শিশুরা স্বভাবতই নিষ্পাপ। তারা ভুল করে, শেখে, আবার নতুন করে গড়ে ওঠে। তবে কিছু বদভ্যাস যদি সময়মতো শুধরে না দেওয়া যায়, তাহলে বড় হয়ে তা অভ্যাসে পরিণত হয়। আর তখন শুধরে দেওয়া বেশ কঠিন।
আরও পড়ুন : খিটখিটে মেজাজ দূর করার ৭ সহজ উপায়
আরও পড়ুন : শিশুর চোখ দিয়ে পানি পড়ার কারণ জেনে নিন
আজ চলুন জেনে নিই এমন ৫টি সাধারণ বদভ্যাস ও তার থেকে দূরে রাখার সহজ উপায়, যা আপনার শিশুর ভবিষ্যতের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
অনেক শিশুই ভুল করে লুকিয়ে ফেলে বা মিথ্যে বলে, কারণ তারা ভয় পায়— শাস্তি হবে, মা-বাবা রাগ করবে। এতে তারা ধীরে ধীরে দায়িত্ব এড়ানো শিখে ফেলে।
কি করবেন?
– এমন একটা পরিবেশ তৈরি করুন, যেখানে ভুল করলে সে নিরাপদ বোধ করে
– ভুল করলেই বকাঝকা না করে বুঝিয়ে বলুন
– বলুন, ‘ভুল করতেই পারে, তবে স্বীকার করাটাই সাহস’
এতে তার মধ্যে সৎ ও দায়িত্বশীল মনোভাব গড়ে উঠবে।
শিশুরা স্কুলের হোমওয়ার্ক বা ছোট কাজও অনেক সময় বারবার তাড়া না দিলে করে না। এভাবে শিখে গেলে ভবিষ্যতে সব কিছুতেই বিলম্ব করতে শুরু করবে।
কি করবেন?
– কাজটিকে ছোট ছোট ভাগে ভাগ করুন
– সময়ের গুরুত্ব বোঝান, গল্পের ছলে “অসময়ের দশ ফোঁড়” শেখান
– সময়মতো কাজ শেষ করলে প্রশংসা করুন বা ছোট রিওয়ার্ড দিন
উৎসাহ দিলে সে সময়ের দাম বুঝতে শিখবে।
কিছু শিশু খুবই আত্মকেন্দ্রিক হয়ে পড়ে– সে শুধু নিজের কথাই ভাবে, অন্যের কথা শুনতেই চায় না। এর ফলে সে বন্ধুদের সঙ্গেও খাপ খাওয়াতে পারে না।
কি করবেন?
– পরিবারের ছোট-বড় আলোচনায় তার মতামত চান
– শেখান কীভাবে ভালো শ্রোতা হতে হয়
– ‘তুমি কী ভাবো?’ – এমন প্রশ্ন করে তার ভাবনা শুনুন
এতে সে বুঝবে, শুধু নিজের নয়, অন্যের মতামতও গুরুত্বপূর্ণ।
স্কুল, বন্ধুবান্ধব বা এমনকি বাড়ির বড়দের কাছ থেকেও শিশুরা নেগেটিভ কথা বলা শিখে ফেলে। ধীরে ধীরে তারা অন্যের ভুল খোঁজা, গিবত করার স্বভাব বানিয়ে ফেলে।
কি করবেন?
– অন্যের প্রশংসা করুন, সেটা তার সামনেই
– শেখান, কারও অনুপস্থিতিতে ভালো কথা বলাই বড় মানুষ হওয়ার পরিচয়
– ‘যা বলছো, তা কি তুমি শুনতে চাইতে?’ – এমন প্রশ্ন করে ভাবতে শেখান
এতে সে বুঝবে, ভালোবাসা ছড়ানোই বড় গুণ।
হাত ধোয়া, দাঁত ব্রাশ করা, নখ কাটা— এসব বিষয়ে অনেক শিশুই খুব অনীহা দেখায়। ছোটবেলায় এসব শেখানো না গেলে, বড় হয়ে তা ব্যক্তিত্ব ও স্বাস্থ্যের জন্য বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে।
কি করবেন?
– এই কাজগুলোকে খেলা বা মজার মাধ্যমে শেখান
– তার প্রিয় কার্টুন বা গল্পে যুক্ত করুন স্বাস্থ্যবিধির বিষয়
– প্রতিদিন রুটিন করে দিন— ‘ঘুমানোর আগে ব্রাশ, স্কুল থেকে এসে হাত ধোও’
আরও পড়ুন : শিশুর রক্তশূন্যতা নিয়ে সচেতন হোন
আরও পড়ুন : আপনার শিশুর এই লক্ষণগুলো কিডনির ঝুঁকির ইঙ্গিত দিতে পারে
ছোটখাটো অভ্যাসই শিশুকে সুশৃঙ্খল ও স্বাস্থ্যবান মানুষ হিসেবে গড়ে তোলে।
- শিশুর বদভ্যাসের পেছনের কারণ বুঝুন
- নেতিবাচক ভাষা নয়, ব্যবহার করুন উৎসাহমূলক কথা
- নিজেও যা শেখাতে চান, সেটার চর্চা করুন— কারণ শিশুরা শোনার চেয়ে দেখে শেখে বেশি
তথ্যসূত্র : টাইমস অব ইন্ডিয়া
মন্তব্য করুন