চারবারের ক্লাব বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন রিয়াল মাদ্রিদ এমন ভঙ্গুর ও বিধ্বস্ত হবে,তা বোধহয় কল্পনাও করেননি তাদের সবচেয়ে বড় নিন্দুকও। কিন্তু প্যারিস সেইন্ট জার্মেইর (পিএসজির) দুর্দান্ত শুরু আর স্প্যানিশ জায়ান্টদের চরম কৌশলগত ভুল মিলিয়ে সেমিফাইনালটা একতরফা হয়ে উঠল। ৯ মিনিটেই দুই গোল হজম। এরপর ম্যাচজুড়ে ছন্নছাড়া পারফরম্যান্স, ফলাফল ৪-০ গোলের বিশাল হার। মাঠ ছাড়ার সময় মাথা নিচু করে বেরিয়ে গেছে ইউরোপের রাজপুত্ররা।
টুর্নামেন্টের শুরুতে পাঁচ ডিফেন্ডারের যে রক্ষণভাগ রিয়ালকে ভরসা দিয়েছিল, সেটাই সেমিফাইনালে বদলে ফেললেন সদ্য নিয়োগ পাওয়া কোচ জাবি আলোনসো। নিষেধাজ্ঞার কারণে ডিন হুইসেন এবং চোটের কারণে অনুপস্থিত ট্রেন্ট আলেকজান্ডার-আর্নল্ড—এই দুই গুরুত্বপূর্ণ ডিফেন্ডার না থাকলেও চার ডিফেন্ডার নিয়ে মাঠে নামার সিদ্ধান্তটা বুমেরাং হয়ে দাঁড়ায়।
ম্যাচের মাত্র ৯ মিনিটেই পিএসজি ফাবিয়ান রুইজ ও ওসমান ডেম্বেলের গোল রিয়াল রক্ষণকে চূর্ণ-বিচূর্ণ করে দেন। এরপর ম্যাচে আর ফেরার পথ খুঁজে পায়নি রিয়াল।
রিয়াল মাদ্রিদের আক্রমণভাগে থাকা ভিনি-এমবাপ্পেরা নিজেও ছিলেন নিষ্প্রভ। পুরো ম্যাচে মাত্র কয়েকটি গোলের সুযোগ তৈরি করতে পেরেছে তারা, যা ফরাসি চ্যাম্পিয়নদের বিপক্ষে নিতান্তই অপ্রতুল। দ্বিতীয়ার্ধে আলোনসো একাধিক পরিবর্তন আনলেও তাতে খেলার গতি বা ফলাফলে কোনো প্রভাব পড়ে না। বরং, দ্বিতীয়ার্ধেও আরও গোল হজম করে রিয়াল।
ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে আলোনসো বলেন, ‘আমরা দুই গোল খেয়ে খেলায় ঢোকার আগেই পিছিয়ে গিয়েছিলাম। আমাদের ফুটবলের মান আজ খুব নিচে নেমে গিয়েছিল। এটা খুবই বেদনাদায়ক পরাজয়। তবে এই ব্যথা থেকেই ভবিষ্যতের শিক্ষা নিতে হবে আমাদের।’
তিনি আরও যোগ করেন, ‘কিছু সীমাবদ্ধতা ছিল, ভুল করেছি আমরাই। এসব দেখে ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া সহজ হয়।’
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্যটি দেন আলোনসো ম্যাচশেষে: ‘এটা একটা বিরতির মতো, এরপর একদম নতুন করে শুরু করব। সামনে নতুন যুগের সূচনা হবে। আমরা এমন একটা দল তৈরি করতে চাই যারা এক হয়ে খেলবে, একসঙ্গে লড়বে। আর হয়তো নতুন কিছু খেলোয়াড়ও আসতে পারে। দেখা যাক সামনে কী হয়।’
এই ঘোষণায় পরিষ্কার, আগামী মৌসুমে রিয়াল মাদ্রিদের স্কোয়াড এবং কৌশলে বড় ধরনের পরিবর্তন আসতে চলেছে। কোচ হিসেবে নিজের প্রথম পূর্ণ মৌসুমে আলোনসো যে বড় কিছু গড়ার স্বপ্ন দেখছেন, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
মন্তব্য করুন