

বাংলাদেশ ক্রিকেটে আবার সেই পুরোনো অচলাবস্থার গন্ধ। চার সিরিজের টানা জয়ের পর, হঠাৎ যেন সব এলোমেলো। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দুই ম্যাচেই হেরে এখন হোয়াইটওয়াশের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে টাইগাররা। এই ধারাবাহিক ব্যর্থতা দেখে অবশেষে মুখ খুললেন বিসিবি সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল। তার ঘোষণা বেশ স্পষ্ট— “আজ থেকেই নাক গলানো শুরু করব।”
শব্দটা রসিকতাপূর্ণ শোনালেও, ভেতরে লুকিয়ে আছে গভীর হতাশা আর জরুরি বার্তা। কারণ বুলবুল জানেন, এই দলটা যতটা প্রতিভাবান, ঠিক ততটাই অস্থির। ছোট টার্গেট সামনে এলে ব্যাটিং লাইনআপ যেন হঠাৎ ভুলে যায় পেশাদারিত্ব। শ্রীলঙ্কা থেকে শুরু করে এশিয়া কাপ পর্যন্ত— প্রতি সিরিজেই কোথাও না কোথাও ভাঙছে মিডল অর্ডারের মেরুদণ্ড। আর ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজে তো সেই দুর্বলতাই প্রকাশ্যে নগ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
১৩৫ রানের টার্গেট মিস করে এশিয়া কাপের ফাইনাল হাতছাড়া, আর এখন ১৫০ রানও তাড়া করতে না পারা— দলের এই দুরবস্থা দেখে বুলবুল হতবাক। এক সাক্ষাৎকারে বিসিবি সভাপতি ক্ষোভ ঝেড়েছেন, “আমরা বুঝি এখন ১৫০ রানও তাড়া করতে পারি না!”
তবে কেবল হতাশ হয়ে বসে থাকছেন না তিনি। জানিয়েছেন, ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজ শেষেই নেমে পড়বেন সরাসরি কাজের মাঠে। “টি-টোয়েন্টি সিরিজের একটা ম্যাচ বাকি আছে। এখনই কিছু করব না। তবে আয়ারল্যান্ড সিরিজ থেকে নতুন কিছু দেখবেন— আমি তখন দলের খুব কাছাকাছি থাকব,”—বলেছেন তিনি।
বাংলাদেশের ক্রিকেটে এমন আত্মসমালোচনার সুর সচরাচর শোনা যায় না। বিশেষ করে বোর্ড সভাপতির মুখে এমন স্বীকারোক্তি অনেক বড় বার্তা বহন করে। হয়তো এবার সত্যিই সময় এসেছে ক্রিকেটে ‘নাক গলানোর’, তবে সেই নাক যেন কেবল নজরদারি নয়, বরং সংস্কার, দায়িত্ব আর জবাবদিহির প্রতীক হয়।
বুলবুলের কণ্ঠে যে বাস্তবতার সুর, তা হয়তো এই দলের জন্য প্রয়োজনীয় ওষুধই হয়ে উঠতে পারে। কারণ বারবার একই রোগে আক্রান্ত ক্রিকেটকে বাঁচাতে এখন দরকার সাহসী শল্যচিকিৎসা। প্রশ্ন শুধু একটাই— বুলবুলের এই ঘোষণা মাঠে কতটা বাস্তব রূপ পাবে?
মন্তব্য করুন