২০২৬ সালের ফুটবল বিশ্বকাপের আসরকে ঘিরে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মন্তব্যে বিতর্ক তৈরি হলেও ফিফা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে—টুর্নামেন্টের আয়োজক শহর নির্ধারণে কোনো রাষ্ট্রনেতার হস্তক্ষেপের সুযোগ নেই। ফিফার সহসভাপতি ভিক্টর মন্তাগলিয়ানি সাফ জানালেন, ‘এটা ফিফার টুর্নামেন্ট, ফিফার এখতিয়ার, সিদ্ধান্তও নেবে ফিফাই।’
ট্রাম্প সম্প্রতি ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, যুক্তরাষ্ট্রের যেসব শহর তার অভিবাসন ও অপরাধবিরোধী নীতির বিরোধিতা করছে, সেসব জায়গাকে তিনি ‘অসুরক্ষিত’ ঘোষণা করে বিশ্বকাপ ম্যাচ সরিয়ে নিতে পারেন। কিন্তু ২০২২ সালে অনুমোদিত আয়োজক পরিকল্পনা অনুযায়ী এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ১১টি শহর, কানাডার ২টি ও মেক্সিকোর ৩টি শহরের সঙ্গে ফিফার চুক্তি চূড়ান্ত।
লন্ডনে এক ক্রীড়া ব্যবসা সম্মেলনে মন্তাগলিয়ানি বলেন, ‘ফুটবল কোনো সরকারের শাসনামল বা স্লোগানের চেয়ে অনেক বড়। এ খেলাই সৌন্দর্য—এটা ব্যক্তি বা দেশ নয়, সবার ঊর্ধ্বে।’
হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প বলেছিলেন, ‘যদি আমি মনে করি কোনো শহর নিরাপদ নয়, তাহলে আমরা সেখান থেকে ম্যাচ সরিয়ে নেব। অলিম্পিকের ক্ষেত্রেও একই।’
তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, মাত্র আট মাস আগে ভেন্যু পরিবর্তন করা কার্যত অসম্ভব। কারণ আয়োজক শহরগুলো এরই মধ্যে নিরাপত্তা, ভিসা প্রক্রিয়া, আইনশৃঙ্খলা ও অবকাঠামোগত খাতে শত শত কোটি ডলার বিনিয়োগে অঙ্গীকারবদ্ধ।
এদিকে ট্রাম্প ও ফিফা সভাপতি জিয়ান্নি ইনফান্তিনোর মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে, যা নিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নানা আলোচনা চলছে। ইনফান্তিনো নিয়মিতই হোয়াইট হাউস সফর করেন। তবে তিনি এখনো ট্রাম্পের সাম্প্রতিক মন্তব্য নিয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া জানাননি।
এদিকে মন্তাগলিয়ানি আরও পরিষ্কার করেছেন, আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট থেকে ইসরায়েলকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত ফিফার নয়, বরং উয়েফার এখতিয়ার। সাম্প্রতিক সময়ে জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা ফিফা ও উয়েফাকে ইসরায়েলকে নিষিদ্ধ করার আহ্বান জানিয়েছিলেন। তবে ফিফা সহসভাপতি জানান, বিষয়টি পুরোপুরি উয়েফার সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করছে।
২০২৬ বিশ্বকাপ শুরু হবে আগামী ১১ জুন, চলবে ১৯ জুলাই পর্যন্ত। ৪৮ দলের এই আসরে যুক্তরাষ্ট্র, মেক্সিকো ও কানাডা যৌথভাবে আয়োজক।
মন্তব্য করুন