

সিরিজে আগেই হার নিশ্চিত। এখন সামনে শুধু একটাই লক্ষ্য—সম্মান রক্ষা। কিন্তু সেই চেষ্টাতেও দলের বাকি সবাই ব্যর্থ, একা তানজিদ হাসান তামিমই লড়লেন শেষ পর্যন্ত। তার চোখধাঁধানো ব্যাটিংয়ে ভর করেই কোনো রকমে ১৫১ রানের পুঁজি গড়ে তুলেছে বাংলাদেশ।
বীরশ্রেষ্ঠ ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমান স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে শুক্রবার বিকেলে ভেসে বেড়াচ্ছিল একটাই নাম—তানজিদ। বাঁহাতি এই ওপেনার যেন নিজের হাতে লিখে দিলেন ইনিংসের গল্প। শুরুটা অনিশ্চয়তায় ভরা হলেও শেষ পর্যন্ত ঝড় তুললেন ক্যারিবীয় বোলারদের ওপর। ইনিংসের প্রথম বলেই জেসন হোল্ডারের এক ডেলিভারি এসে আঘাত করে তার পায়ে, জোরালো এলবিডব্লিউ আবেদনও হয়েছিল। কিন্তু রিভিউতে দেখা যায় বল পিচ করছে লেগ স্টাম্পের বাইরে—বাংলাদেশ তখনই বেঁচে যায় এক বড় ধাক্কা থেকে।
সৌভাগ্য সেদিন পুরোপুরি তানজিদের পক্ষে ছিল না, তবে তার দৃঢ়তা ছিল অটল। রোমারিও শেফার্ডের বলে মিড-অফে তুলে দেওয়া ক্যাচটি হোল্ডার হাতে নিতে ব্যর্থ হন—যে ভুল পরিণত হয় ক্যারিবীয়দের জন্য মহার্ঘ্যে। সুযোগের সর্বোত্তম ব্যবহার করে এই তরুণ ওপেনার গড়ে তোলেন চোখধাঁধানো এক ইনিংস—৬২ বলে ৮৯ রান, ৯ চার ও ৪ ছক্কায় রাঙানো।
তবে তানজিদের সঙ্গী হতে পারেননি কেউই। ওপেনিংয়ে পারভেজ হোসেন ইমন (১০ বলে ৯) শুরুতেই চেজের বলে মোতির হাতে ধরা পড়েন। এরপর অধিনায়ক লিটন দাসও (৯ বলে ৬) ফেরেন খ্যারি পিয়েরের বলে, দলীয় রান তখন ৪৪।
তৃতীয় উইকেটে তানজিদের সঙ্গে কিছুটা স্থিতি আনেন সাইফ হাসান। ৪৩ বলে ৬৩ রানের জুটি গড়ে দলকে শতরানের ঘরে তুলেন তারা। কিন্তু জেসন হোল্ডারের অফকাটে বড় শট খেলতে গিয়ে আকিম অগাস্টের হাতে ধরা পড়েন সাইফ (২২ বলে ২৩)। এর পর থেকেই একপাশে তানজিদের সংগ্রাম, অন্য পাশে ধ্বস।
রিশাদ হোসেন (৩), নুরুল হাসান (১), নাসুম আহমেদ (১) ও জাকের আলী (৫) একে একে সাজঘরে ফেরেন। শেষদিকে শরিফুল ইসলাম গোল্ডেন ডাক মেরে ফেরেন, তাসকিন আহমেদ ইনিংসের শেষ বলে রান আউট হয়ে যান ৯ রানে।
বাংলাদেশের ইনিংসের পরিসংখ্যানই বলে দেয় গল্প—প্রথম ৮৬ বলে ১০০, শেষ ৩৪ বলে মাত্র ৫১ রান। টপ অর্ডারের জ্বলজ্বলে শুরু শেষমেশ হারিয়ে যায় মিডল অর্ডারের ব্যর্থতায়।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে কার্যকর ছিলেন রোমারিও শেফার্ড—৪ ওভারে ৩৬ রান দিয়ে ৩ উইকেট। হোল্ডার ও পিয়েরে নেন ২টি করে, চেজ ও আকিল হোসেনের ঝুলিতে একটি করে উইকেট।
চট্টগ্রামের সন্ধ্যার বাতাসে তাই প্রশ্নটা ঘুরপাক খাচ্ছে—তানজিদের একার লড়াইয়ে গড়া এই ১৫১ রানের পুঁজি কি যথেষ্ট হবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের মতো ব্যাটিং শক্তিশালী দলের বিপক্ষে? হয়তো উত্তরটা দেবে দ্বিতীয় ইনিংসের প্রথম কয়েক ওভারই।
স্কোর:
বাংলাদেশ ১৫১ অলআউট (২০ ওভার)
তানজিদ হাসান তামিম ৮৯ (৬২), সাইফ হাসান ২৩ (২২)
রোমারিও শেফার্ড ৩/৩৬, জেসন হোল্ডার ২/৩২, খ্যারি পিয়েরে ২/২৩                    
মন্তব্য করুন