শ্রীলঙ্কায় নজিরবিহীন অর্থনৈতিক সংকটের জেরে দেশব্যাপী গণবিক্ষোভ এবং পরবর্তীতে সরকার পতনের পর প্রথমবারের মতো প্রেসিডেন্ট নির্বাচন আয়োজিত হতে যাচ্ছে। শুক্রবার (২৬ জুলাই) শ্রীলঙ্কার নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, আগামী সেপ্টেম্বর মাসে দেশটিতে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
শ্রীলঙ্কার নির্বাচন কমিশন জারিকৃত গেজেটে বলা হয়েছে, আগামী ২১ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনকে সামনে রেখে ১৫ আগস্ট নাগাদ প্রার্থীদের প্রার্থিতার আবেদন গ্রহণ করা হবে। নির্বাচনের তফসিল অনুসারে পাঁচ সপ্তাহব্যাপী চলবে প্রচারাভিযান। চরম মন্দায় কয়েক মাস খাদ্য, জ্বালানি এবং ওষুধের মারাত্মক সংকটের পর এই নির্বাচনটি হবে জনসাধারণের মনোভাবের প্রথম পরীক্ষা। গণবিক্ষোভে সরকার পতনের পর রনিল বিক্রমাসিংহে দায়িত্ব গ্রহণ করেন এবং শ্রীলঙ্কার আর্থিক পরিস্থিতির উন্নয়নে অসংখ্য উদ্যোগ নেন। ২০২২ সালে কয়েক মাস ধরে চলা টানা বিক্ষোভে দেশটিতে রাজাপাকসে পরিবারের শাসনের অবসান ঘটে। অভিযোগ করা হয়, পারিবারিক দুঃশাসন আর লুটপাটে শ্রীলঙ্কা অর্থনৈতিকভাবে দেউলিয়া হয়েছে। গণতান্ত্রিকভাবে ভোটে নির্বাচিত হয়ে পারিবারিক দুঃশাসন চালিয়েছিল রাজাপাকসে পরিবার। এই দুঃশাসন থেকে মুক্তি পেতে রাজপথে নেমে আসে মানুষ।
প্রচণ্ড গণবিক্ষোভে প্রথমে পতন হয় প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসের। দুই মাসের মাথায় পতন ঘটে প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসের। গণবিক্ষোভের জেরে দেশ ছেড়ে মালদ্বীপ পালিয়ে যান গোতাবায়া রাজাপাকসে।
সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনে রনিল বিক্রমাসিংহের বিপক্ষে অন্তত দুজন প্রতিপক্ষ লড়বেন বলে বিশ্লেষকরা মত দিয়েছেন। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা মূলত আন্তর্জাতিক মুদ্রা সংস্থার (আইএমএফ) বেলআউট ঋণের শর্ত মানতে বিক্রমাসিংহের চালু করা সংস্কার নীতির বিরোধিতা করবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। আর্থিক সংকটের পর প্রথমবারের মতো এই নির্বাচনটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হতে যাচ্ছে, যা দেশটির কয়েক দশক ধরে চলা আর্থিক সংকট নিরসন ও ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে বলে আশা করা হচ্ছে। দেশটি অর্থনৈতিক মন্দা থেকে খানিকটা ঘুরে দাঁড়ালেও দেশের মানুষ এখনো জীবনযাপনের ক্রমবর্ধমান খরচ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন।
মন্তব্য করুন