ইলন মাস্কের শিক্ষাজীবন নিয়ে বাড়ছে আগ্রহ। বিশ্বের অন্যতম ধনী ব্যক্তি এবং টেসলা ও স্পেসএক্সের প্রধান নির্বাহী ইলন মাস্ক কোথায় পড়াশোনা করেছেন, তা নিয়ে অনেকের কৌতূহল।
ইলন মাস্ক দক্ষিণ আফ্রিকার প্রিটোরিয়ায় বেড়ে উঠেছেন। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা গ্রহণের পর ১৯৮৯ সালে তিনি কানাডায় পাড়ি জমান। সেখানেই কিংস্টনের কুইন্স ইউনিভার্সিটিতে দুই বছর অধ্যয়ন করেন। এরপর তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব পেনসিলভানিয়ায় স্থানান্তরিত হন।
১৯৯২ সালে তিনি পেনসিলভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। সেখানে তিনি ফিজিক্স ও ইকোনমিকসে গ্র্যাজুয়েশন সম্পন্ন করেন।
পরে ১৯৯৫ সালে ক্যালিফোর্নিয়ার স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটিতে পিএইচডি প্রোগ্রামে ভর্তি হন ইলন মাস্ক। তবে মাত্র দুই দিনের মাথায় তিনি সেখানে পড়াশোনা ছেড়ে দিয়ে নিজস্ব ব্যবসা শুরু করার সিদ্ধান্ত নেন। সেই সিদ্ধান্ত থেকেই জন্ম নেয় জিপ-টু, তার প্রথম প্রযুক্তি কোম্পানি, যা পরবর্তী সময় সফলভাবে বিক্রি হয় এবং শুরু হয় তার ব্যবসায়িক যাত্রা।
বিশ্বের অন্যতম বড় প্রযুক্তি উদ্যোক্তা ও ধনকুবের ইলন মাস্কের শিক্ষাজীবনের এই অধ্যায় তার পরবর্তী জীবনে বড় প্রভাব রেখেছে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা।
এদিকে ইলন মাস্ক যুক্তরাষ্ট্রে নতুন একটি রাজনৈতিক দল গঠনের ঘোষণা দিয়েছেন। তার নতুন দলের নাম ‘আমেরিকা পার্টি’। এটি যুক্তরাষ্ট্রের প্রচলিত দুই দল—রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাটের বিকল্প হিসেবে কাজ করবে।
সম্প্রতি সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে মাস্কের সম্পর্কের অবনতি ঘটে। এর কিছুদিন পরই শনিবার (৬ জুলাই) নিজের মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘এক্স’-এ তিনি নতুন দল গঠনের ঘোষণা দেন। মাস্ক বলেন, আমরা একদলীয় শাসনের মধ্যে বাস করছি, যেখানে অপচয় আর দুর্নীতির মাধ্যমে দেশকে দেউলিয়া করে দেওয়া হচ্ছে। আজ ‘আমেরিকা পার্টি’ গঠিত হলো—মানুষের স্বাধীনতা ফিরিয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে।
তবে এখনো স্পষ্ট নয়, মাস্কের এ দলটি আনুষ্ঠানিকভাবে যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত হয়েছে কি না। তিনি দলের নেতৃত্ব, কাঠামো বা ভবিষ্যৎ পরিকল্পনাও বিস্তারিতভাবে জানাননি।
২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মাস্ক ট্রাম্পের গুরুত্বপূর্ণ সমর্থক ছিলেন। ট্রাম্পকে নির্বাচনে সহায়তা করতে তিনি প্রায় ২৫০ মিলিয়ন ডলার ব্যয় করেছিলেন। নির্বাচনের পর তাকে সরকারের নতুন বিভাগ ‘ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট এফিশিয়েন্সি (ডিওজিই)’-এর দায়িত্ব দেওয়া হয়, যার কাজ ছিল বাজেট খরচ কমানো।
কিন্তু চলতি বছরের মে মাসে মাস্ক প্রশাসন থেকে সরে দাঁড়ান। এর পর থেকেই ট্রাম্পের নতুন বাজেট পরিকল্পনা, যেটিকে ট্রাম্প ‘বিগ বিউটিফুল বিল’ নামে উল্লেখ করেন, সেটির সমালোচনা শুরু করেন মাস্ক। বিশাল এই বাজেট পরিকল্পনায় রয়েছে বিপুল ব্যয় বৃদ্ধি ও কর হ্রাস, যা যুক্তরাষ্ট্রের বাজেট ঘাটতি কয়েক ট্রিলিয়ন ডলার বাড়িয়ে দিতে পারে।
এ নিয়ে মাস্ক ‘এক্স’-এ একটি জনমত জরিপ চালান। জরিপে অংশগ্রহণকারীদের বেশিরভাগই যুক্তরাষ্ট্রে নতুন রাজনৈতিক দলের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন। মাস্ক বলেন, ২:১ ব্যবধানে মানুষ নতুন দল চেয়েছে, আর তারা সেটা পেতে যাচ্ছে।
তবে এই দল নির্বাচনে অংশ নেবে কি না বা মাস্ক নিজে প্রার্থী হবেন কি না, এসব বিষয়ে তিনি কিছু জানাননি। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, মাস্কের এই পদক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক অঙ্গনে বড় পরিবর্তন আনতে পারে।
মন্তব্য করুন