কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৭:০৬ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

রাখাইনে সেনা সদর দপ্তর দখল আরাকান আর্মির

রাখাইন রাজ্যের রাজধানী সিতওয়েকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলেছে বিদ্রোহী গোষ্ঠী। ছবি : সংগৃহীত
রাখাইন রাজ্যের রাজধানী সিতওয়েকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলেছে বিদ্রোহী গোষ্ঠী। ছবি : সংগৃহীত

মিয়ানমারের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাখাইন রাজ্যে সেনাবাহিনীর গুরুত্বপূর্ণ একটি সেনা সদর দপ্তর দখলে নিয়েছে বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি (এএ)। এর মাধ্যমে মিয়ানমারের সামরিক জান্তা দ্বিতীয়বারের মতো আঞ্চলিক কমান্ডের নিয়ন্ত্রণ হারাল।

শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) গভীর রাতে আরাকান আর্মি এক বিবৃতিতে জানায়, দুই সপ্তাহ ধরে চলা তীব্র লড়াইয়ের পর রাখাইন রাজ্যের পশ্চিমাঞ্চলীয় সামরিক কমান্ডের পতন ঘটেছে।

তারা জানিয়েছে, এই সেনা সদর দপ্তরটি বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী এলাকায় অবস্থিত। তবে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি। খবরটি নিশ্চিত করেছে রয়টার্স।

এর আগে ২০১১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারের নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করে সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখল করে। এরপর থেকে মিয়ানমারে অস্থিরতা বিরাজ করছে এবং সরকারের বিরুদ্ধে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয়, যা পরে সশস্ত্র বিদ্রোহে পরিণত হয়। এই বিদ্রোহে আরাকান আর্মি একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।

আরাকান আর্মি (এএ) ২০২৩ সালের অক্টোবরে মিয়ানমারের সরকারবিরোধী অভিযান শুরু করে। বিদ্রোহী গোষ্ঠীটি চীন-সংলগ্ন মিয়ানমারের সীমান্তে উল্লেখযোগ্য কিছু বিজয়ও অর্জন করে। এই অভিযানে তারা উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় শহর লাশিওসহ বেশ কয়েকটি অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার দাবি করেছে। লাশিও শহরের নিয়ন্ত্রণ নেওয়া ছিল মিয়ানমারের ইতিহাসে প্রথম সামরিক কমান্ড দখলের ঘটনা।

আরাকান আর্মি, যা জান্তাবিরোধী বিদ্রোহী জোট থ্রি ব্রাদারহুডের সদস্য, সাম্প্রতিক সময়ে রাখাইন রাজ্যসহ বিভিন্ন স্থানে ধারাবাহিকভাবে অভিযান চালিয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিজয় লাভ করেছে। গত নভেম্বরে যুদ্ধবিরতি চুক্তি ভেস্তে যাওয়ার পর এই অঞ্চলে নতুন করে লড়াই শুরু হয়। বিদ্রোহী গোষ্ঠীটি বিভিন্ন সামরিক স্থাপনায় সফল হামলা চালিয়ে থাকে।

রাখাইন রাজ্য মিয়ানমারের অন্যতম দরিদ্র অঞ্চল হলেও এর কৌশলগত গুরুত্ব ব্যাপক। বঙ্গোপসাগরের উপকূলে অবস্থিত এই রাজ্যটি প্রাকৃতিক গ্যাসে সমৃদ্ধ এবং এখানকার কিয়াউক পিউ শহরে একটি পরিকল্পিত অর্থনৈতিক অঞ্চল রয়েছে। এই অঞ্চল থেকে পাইপলাইনের মাধ্যমে চীনে তেল ও গ্যাস সরবরাহ করা হয়, যা আন্তর্জাতিক অর্থনীতি ও সামরিক কৌশলের দিক থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

এদিকে গত কয়েক মাসে, রোহিঙ্গা অধিকারকর্মীরা অভিযোগ করেছেন যে, আরাকান আর্মি তাদের অভিযানে রোহিঙ্গাদেরও লক্ষ্যবস্তু করেছে। উত্তরাঞ্চলীয় রাখাইন এলাকায় হামলা চালানোর সময় রোহিঙ্গারা নির্যাতনের শিকার হচ্ছে, যার ফলে অনেক রোহিঙ্গা পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে এবং বাংলাদেশে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

তালাবদ্ধ দোকানে মিলল স্ত্রীর মরদেহ, পালিয়েছে স্বামী

ইসরায়েল-হামাসের যুদ্ধবিরতি কার্যকর, বন্দি বিনিময় শুরু

ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন না হলে ভারতীয় আগ্রাসন বাড়বে : এম এ মালিক

আজকে বিশ্ব ব্যর্থতা দিবস

ইলিশ নিয়ে নদীতে ঝাঁপ, ২৪ ঘণ্টা পরও যুবক নিখোঁজ

জয়ের ধারায় ফেরার লক্ষ্যে দক্ষিণ আফ্রিকার মুখোমুখি বাংলাদেশ

ফিক্সিংয়ে জড়িতরা কি আগামী বিপিএল খেলবেন, যা জানা গেল

ট্রেন থেকে যাত্রীর মরদেহ উদ্ধার, শরীরে আঘাতের চিহ্ন

সারা দেশে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের লাগাতার কর্মবিরতি শুরু

মোদিকে নিয়ে চাটুকারিতা, বিপাকে বিক্রান্ত ম্যাসি

১০

দেশীয় অস্ত্র নিয়ে দুপক্ষের ৩ ঘণ্টা সংঘর্ষ, যুবক নিহত

১১

আমরা বাণিজ্যযুদ্ধ চাই না, তবে ভয়ও পাই না : চীন

১২

বিয়ে করতে চান মালাইকা, আছেন প্রস্তাবের অপেক্ষায়

১৩

এনসিএল টি-টোয়েন্টির ফাইনালে কে পেলেন কত টাকার পুরস্কার

১৪

যশোরে কনকা, গ্রি ও হাইকো ব্র্যান্ডের ডিসপ্লে সেন্টার উদ্বোধন

১৫

ঘুম থেকে উঠেই কফি ডেকে আনছে যেসব বিপদ

১৬

কুয়াশা আর শিশিরে হেমন্তেই শীতের হাতছানি

১৭

আসছে একাধিক শৈত্যপ্রবাহ

১৮

ভিটামিন ট্যাবলেট কখন ও কীভাবে খাবেন

১৯

সুন্দরবনে ফুট ট্রেইলে ঘুরছে বাঘ

২০
X