মধ্যপ্রাচ্য ও ইসলামিক দেশগুলো ফিলিস্তিনিকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিলেও ইউরোপের বেশিরভাগ দেশ এখনো এই পথে এগোয়নি। এবার সেই অচলায়তন ভেঙে ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দিতে যাচ্ছে ইউরোপীয় দেশ স্পেন।
দেশটির প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ জানিয়েছেন, আগামী জুলাই মাসের মধ্যে ফিলিস্তিনিকে স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দেবে তার দেশ। নিজের সঙ্গে জর্ডান সফরে যাওয়া সাংবাদিকদের মঙ্গলবার এ কথা জানান স্প্যানিশ প্রধানমন্ত্রী।
ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দিতে ইউরোপের অন্যান্য দেশগুলোকেও রাজি করানোর চেষ্টা করছে স্পেন। ইতিমধ্যে স্লোভেনিয়া, মাল্টা এবং আয়ারল্যান্ড এতে সম্মতি জানিয়েছে।
গত সপ্তাহে এ চারটি দেশ একটি যৌথ বিবৃতি দেয়। এতে তারা জানায়, যখন উপযুক্ত সময় আসবে, তখনই ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দেওয়া হবে।
স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম এল পেইস জানিয়েছে, স্পেনের প্রধানমন্ত্রীর বিশ্বাস- তারা যখন ফিলিস্তিনকে স্বাধীন দেশের স্বীকৃতি দেবেন, তখন ইউরোপের অন্যান্য দেশগুলোও তাদের দেখানো পথে এগোবে।
মূলত গাজায় চলমান যুদ্ধ বন্ধ এবং আগামী নভেম্বরে হতে যাওয়া যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে স্বীকৃতি দেওয়ার বিষয়টি গতি পেতে পারে। নভেম্বরের নির্বাচন শেষে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে আবারও ডোনাল্ড ট্রাম্পকে দেখা যেতে পারে।
ইউরোপের চারটি দেশের ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে ইসরায়েল। তারা বলেছে, এই মুহূর্তে ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়া মানে সশস্ত্র গোষ্ঠীদের পুরস্কৃত করা।
এদিকে, চলতি মাসেই জাতিসংঘের পূর্ণ সদস্য হতে চাইছে ফিলিস্তিন। ২০১১ সালে সংস্থাটির পূর্ণ সদস্যপদ পেতে আবেদন করেছিল দেশটি। সেই আবেদন এখনো পড়ে আছে।
কোনো দেশকে জাতিসংঘের পূর্ণ সদস্য পদ পেতে হলে অবশ্যই নিরাপত্তা পরিষদের ছাড়পত্র প্রয়োজন হয়। ছাড়পত্র পাওয়ার পর বিষয়টি উঠবে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে। ১৯৩ সদস্য বিশিষ্ট এই পরিষদের কমপক্ষে দুই-তৃতীয়াংশ ভোট দিলেই তবে ওই দেশটি জাতিসংঘে প্রবেশ করতে পারবে।
তবে শঙ্কা রয়েছে এ প্রক্রিয়ার যেকোনো পর্যায়ে ভেটো দিতে পারে ইসরায়েলের প্রধান মিত্র যুক্তরাষ্ট্র। যদিও গাজা যুদ্ধ নিয়ে সম্প্রতি ইসরায়েলের সঙ্গে তিক্ত সম্পর্কে জড়িয়েছে দেশটি।
এমনকি দীর্ঘদিনের প্রথা ভেঙ্গে নিরাপত্তা পরিষদে ইসরায়েলবিরোধী প্রস্তাবেও ভোটো দেয়নি ওয়াশিংটন। ফলে ফিলিস্তিনের সদস্যপদ নিয়ে কিছুটা আশার আলো দেখছেন বিশ্লেষকরা।
মন্তব্য করুন