জরাজীর্ণ নৌকায় করে প্রায় ৪০০ রোহিঙ্গা ইন্দোনেশিয়ায় গেছেন। রোববার (১০ ডিসেম্বর) ভোরে দেশটির আচেহ প্রদেশে এসব রোহিঙ্গা আসেন। প্রাদেশিক জেলে সম্প্রদায়ের প্রধানের বরাতে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
সম্প্রতি মিয়ানমার থেকে ইন্দোনেশিয়ায় নির্যাতিত সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের আগমন বেশ বৃদ্ধি পেয়েছে। আজকের এই আগমনের আগে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর জানিয়েছিল, গত নভেম্বর থেকে ১২০০ রোহিঙ্গা নাগরিক মিয়ানমার থেকে ইন্দোনেশিয়ার উপকূলে অবতরণ করেছেন।
আচেহ প্রদেশের জেলে সম্প্রদায়ের প্রধান মিফতাহ কাট আদে বলেছেন, রোববার ভোরে রোহিঙ্গাদের দুটি নৌকা তাদের প্রদেশে এসেছে। এদের একটি পিডি ও অন্যটি আচেহ বেসার জেলায় নোঙর করেছে। প্রতিটি নৌকায় প্রায় ২০০ রোহিঙ্গা ছিলেন।
স্থানীয় সামরিক কর্মকর্তা অ্যান্ডি সুসান্তো বলেছেন, ভোর ৪টায় প্রায় ১৮০ জন রোহিঙ্গা পিডিতে এসেছেন। রোহিঙ্গাবাহী দ্বিতীয় নৌকার বিষয়ে অবগত বলেও জানান তিনি। তবে এটি কোথায় নোঙর করেছে বা সেখানে কতজন মানুষ আছে সে সম্পর্কে কোনো তথ্য দিতে পারেননি তিনি।
ইন্দোনেশিয়া ১৯৫১ সালের ইউনাইটেড নেশনস কনভেনশন অন রিফিউজির স্বাক্ষরকারী দেশ নয়। তবে আশ্রয়ের আশায় যেসব শরণার্থী তাদের উপকূলে এসেছে তাদের আশ্রয় দেওয়ার ইতিহাস রয়েছে দেশটির।
কিন্তু সম্প্রতি অধিক হারে শরণার্থী আসায় তা নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে সমালোচনা হচ্ছে। এমনকি আচেহ প্রদেশ থেকে অনেককে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
বছরের পর বছর ধরে বৌদ্ধ-সংখ্যাগরিষ্ঠ মিয়ানমার ছেড়ে অন্যান্য দেশে আশ্রয় নিয়ে আসছে রোহিঙ্গারা। মিয়ানমারে তাদের বিদেশি হিসেবে দেখা হয় এবং বর্তমানে তাদের কোনো নাগরিক অধিকার নেই।
২০১৭ সালের আগস্টে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর হত্যা, ধর্ষণ ও অগ্নিসংযোগ থেকে বাঁচতে প্রায় সাড়ে ৭ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসে। সব মিলিয়ে বাংলাদেশে ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছে। মিয়ানমার সেনাবাহিনীর এই নৃশংসতাকে গণহত্যা আখ্যা দিয়ে ২০১৯ সালের ১১ নভেম্বর আইসিজেতে মামলা করে আফ্রিকার দেশ গাম্বিয়া।
মন্তব্য করুন