চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে বহিঃসীমান্ত দিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) দেশগুলোতে পৌঁছানো অভিবাসনপ্রত্যাশীদের তালিকায় শীর্ষে রয়েছেন বাংলাদেশিরা। ইইউ সীমান্ত সুরক্ষা সংস্থা ফ্রন্টেক্সের সর্বশেষ প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে।
ফ্রন্টেক্স জানায়, ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত সময়কালে ইউরোপে প্রবেশ করেছেন প্রায় ৭৫ হাজার ৯০০ জন অভিবাসনপ্রত্যাশী। তাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বাংলাদেশি নাগরিক। এরপর রয়েছে ইরত্রিয়া, মিশর ও আফগানিস্তানের নাগরিকদের অবস্থান।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মধ্য ভূমধ্যসাগরীয় রুটে ২৯ হাজার ৩০০ অভিবাসনপ্রত্যাশী এসেছেন। এ সংখ্যা গত বছরের তুলনায় ১২ শতাংশ বেশি। লিবিয়া এখনো এই রুটের প্রধান ট্রানজিট দেশ। এ বছর লিবিয়ার উপকূল থেকে ২০ হাজার ৮০০ অভিবাসী ইতালিতে পৌঁছেছেন, যা গত বছরের তুলনায় ৮০ শতাংশ বেশি।
পূর্ব ভূমধ্যসাগরীয় রুটে অভিবাসী পৌঁছানোর হার ২৫ শতাংশ কমে ১৯ হাজার ৬০০ জনে নেমেছে। তবে, লিবিয়ার উপকূল থেকে গ্রিক দ্বীপ ক্রিট পর্যন্ত নতুন পথ তৈরির কারণে সাম্প্রতিক মাসগুলোতে এই রুটে অভিবাসী সংখ্যা বেড়েছে।
পশ্চিম ভূমধ্যসাগরীয় রুটে অভিবাসীর সংখ্যা ১৯ শতাংশ বেড়েছে। জুন মাসে গত বছরের তুলনায় এই রুটে দ্বিগুণ অভিবাসী পৌঁছেছেন। আলজেরিয়া এই রুটের প্রধান ট্রানজিট দেশ।
পশ্চিম আফ্রিকান রুটে অভিবাসীর হার ৪১ শতাংশ কমে ১১ হাজার ৩১৭ জনে নেমেছে। জুন মাসে এই রুটে মাত্র ৩০০ অভিবাসী এসেছেন।
ইতালির সরকারি তথ্য অনুযায়ীও বাংলাদেশিরাই এ বছর দেশটিতে প্রবেশকারী অভিবাসীদের মধ্যে শীর্ষে রয়েছেন। জানুয়ারি থেকে ১০ জুলাই পর্যন্ত ইতালিতে পৌঁছেছেন ১০ হাজার ৩১১ বাংলাদেশি, যা মোট আগমনের ৩২ শতাংশ। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ইরিত্রিয়ার নাগরিকরা। দেশটি থেকে মোট ৪ হাজার ৪৬১ জন অভিবাসী এসেছেন এবং তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে মিশর। দেশটি থেকে মোট অভিবাসী এসেছেন ৩ হাজার ৭২৩ জন।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, পূর্ব ভূমধ্যসাগর, পশ্চিম বলকান ও পশ্চিম আফ্রিকান রুট দিয়ে অভিবাসন কমেছে। পূর্ব ভূমধ্যসাগরীয় রুটে প্রবেশকারীর সংখ্যা ২৫ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ১৯ হাজার ৬০০ জনে। তবে লিবিয়া থেকে গ্রিক দ্বীপ ক্রিটের দিকে নতুন রুট তৈরির কারণে সাম্প্রতিক মাসগুলোতে এই পথে আগমন কিছুটা বেড়েছে।
ফ্রন্টেক্স জানিয়েছে, ইউরোপীয় দেশগুলোর সঙ্গে ট্রানজিট দেশগুলোর সমন্বিত পদক্ষেপের কারণেই কিছু রুটে অভিবাসন প্রবণতা কমেছে। তবে সেন্ট্রাল ভূমধ্যসাগর এখনো সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অভিবাসন রুট হিসেবে বিবেচিত।
আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) জানিয়েছে, ২০২৫ সালের প্রথম ছয় মাসে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৭৬০ জন মানুষ।
মন্তব্য করুন