এশিয়া কাপের ‘হ্যান্ডশেক কাণ্ড’ ঘিরে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) যে ঝড় তুলেছিল, সেটি এখন অনেকটাই নিজের ঘাড়েই এসে পড়েছে। পাকিস্তান সরব হয়েছে ম্যাচ রেফারি অ্যান্ডি পাইক্রফটকে সরানোর দাবিতে, এমনকি হুমকি দিয়েছে টুর্নামেন্ট থেকেই সরে দাঁড়ানোর। কিন্তু আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি) যে এই দাবিকে পাত্তা দেবে না, সেটিই এখন স্পষ্ট।
ঘটনার সূত্রপাত দুবাই আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে ভারতের বিপক্ষে পাকিস্তানের গ্রুপ ম্যাচ শেষে। ম্যাচ জয়ের পর ভারতীয় ক্রিকেটাররা পাকিস্তানি খেলোয়াড়দের সঙ্গে হাত মেলাতে অস্বীকৃতি জানান। ভারতীয় অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদব তখন ব্যাখ্যা দেন, এটি ছিল কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলায় নিহত ২৬ জন সাধারণ নাগরিকের পরিবারের প্রতি সংহতি জানানো।
এই অজুহাতে পাকিস্তান ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। পিসিবির অভিযোগ, রেফারি পাইক্রফট নাকি টসের সময়ই দল দুটিকে হাত না মেলানোর পরামর্শ দেন। এ নিয়েই আইসিসির কাছে চিঠি পাঠিয়ে তাদের সরানোর দাবি জানায় পিসিবি।
কিন্তু আইসিসির অভ্যন্তরীণ অবস্থান একেবারেই ভিন্ন। সংস্থার মতে, পাইক্রফটের ভূমিকা ছিল নগণ্য—তিনি কেবল এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের (এএসিসি) বার্তা দলকে পৌঁছে দিয়েছিলেন। ফলে এক সদস্য দেশের দাবিতে রেফারি বদলানো দৃষ্টান্ত তৈরি করবে, যা ভবিষ্যতের জন্য খারাপ বার্তা দেবে।
টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে আরও দাবি করা হয়, মূল সিদ্ধান্ত এসেছে এএসিসি থেকেই। পাইক্রফট নাকি কেবল নির্দেশ পালন করেছেন। একজন সূত্র সরাসরি বলেছেন, ‘এটা আইসিসির বিষয় নয়। পিসিবিকে উচিত আসল কথাটা বোঝা—কে, কেন ওই নির্দেশ দিয়েছিল।’
তবে মাঝপথে মীমাংসার পথও খোঁজা হচ্ছে। পিটিআই জানিয়েছে, এএসিসি পাকিস্তানের বাকি ম্যাচগুলোতে পাইক্রফটকে দায়িত্ব না দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করছে। তার বদলে রিচি রিচার্ডসনের নাম সামনে এসেছে, যাকে পিসিবি আপত্তিহীনভাবেই মেনে নেবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সব মিলিয়ে, পিসিবির সোশ্যাল মিডিয়া ঝড় হয়তো দেশে ভালো সাড়া ফেলছে; কিন্তু আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তাদের অবস্থান দুর্বলই হয়ে পড়ছে। কারণ হাত মেলানো আইনগতভাবে বাধ্যতামূলক নয়, বরং কেবল ক্রিকেটের স্পিরিট অব দ্য গেম-এর অংশমাত্র।
মন্তব্য করুন