কথায় কথায় ক্ষেপণাস্ত্র ছুঁড়তে রীতিমতো এক্সপার্ট উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন। তাই উত্তর কোরিয়াকে জমের মতো ভয় পায় যুক্তরাষ্ট্র। সেই উত্তর কোরিয়ার সঙ্গেই গেল কয়েক বছর ধরে রাশিয়ার মাখামাখি বেড়েছে।
ইউক্রেন যুদ্ধ দুই দেশের মধ্যে বন্ধুত্বের এক নতুন দিগন্তের সূচনা করেছে। রাশিয়া যখন চোখে অন্ধকার দেখছিল তখনই হঠাৎ করে অস্ত্র দিয়ে মস্কোর সাহায্যে এগিয়ে আসে পিয়ংইয়ং।
সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প উত্তর কোরিয়ার নেতা কিমের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু সেই প্রচেষ্টা খুব একটা সফল হয়নি।
তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে প্রতিবেশী রাশিয়ার সঙ্গে নিজে থেকেই সম্পর্ক উন্নয়নের চেষ্টা করছে উত্তর কোরিয়া। রাশিয়াও তার প্রতিবেশীকে খালি হাতে ফিরিয়ে দেয়নি। কেননা ‘স্বার্থের’ এই সম্পর্কে লাভবান হয়েছে দুই দেশই।
এবার বন্ধুর বাড়ি অতিথি হয়ে যাচ্ছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। দুই দিনের এই সফর ঘিরে পশ্চিমাদের মনে আগ্রহ ও উদ্বেগের তৈরি হয়েছে। কেননা দুই দশকের বেশি সময় পর উত্তর কোরিয়া সফরে যাচ্ছেন পুতিন।
পশ্চিমা গণমাধ্যম বলছে, ২০২২ সালে ইউক্রেন পুরো মাত্রায় হামলা চালানোর পর এটি পুতিনের বিরল বিদেশ সফর। উত্তর কোরিয়ার জন্যও এই সফর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কেননা কোভিড-১৯’র পর এই প্রথম কোনো দেশের রাষ্ট্রপ্রধান পিয়ংইয়ং যাচ্ছেন।
পশ্চিমা বিরোধী মনোভাব আর ইউক্রেন যুদ্ধ দেশ দুটিকে কাছে এনেছে। পুতিনের এই সফর দুই দেশের সম্পর্ককে আরও মজবুত করবে এমনটাই বিশ্বাস বিশ্লেষকদের।
তাই এই সফরে তীক্ষ্ণ চোখ রাখছে পর্যবেক্ষকরা। কিমের দেশ থেকে ভিয়েতনামে যাবেন পুতিন। সেখানেই দুই দিন সফর করবেন রুশ প্রেসিডেন্ট। বলা হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্রকে খেপিয়ে তুলতে কমিউনিস্ট শাসিত দেশটি সফর করবেন পুতিন।
সাম্প্রতিক মাসগুলোতে উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ তুলেছে যুক্তরাষ্ট্র, দক্ষিণ কোরিয়া ও অন্যান্য দেশ। তাদের অভিযোগ, রাশিয়াকে তার যুদ্ধ প্রচেষ্টায় গুরুত্বপূর্ণ সামরিক সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে উত্তর কোরিয়া। মস্কোর বিরুদ্ধেও অভিযোগ আছে পশ্চিমাদের।
তাদের দাবি, উত্তর কোরিয়ার সামরিক স্যাটেলাইট কর্মসূচিতে সহায়তার মাধ্যমে রাশিয়াও হয়ত আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘন করছে। যদিও দুই দেশই অস্ত্র রপ্তানির বিষয়টি অস্বীকার করেছে।
গেল সেপ্টেম্বরে নিজের সাঁজোয়া ট্রেনে করে রাশিয়ায় সফরে গিয়েছিলেন উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম। তবে পথিমধ্যে ফাইটার জেট তৈরির একটি কারখানা এবং একটি রকেট লঞ্চ ফ্যাসিলিটিতে গিয়েছিলেন তিনি। সেই সফরের পাল্টা এবার উত্তর কোরিয়া যাচ্ছেন পুতিন। রাষ্ট্রীয় এই সফরের আগে ক্রেমলিন জানিয়েছে, উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে সম্ভাব্য সব খাতেই সম্পর্ক উন্নয়নের আশা রাখে রাশিয়া।
মন্তব্য করুন