হোয়াটসঅ্যাপ কিংবা ফেসবুক মেসেঞ্জারের বিকল্প হিসেবে প্রযুক্তিপ্রেমী ও গোপনীয়তা সচেতন ব্যবহারকারীদের জন্য হাজির হলো একেবারেই ব্যতিক্রমধর্মী এক মেসেজিং অ্যাপ। ‘বিটচ্যাট’ নামক এ অ্যাপটি তৈরি করেছেন 'এক্স'-এর সহপ্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক সিইও জ্যাক ডরসি।
বিটচ্যাট-এর সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য হলো এই অ্যাপ ব্যবহারে প্রয়োজন হয় না ফোন নম্বর, ইমেইল বা ইন্টারনেট সংযোগের। এমনকি কোনো কেন্দ্রীয় সার্ভারের ওপরও নির্ভর করে না এটি।
কীভাবে কাজ করে বিটচ্যাট?
অ্যাপটি ব্লুটুথ মেশ নেটওয়ার্ক প্রযুক্তির ওপর ভিত্তি করে তৈরি। আশেপাশে থাকা ডিভাইসগুলোর সঙ্গে এনক্রিপ্টেড পিয়ার-টু-পিয়ার বার্তা আদান-প্রদান করে এটি। অর্থাৎ, কোনো বার্তা ইন্টারনেটের মাধ্যমে কোথাও জমা থাকে না। বরং সরাসরি একটি ডিভাইস থেকে আরেকটিতে পৌঁছে যায় এবং নির্দিষ্ট সময় পরে মুছেও যায়।
জ্যাক ডরসি এটিকে তার ব্যক্তিগত গবেষণা প্রকল্প হিসেবে উল্লেখ করেছেন। অ্যাপটিতে তিনি ‘স্টোর অ্যান্ড ফরোয়ার্ড, রিলে, ব্রিজ ডিভাইস এবং শক্তিশালী এনক্রিপশন প্রযুক্তি’ ব্যবহার করেছেন বলে জানান।
ব্যবহারকারীর গোপনীয়তা আগে
ব্যবহারকারী যখন চলাফেরা করেন, তখন তার ডিভাইস আশপাশের অন্য বিটচ্যাট ব্যবহারকারীদের সঙ্গে ‘ব্লুটুথ ক্লাস্টার’ তৈরি করে। এর মাধ্যমে মেসেজ একের পর এক ডিভাইস ছুঁয়ে নির্দিষ্ট প্রাপকের কাছে পৌঁছে যায়। পুরো প্রক্রিয়াটি সম্পূর্ণভাবে অফ-গ্রিড এবং সেন্সরশিপ প্রতিরোধী।
বিশেষ ফিচার ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
- বিটচ্যাটে রুম বা গ্রুপ চ্যাট ফিচার রয়েছে, যা হ্যাশট্যাগ ও পাসওয়ার্ড দিয়ে সুরক্ষিত করা যায়। - ভবিষ্যতে এতে Wi-Fi Direct প্রযুক্তি যুক্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে, যাতে সংযোগ আরও নির্ভরযোগ্য হয়। - অ্যাপটি অনুপ্রাণিত হয়েছে হংকংয়ের গণআন্দোলনে ব্যবহৃত বিকেন্দ্রীকৃত যোগাযোগ প্রযুক্তি থেকে।
কেন বিটচ্যাট গুরুত্বপূর্ণ?
বিশেষজ্ঞদের মতে, সেন্সরশিপ বা নজরদারির ঝুঁকি এড়াতে এবং সংকটকালীন সময়ে যোগাযোগ বজায় রাখতে বিটচ্যাট হতে পারে একটি কার্যকর সমাধান। এমন জায়গায়, যেখানে ইন্টারনেট সংযোগ নেই বা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, সেখানেও অ্যাপটি কার্যকরভাবে কাজ করতে সক্ষম।
গোপনীয়তা, স্বাধীনতা ও প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনের মিলনে তৈরি বিটচ্যাট হয়তো ভবিষ্যতের মেসেজিং-এর নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে।
মন্তব্য করুন