ঘানার প্রেসিডেন্ট বলেছেন যে, পশ্চিম আফ্রিকার দেশটির প্রধান বিচারপতিকে পদের অপব্যবহারের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করার পর তিনি তাকে বরখাস্ত করছেন।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে এ খবর জানানো হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, এর আগে এপ্রিল মাসে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। ওই সময় তিন ব্যক্তির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয় এবং প্রেসিডেন্ট একটি পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেন।
প্রেসিডেন্টের দপ্তর সোমবার এক বিবৃতিতে জানায়, কমিশন তদন্তে দেখতে পেয়েছে, ‘অভিযোগকৃত অসদাচরণের ভিত্তি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এবং তাকে পদ থেকে অপসারণের সুপারিশ করা হয়েছে’। তবে টরকোর্নো এসব অভিযোগকে ভিত্তিহীন ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে উড়িয়ে দিয়েছেন।
সিদ্ধান্তে পৌঁছতে প্যানেলটি আবেদনকারী ড্যানিয়েল ওফোরির পক্ষ থেকে ১৩ সাক্ষীর মাধ্যমে আনা ১০ হাজার পৃষ্ঠার প্রমাণ পর্যালোচনা করে। প্রধান বিচারপতি নিজেও সাক্ষ্য দেন এবং বিশেষজ্ঞসহ আরও ১২ সাক্ষীও উপস্থিত ছিলেন। অন্য দুটি আবেদন এখনো নিষ্পত্তি হয়নি।
প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ২০২৩ সালে সাবেক প্রেসিডেন্ট নানা আকুফো-আড্ডো মনোনীত টরকোর্নো ঘানার তৃতীয় নারী প্রধান বিচারপতি ছিলেন। এ ছাড়া তিনিই প্রথম কোনো প্রধান বিচারপতি, যার বিরুদ্ধে তদন্ত ও পদচ্যুত করা হলো।
গণমাধ্যমটি আরও বলছে, ঘানার প্রধান বিচারপতিরা নিরাপদ মেয়াদের অধিকারী। অর্থাৎ কেবল অযোগ্যতা বা অসদাচরণের মতো সীমিত কারণে তাদের পদ থেকে অপসারণ করা যায়।
এপ্রিল মাসে বিরোধী নিউ প্যাট্রিয়টিক পার্টি টরকোর্নোকে বরখাস্তের আদেশকে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা ও বিচার বিভাগের স্বাধীনতাকে ক্ষুণ্ন করার প্রচেষ্টা হিসেবে বর্ণনা করেছিল। বরখাস্ত প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা করা হলেও সেগুলো ব্যর্থ হয়।
টরকোর্নো অতীতে আকুফো-আড্ডোর সময়ও একটি অপসারণ আবেদনের মুখোমুখি হয়েছিলেন, যা তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ‘বিভিন্ন ত্রুটি’র উল্লেখ করে খারিজ করেছিলেন।
বর্তমানে ক্ষমতাসীন দল সে সময় বিরোধী অবস্থানে ছিল। টরকোর্নো কিছু রায়ে পক্ষপাত দেখিয়েছেন বলে তারা অভিযোগ করেছিল।
এদিকে সাবেক ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যালফ্রেড তুয়া-ইয়েবোয়া এএফপিকে বলেছেন, প্রধান বিচারপতিকে অপসারণের এই সিদ্ধান্ত একটি ‘বিপজ্জনক দৃষ্টান্ত’ স্থাপন করেছে। তিনি আরও বলেন, আমি যে আবেদন পড়েছি তাতে তাকে অপসারণের মতো যথাযথ কারণ নেই। যদি অপসারণের মানদণ্ড ওই আবেদনের মতো হয়, তবে আমি বিচার বিভাগের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কিত।
মন্তব্য করুন