এশিয়ান কাপ বাছাই সামনে রেখে প্রস্তুতির অংশ হিসেবে জর্ডানে ত্রিদেশীয় সিরিজ খেলছে বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল। শনিবার (৩১ মে) সেই সিরিজের প্রথম ম্যাচে ৩৯ ধাপ এগিয়ে থাকা শক্তিশালী ইন্দোনেশিয়াকে ০-০ গোলে রুখে দিয়েছে ঋতুপর্ণা-মনিকারা।
ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে ইন্দোনেশিয়ার অবস্থান ৯৪তম, আর বাংলাদেশের ১৩৩। এত বিশাল ব্যবধান থাকা সত্ত্বেও জর্ডানের মাটিতে এমন ফল নিঃসন্দেহে আশাব্যঞ্জক। বিশেষ করে যখন দলটিতে রয়েছেন সদ্য ফেরা বিদ্রোহী সিনিয়র ফুটবলাররা, যাদের নিয়ে গত কয়েক মাস ধরেই চলছিল নানা জটিলতা।
জর্ডানে অনুষ্ঠিত এই ম্যাচ বাংলাদেশে সরাসরি সম্প্রচার হয়নি। কোনো লাইভ স্ট্রিমিংও ছিল না। তবে ম্যাচ শেষে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের দেওয়া বার্তায় স্পষ্ট, কোচ পিটার বাটলার সন্তুষ্ট দলের পারফরম্যান্সে।
তিনি বলেন, ‘ঋতু, মনিকা, মারিয়া—তাদের পারফরম্যান্স ছিল অসাধারণ। আমরা কয়েকটি গোলের সুযোগ তৈরি করেছি। সবচেয়ে খুশি হয়েছি দলীয় শৃঙ্খলা, আচরণ ও কমিটমেন্ট দেখে।’
বিদ্রোহের অভিযোগে ফেব্রুয়ারিতে সংযুক্ত আরব আমিরাত সফরে ছিলেন না ১৮ জন সিনিয়র ফুটবলার। সেই সিরিজে বাংলাদেশ দুটি ম্যাচেই হেরেছিল। এবার সেই অভিজ্ঞদের ফেরা বদলে দিয়েছে দলের চেহারা। শামসুন্নাহার, মনিকা, ঋতুপর্ণা—এই ফুটবলারদের উপস্থিতি দলকে দিয়েছে অভিজ্ঞতার শক্তি, মাঠে এসেছে ভারসাম্য।
পিটার বাটলার বাস্তবতা স্বীকার করে বলেন, ‘আমাদের মেয়েরা সপ্তাহে সপ্তাহে ম্যাচ খেলার সুযোগ পায় না। ইন্দোনেশিয়ার মতো পেশাদার লিগও নেই আমাদের। ওদের অনেক খেলোয়াড় বিশ্বের বিভিন্ন ক্লাবে খেলে, অনেকে আবার ন্যাচারালাইজড। এই ব্যবধান পেরিয়েই আজকের লড়াইটা হয়েছে প্রশংসনীয়।’
বাংলাদেশের পরবর্তী ম্যাচ ৩ জুন স্বাগতিক জর্ডানের বিপক্ষে। এই দুটি ম্যাচই জুনের তৃতীয় সপ্তাহে মিয়ানমারে এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের প্রস্তুতি হিসেবে ধরা হচ্ছে।
তবে গুরুত্বপূর্ণ এই প্রস্তুতিমূলক সিরিজেও দলে জায়গা হয়নি দেশের সবচেয়ে অভিজ্ঞ ফরোয়ার্ড সাবিনা খাতুনের। এ নিয়ে কোনো মন্তব্য না করলেও বিষয়টি দল নির্বাচনের ধারাবাহিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে বাধ্য করে।
তবু আজকের ফল প্রমাণ করল—উঠে দাঁড়াতে জানে এই দল। অভ্যন্তরীণ সংকটের পরও মাঠে তাদের একটাই উত্তর—লড়াই।
মন্তব্য করুন