বার্সেলোনা প্রস্তুত ছিল প্রায় ৭০৮ কোটি টাকা রিলিজ ক্লজ গুনতে। ক্লাব সভাপতি হোয়ান লাপোর্তা ও ক্রীড়া পরিচালক ডেকো সরাসরি বলেও ফেলেছিলেন—নিকো উইলিয়ামস বার্সায় আসতে চায়। কিন্তু শেষ মুহূর্তে নাটকীয় মোড়—নিজের ‘ভবিষ্যৎ’ নয়, হৃদয়ের কথাই শোনালেন ২২ বছর বয়সী স্প্যানিশ উইঙ্গার।
শুক্রবার (০৪ জুলাই) অ্যাথলেটিক ক্লাব নিশ্চিত করেছে, নিকো উইলিয়ামস নতুন করে আট বছরের চুক্তি স্বাক্ষর করেছেন, যা চলবে ২০৩৫ সাল পর্যন্ত। এর ফলে কেবল রিলিজ ক্লজই ৫০ শতাংশেরও বেশি বেড়ে গেছে—অর্থাৎ এখন আর সহজেই তাঁকে কেনা যাবে না।
একটি ভিডিও বার্তায় নিকো বলেছেন, ‘যখন কোনো সিদ্ধান্ত নিতে হয়, আমার কাছে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পায় হৃদয়ের ডাক। আমি আমার জায়গায়, আমার মানুষদের সঙ্গে আছি। এটাই আমার ঘর। আপা অ্যাথলেটিক!’
চুক্তির ঘোষণা এসেছে এমন এক সময়, যখন বার্সা সমর্থকরা ধরে নিয়েছিল উইলিয়ামস আসছেন। লামিন ইয়ামাল ও আলেহান্দ্রো বালদেরা ব্যক্তিগতভাবে নিকোকে বোঝানোর চেষ্টা করেছিলেন। এমনকি ইয়ামাল কয়েকবার ইনস্টাগ্রামে ইঙ্গিতপূর্ণ পোস্টও করেছিলেন। কিন্তু নিকো যে শেষ পর্যন্ত পছন্দের জায়গাটাকেই বেছে নেবেন, সেটাই বার্সা ভক্তদের হতাশ করেছে।
১১ বছর বয়সে অ্যাথলেটিকের একাডেমিতে যোগ দেওয়া নিকো এখন পর্যন্ত ক্লাবের হয়ে খেলেছেন ১৬৭টি ম্যাচ, করেছেন ৩১ গোল। তার ক্যারিয়ারের সবচেয়ে গর্বের মুহূর্ত সম্ভবত ২০২৪ সালের কোপা দেল রে জয়, যা অ্যাথলেটিকের ৪০ বছরের ট্রফি খরা ভাঙে। বড় ভাই ইনাকি উইলিয়ামসের সঙ্গেও ক্লাবের হয়ে খেলছেন তিনি।
চুক্তির ঘোষণার ভিডিওতে, সম্প্রতি বারবার অপমানিত হওয়া নিজের একটি মুরালের ওপরই স্প্রে পেইন্টে লিখেছেন ‘২০৩৫’। তা যেন প্রতিশ্রুতি—এই ক্লাবই তার ঘর।
স্পেনের জার্সিতে ইতোমধ্যে ২৮টি ম্যাচ খেলে ফেলেছেন নিকো উইলিয়ামস। করেছেন ৬টি গোল, যার একটি এসেছে ইউরো ২০২৪-এর ফাইনালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। জাতীয় দলের হয়ে খেলতে গিয়েই ঘনিষ্ঠতা তৈরি হয়েছে বার্সার বেশ কয়েকজন তরুণের সঙ্গে—পেদ্রি, ইয়ামাল, বালদে প্রমুখ।
নিকোকে না পাওয়ায় বার্সাকে এবার অন্যদের দিকে নজর দিতে হচ্ছে। ডেকো ইতিমধ্যে জানিয়েছেন, ইয়ামাল ও রাফিনিয়ার ওপর থেকে চাপ কমাতে একজন নতুন উইঙ্গার আনা এখন শীর্ষ অগ্রাধিকার।
লিভারপুলের লুইস দিয়াস পছন্দের তালিকায় থাকলেও, প্রিমিয়ার লিগ চ্যাম্পিয়নরা ইতোমধ্যে বার্সা ও বায়ার্ন মিউনিখের প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছে। অন্যদিকে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের মার্কাস রাশফোর্ড নিজেই বলেছেন, ‘একদিন ইয়ামালের সঙ্গে খেলতে পারলে ভালো লাগবে।’ তার দিকেও নজর বাড়াতে পারে কাতালান ক্লাবটি।
মন্তব্য করুন