ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ আবারও রাশিয়ার ভয়াবহ হামলার মুখে পড়েছে। রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর) মধ্যরাত থেকে শুরু হওয়া ড্রোন ও মিসাইল হামলা ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে অব্যাহত ছিল। সংবাদমাধ্যম রয়টার্স জানিয়েছে, ২০২২ সালে পূর্ণমাত্রার যুদ্ধ শুরুর পর থেকে এবারই রাজধানী ও এর আশপাশে সবচেয়ে বড় আক্রমণ চালিয়েছে রুশ সেনারা।
কিয়েভের সামরিক প্রশাসনের প্রধান তাইমুর তাকাচেঙ্কো জানিয়েছেন, এ হামলায় অন্তত তিনজন নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন আরও ১০ জন। আহতদের মধ্যে ১২ বছরের এক কিশোরীর অবস্থাও গুরুতর। যদিও শিশুটির মৃত্যুর খবর সরকারিভাবে নিশ্চিত করা হয়নি।
ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্দ্রিল সাইবিহা একে ‘বড় হামলা’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তার ভাষায়, ‘রাশিয়া শত শত ড্রোন ও মিসাইল ব্যবহার করেছে। পুতিন ও তার সরকারকে বুঝতে হবে, যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার মূল্য তাদেরই দিতে হবে। শাস্তিমূলক নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমেই এ আগ্রাসন থামানো সম্ভব।
রাজধানী ছাড়াও দক্ষিণাঞ্চলীয় জাপোরিঝিয়া অঞ্চলকে লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়েছে। সেখানে অন্তত ১৬ জন আহত হয়েছেন এবং বহু ভবন মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।
রোববার ভোরে কিয়েভের আকাশে অসংখ্য ড্রোন ঘুরে বেড়াতে দেখা যায়। সেগুলো ভূপাতিত করতে ইউক্রেনীয় সেনারা বারবার প্রতিরক্ষা মিসাইল ছোড়ে। শহরজুড়ে বিস্ফোরণ ও মিসাইল প্রতিরোধের শব্দে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, সকাল ৯টা ১৫ মিনিট পর্যন্ত হামলা চলতে থাকে।
কিয়েভের মেয়র ভিতালি ক্লিচকো জানিয়েছেন, রুশ হামলায় একটি কার্ডিওলজি হাসপাতালে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এতে চিকিৎসা কার্যক্রম ব্যাহত হয় এবং রোগীদের অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়।
ক্রমবর্ধমান হামলার মুখে জীবন বাঁচাতে বহু বাসিন্দা ভূগর্ভস্থ মেট্রো স্টেশনগুলোতে আশ্রয় নিয়েছেন। সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ও অনিশ্চয়তা বাড়ছে, আর কর্তৃপক্ষ বলছে—এ হামলা রাশিয়ার যুদ্ধ কৌশলের আরেকটি ভয়াবহ দৃষ্টান্ত।
মন্তব্য করুন