ার।
মাঠে নামবেন ক্রিকেটাররা, কিন্তু মন থাকবে বিষণ্নতায় আচ্ছন্ন। তবে খেলার আবহে থেমে থাকে না প্রতিযোগিতা। শ্রীলঙ্কা সফরের আত্মবিশ্বাসী সাফল্য নিয়ে দেশে ফেরা বাংলাদেশ দল প্রথম টি-টোয়েন্টি জিতে এগিয়ে আছে সিরিজে। আজকের ম্যাচে জিততে পারলেই এক ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ নিজেদের করে নিতে পারবে লিটন দাসের নেতৃত্বাধীন দলটি।
সিরিজ জয়ের এই সুযোগ শুধু দলের জন্য নয়, অধিনায়ক লিটনের জন্যও বিশেষ। আগের চার সিরিজে দুটি জয়ের স্বাদ পাওয়া এই উইকেটকিপার ব্যাটার আজকের ম্যাচ জিতলে পঞ্চম সিরিজে পেয়ে যাবেন তৃতীয় জয়। আর তা হলে মে-জুনে লাহোরে পাকিস্তানের বিপক্ষে ধবলধোলাইয়ের স্মৃতিটাও কিছুটা হলেও ঘোচানো যাবে।
বাংলাদেশের জন্য আজকের জয় যেমন ইতিহাসের ধারাবাহিকতা টেনে নেওয়ার সুযোগ, তেমনি পাকিস্তানের জন্য ম্যাচটি সিরিজে টিকে থাকার লড়াই। শ্রীলঙ্কা সফর শেষে প্রথম ম্যাচে হারের পর চাপে রয়েছে তারা। পাকিস্তানের কোচ মাইক হেসন অবশ্য মিরপুরের উইকেট নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন, বলছেন—এটা আন্তর্জাতিক মানে উত্তীর্ণ নয়। তবে আজ ভুল শুধরে ঘুরে দাঁড়ানোর আশায় থাকবে বাবর আজমের দল।
একদিকে দেশের শোকাবহ পরিবেশ, অন্যদিকে ক্রিকেটের উত্তেজনা—এই দুই মিলিয়ে আজকের ম্যাচটি হয়ে উঠেছে ভিন্নরকম এক লড়াই। যেখানে ফলাফলের চেয়ে বড় হয়ে উঠতে পারে সংযম, শ্রদ্ধা আর দায়িত্ববোধ।
আজ সন্ধ্যায় মিরপুরের আলোয় হয়তো দেখা যাবে সেই দ্বন্দ্ব—শোক আর সাফল্যের মাঝামাঝি দাঁড়িয়ে এক দল ক্রিকেটার।
মন্তব্য করুন