এক নারী সাঁতারুকে যৌন হয়রানি করা হয়েছে—এমন অভিযোগে তোলপাড় সাঁতার অঙ্গন। আসলেই যৌন হয়রানি, না কি ভিন্ন কিছু!
এ সংক্রান্ত অভিযোগে স্থান উল্লেখ করা হয়েছে জাতীয় সুইমিং কমপ্লেক্স। ঘটনার সময় হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, ২২ মে, বৃহস্পতিবার রাত আনুমানিক ১১টায়। ওই সময় সুইমিং কমপ্লেক্সে উপস্থিত থাকা এক ব্যক্তির ভাষ্য শোনা যাক, ‘অভিযোগ যার বিরুদ্ধে, সেই আলমগীর হোসেনের নারীঘটিত নানা ঘটনা আগেও শুনেছি; কিন্তু এ যাত্রায় এমন কিছু আমি দেখিনি।’
অভিযুক্ত আলমগীর হোসেন দাবি করেন, ‘অভিযোগে যে সময়ের কথা উল্লেখ করা হয়েছে, ওই সময়ের আগেই আমি সুইমিং কমপ্লেক্স ছেড়ে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিলাম। রাত ১০টা ৪৫ মিনিটে গাবতলী থেকে রাজশাহীর উদ্দেশ্যে শিশির স্পেশালের বাসে করে ছেলে আব্দুর রহমান নূরকে নিয়ে বাড়ির দিকে রওনা হয়েছিলাম।’ কালবেলার কাছে বাসের একটা টিকিটও এসেছে।
ঘটনা সম্পর্কে সাঁতার ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান শাহীনের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি কালবেলাকে বলেছেন, ‘সাঁতার ফেডারেশনের সভা শুরুর আগে ফেডারেশনে আমার এক সহকর্মী অভিযোগপত্র নিয়ে আসেন। যেখানে কারও স্বাক্ষর ছিল না। স্বাক্ষর না থাকায় আমি সেটা গ্রহণ করিনি। কিন্তু সভার একপর্যায়ে ফেডারেশনের ওই সহকর্মী ফেডারেশন সভাপতির সামনে নারীঘটিত একটি বিষয় উত্থাপন করেন।’
মাহবুবুর রহমান শাহীন আরও বলেন, ‘যে নারী হয়রানির শিকার বলে দাবি করা হচ্ছে, তিনি কিন্তু আমার এবং নির্বাহী কমিটির একাধিক সদস্যের সামনে এসে সাক্ষ্য দিয়েছেন। সে নারী দাবি করেছেন, যে অভিযোগের কথা বলা হচ্ছে; আমি সে সম্পর্কে জানি না। আমি কোনো অভিযোগও করিনি।’
কালবেলার হাতে এসেছে বেশকিছু অডিও ক্লিপ। যিনি যৌন নিপীড়নের শিকার বলে দাবি করা হচ্ছে, সেই নারীকে বলতে শোনা গেছে, ‘আমি তো কারও বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ করিনি। কোনো অভিযোগপত্রে স্বাক্ষরও করিনি। তাহলে আমাকে জড়িয়ে কেন এমন ঘটনা?’
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, সাঁতারে যৌন নিপীড়ন সংক্রান্ত ঘটনা প্রথমে চাউর হয়েছে ফেসবুকে, সাঁতার সংশ্লিষ্ট পেজে। পুরো বিষয় খতিয়ে দেখতে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ঘটনা তদন্তের পাশাপাশি ওই ফেসবুক পেজ যারা পরিচালনা করছেন, তাদের খুঁজতে গোয়েন্দা তৎপরতাও শুরু হয়েছে।
এদিকে যে নারী যৌন নিপীড়নের শিকার বলে দাবি করা হচ্ছে, সেই নারী কালবেলাকে বলেছেন, ‘আমি জানি না কে বা কারা আমার নামে অভিযোগ দিয়েছেন। আমি এমন কোনো ঘটনার সঙ্গে জড়িত নই যে, কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ করব।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমাকে ঘিরে যখন আলোচনা হচ্ছিল, তখন আমি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক স্যারের কাছে গিয়েছিলাম। যারা এগুলো রটাচ্ছেন, আমি তাদের বিচার চেয়েছি।’
এদিকে সাবেক এক সাঁতারু বলছিলেন, ‘নারীঘটিত যে কোনো ঘটনা স্পর্শকাতর। যদি আদৌ এমন ঘটনা ঘটে থাকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক। ঘটনার সত্যতা পাওয়া না গেলে যারা এর সঙ্গে জড়িত, তাদের শাস্তির আওতায় আনা হোক।’
মন্তব্য করুন