কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ২৬ জুলাই ২০২৪, ১২:১৭ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

অন্ধকার ইতিহাস নিয়ে দাঁড়িয়ে ‘ভুতুড়ে’ দ্বীপ

জাপানের পরিত্যক্ত হাশিমা দ্বীপ। ছবি : সংগৃহীত
জাপানের পরিত্যক্ত হাশিমা দ্বীপ। ছবি : সংগৃহীত

সবুজহীন এই ‘ভুতুড়ে’ দ্বীপের উঁচু দালানগুলো দেখলে মনে হয়, সমুদ্রের মাঝে একটি সামরিক জাহাজ যেন নোঙর ফেলে দাঁড়িয়ে আছে। নাগাসাকি থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই দ্বীপটি একসময় জনবহুল থাকলেও রাতারাতি তা ‘মৃত’ হয়ে যায়।

জাপানে শিল্পায়নের সময় কয়লাখনির জন্য জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল গানকানজিমা দ্বীপ। এটি হাশিমা দ্বীপ নামেও পরিচিত। বর্তমানে বিশ্বের পাঁচ শতাধিক জনমানবহীন দ্বীপের তালিকায় লেখা রয়েছে হাশিমা দ্বীপের নাম। জেমস বন্ডের ‘স্কাইফল’-সহ বেশ কয়েকটি সিনেমার শুটিংও হয়েছে এই দ্বীপে।

হাশিমা দ্বীপ যেখানে অবস্থিত, সেখানে উন্নত মানের কয়লার সন্ধান পাওয়া গিয়েছিল ১৮১০ সালে। ১৮৯০ সালে মিৎসুবিশি সংস্থা দ্বীপটি কিনে নেয়। তার পর সেখানে কয়লাখনি নির্মাণের পাশাপাশি বেশকিছু দালান তৈরি করে তারা। এর মধ্যে ছিল ১০ তলার একটি বাড়িও।

১৯৫৯ সালের মধ্যে হাশিমা দ্বীপের জনসংখ্যা পাঁচ হাজার পেরিয়ে যায়। প্রতি বছর এই দ্বীপের এক বর্গকিলোমিটার এলাকা থেকে ৪ লাখ টন কয়লা উৎপাদন হতো।

হাশিমা দ্বীপের উন্নয়নের জন্য সেখানে একের পর এক আবাসন তৈরি করা হতে থাকে। দ্বীপের বাসিন্দাদের সুবিধার জন্য সেখানে হাসপাতাল, বিনোদনের জন্য সুইমিংপুল, ক্লাব এমনকি প্রেক্ষাগৃহও নির্মাণ করা হয়। হাশিমা দ্বীপে বাড়িগুলো এমনভাবে নির্মাণ করা হয়েছিল যাতে টাইফুনের হাত থেকে সেগুলো রক্ষা পেতে পারে। দূর থেকে এই দ্বীপটি দেখে মনে হয় যেন সমুদ্রে নোঙর করে রয়েছে বিশাল এক যুদ্ধজাহাজ।

শোনা যায়, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন চীন এবং দক্ষিণ কোরিয়ার বাসিন্দাদের হাশিমা দ্বীপে বন্দি করে রাখা হতো। তাদের শাস্তি দিতে কয়লাখনিতে কঠিন পরিশ্রমের কাজ করানো হতো।

কিন্তু ১৯৬০ সালে জাপানের শিল্পে কয়লার পরিবর্তে পেট্রোলিয়াম জায়গা করে নেয়। দেশজুড়ে সমস্ত কয়লাখনি বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। ১৬ একরজুড়ে অবস্থিত হাশিমা দ্বীপের বাসিন্দাদের রাতারাতি চলে যেতে বলা হয় দ্বীপ ছেড়ে।

১৯৭৪ সালের জানুয়ারি মাসে হাশিমা দ্বীপটি বন্ধ করার প্রক্রিয়া শুরু হয়। ওই বছরেরই ২০ এপ্রিল সেখানকার বাসিন্দারা দ্বীপ ছেড়ে চলে যান। এরপর ২০০৯ সালে পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছিল এই দ্বীপটি। তবে শুধুমাত্র অ্যাডভেঞ্চারপ্রেমীরাই এই দ্বীপে বেড়াতে যেতে পারেন।

২০১৫ সালে হাশিমা দ্বীপকে ইউনেসকো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট ঘোষণা করে। টোকিয়ো বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক তাকাফুমি নোগুচির নেতৃত্বে এই দ্বীপের বাড়িগুলি সংরক্ষণের কাজ শুরু হয়।

প্রাকৃতিক দুর্যোগের পরেও এখনও বেশকিছু ধ্বংসাবশেষ রয়ে গেছে পরিত্যক্ত দ্বীপে। ‘ডার্ক ট্যুরিস্ট’ নামের একটি ওয়েব সিরিজে এই জনমানবহীন দ্বীপ নিয়ে একটি শো করেন ডেভিড ফেরিয়ার নামে নিউ জিল্যান্ডের এক সাংবাদিক। বর্তমানে ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে এই ‘ভুতুড়ে’ দ্বীপটি।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

শুক্রবার রাজধানীর যেসব এলাকায় যাবেন না

দেখে নিন রাশিফল, কেমন যাবে আপনার ছুটির দিনটি?

মুন্সীগঞ্জে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় দুই বন্ধু নিহত

১৩ সেপ্টেম্বর, ইতিহাসের এই দিনে যা ঘটেছিল

আজকের নামাজের সময়সূচি

দুপুরের মধ্যে যেসব জেলায় তীব্র ঝড়ের শঙ্কা

সিএমএইচ থেকে বাড়ি ফিরেছেন আহত ৯৪৮ শিক্ষার্থী 

টিএসসির গজল সন্ধ্যায় কলরবের মনোমুগ্ধকর পরিবেশনা 

দুপুরে দেশে ফিরছেন আমিরাতে ক্ষমা পাওয়া আরও ২৮ বাংলাদেশি

প্রবাসীদের জন্যে সুখবর

১০

ফের উৎপাদনে ফিরেছে বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র

১১

সেনাবাহিনীকে ধন্যবাদ জানালেন আহমাদুল্লাহ

১২

নিখোঁজের দু’মাস পর / আশুলিয়া থেকে অস্ট্রেলিয়ান নাগরিকের মরদেহ উদ্ধার 

১৩

সাবেক এমপি নায়েব আলী গ্রেপ্তার

১৪

রাজধানীতে বোমা তৈরির সরঞ্জামসহ দুই নাশকতাকারী আটক

১৫

ঔষধ শিল্পের বিকাশে পাশে থাকার আশ্বাস বিএনপির

১৬

তেজগাঁও কলেজ থেকে মুছে দেওয়া হলো সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নাম 

১৭

আপা আপা বলা তানভীর নিজেই আ.লীগের হাতে নির্যাতিত, আছেন রাজনৈতিক আশ্রয়ে

১৮

গুলিবর্ষণ ও ককটেল নিক্ষেপ মামলায় আ.লীগ নেতা আটক

১৯

বসত বাড়িতে হামলা / বিচার চেয়ে দ্বারে দ্বারে ঘুরছে একটি পরিবার

২০
X