কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ১৫ মার্চ ২০২৫, ০৯:৪০ পিএম
আপডেট : ১৫ মার্চ ২০২৫, ১১:৪৮ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

শিক্ষকদের বেত ব্যবহারের অনুমতি দিল কেরালা হাইকোর্ট

প্রতীকী ছবি। সংগৃহীত
প্রতীকী ছবি। সংগৃহীত

শিক্ষকদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বেত বহনের অনুমতি দেওয়ার পক্ষে রায় দিয়েছে ভারতের দক্ষিণের কেরালা রাজ্যের হাইকোর্ট। আদালত জানিয়েছে, শিক্ষকের হাতে বেত থাকলে সেটি শিক্ষার্থীদের মধ্যে মনস্তাত্ত্বিক প্রভাব ফেলবে এবং তাদের সামাজিক অপরাধ থেকে দূরে রাখবে।

একই সঙ্গে আদালত রায়ে স্পষ্ট করেছে, এটি ব্যবহার করা বাধ্যতামূলক নয়, বরং এটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শৃঙ্খলা ও নিয়মানুবর্তিতা বজায় রাখতে সাহায্য করবে।

শনিবার (১৫ মার্চ) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য নিউ ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এই রায়ের তথ্য জানা যায়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, শিক্ষকদের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থী বা অভিভাবকদের অভিযোগ উঠলে পুলিশকে প্রথমে একটি প্রাথমিক তদন্ত করতে হবে। সেই তদন্ত শেষ হওয়ার আগে কোনো শিক্ষকের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা নেওয়া বা তাকে গ্রেপ্তার করা যাবে না।

সম্প্রতি কেরালার এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে ষষ্ঠ শ্রেণির এক শিক্ষার্থীকে মারধরের অভিযোগ ওঠে। শিক্ষার্থীর অভিভাবকরা থানায় অভিযোগ করলে মামলাটি হাইকোর্ট পর্যন্ত গড়ায়। ওই মামলায় অভিযুক্ত শিক্ষকের আগাম জামিন মঞ্জুর করে আদালত বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শৃঙ্খলা বজায় রাখতে শিক্ষকদের ছোটখাটো শাস্তি দেওয়ার অধিকার থাকা উচিত।

বিচারপতি পিভি কুন্নিকৃষ্ণন মামলাটি শুনানির সময় বর্তমান প্রেক্ষাপটের দিকে ইঙ্গিত করে বলেন, বর্তমানে শিক্ষার্থীদের মধ্যে অপরাধপ্রবণতা বাড়ছে। তারা শিক্ষকদের হুমকি দিচ্ছে, শারীরিক আক্রমণ করছে এবং অনেক ক্ষেত্রে শিক্ষকদের ঘেরাও করছে। এমনকি শিক্ষার্থীদের মধ্যে অস্ত্র, মাদক ও মদ নেওয়ার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। এই পরিস্থিতি খুবই উদ্বেগজনক।

তিনি আরও বলেন, একজন শিক্ষক যদি বেত সঙ্গে রাখেন, তাহলে সেটি ব্যবহারের জন্য নয়, বরং এটি শিক্ষার্থীদের জন্য একটি প্রতীকী সতর্কতা হয়ে থাকবে। এটি তাদের মনে করবে যে শিক্ষক আছেন, শৃঙ্খলা বজায় রাখতে হবে।

কেরালা হাইকোর্টের মতে, শিক্ষকদের সম্মান ও মর্যাদা রক্ষা করা জরুরি। বিচারপতি কুন্নিকৃষ্ণন বলেন, শিক্ষকরা আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের গাইড। তাদের মনোবল ভেঙে দেওয়া উচিত নয়। শিক্ষার্থীদের শৃঙ্খলা ও আচরণ নিয়ন্ত্রণের জন্য শিক্ষকদের কিছু স্বাধীনতা দেওয়া প্রয়োজন।

তিনি আরও বলেন, শিক্ষকদের বিরুদ্ধে অহেতুক অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করার প্রবণতা বাড়ছে। কিছু শিক্ষার্থী বা অভিভাবক অভিযোগ করেন যে শিক্ষক চিমটি কেটেছেন, রাগী চোখে তাকিয়েছেন বা সামান্য শাস্তি দিয়েছেন। এসব ক্ষেত্রে পুলিশকে অবশ্যই অভিযোগের সত্যতা যাচাই করতে হবে এবং সরাসরি মামলা নেওয়া উচিত নয়।

উল্লেখ্য, কেরালা হাইকোর্টের এই রায় শিক্ষাক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত হিসেবে দেখা হচ্ছে। আদালত শিক্ষকদের হাতে বেত রাখার অনুমতি দিয়েছে, যাতে শিক্ষার্থীরা শৃঙ্খলা রক্ষা করে এবং শিক্ষকদের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকে।

তবে, এটি শুধু একটি প্রতীকী ব্যবস্থা, যা শিক্ষার্থীদের মনে নিয়মানুবর্তিতার গুরুত্ব তুলে ধরবে। আদালতের এই রায় শিক্ষাক্ষেত্রে কীভাবে প্রভাব ফেলবে, সেটি সময়ই বলে দেবে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

নিখোঁজের তিন দিন পর হাত-পা বাঁধা অটোচালকের মরদেহ উদ্ধার

কাশ্মীরে ফিরল ১৫০ বছরের পুরোনো ঐতিহ্য

এক ম্যাচ খেলতে ১৪৬ কোটি টাকা পাচ্ছে আর্জেন্টিনা!

জান্নাতে স্বামী-স্ত্রী কি একসঙ্গে থাকবেন, একজন জাহান্নামে গেলে অপরজনের কী হবে?

জুলাই সনদ বাস্তবায়নে রাজনৈতিক দলগুলোকে যে আহ্বান জানালেন ডাকসু ভিপি

কুয়াকাটায় ধরা পড়ল বিষাক্ত ‘লায়নফিশ’

বাংলাদেশ অ্যাচিভার্স অ্যাওয়ার্ড পেলেন হাবিবুর রহমান পলাশ

পা পিছলে পড়ে গেলেন ট্রেনের নিচে, অতঃপর...

নয়নের মানহানি, এনসিপি নেতা নাসীরুদ্দীনের বিরুদ্ধে মামলা

আইএসইউ ও মালয়েশিয়ার আইএনটিআই ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর

১০

যাদের বিরুদ্ধে মামলা করলেন ঢাবি শিক্ষিকা মোনামী

১১

জেলবন্দি আসামিরাও এবার ভোট দিতে পারবেন

১২

দুই মাস পর চবি শিক্ষার্থী মামুনের মাথায় বসল খুলি

১৩

সাহসী কমেডি আর কঠিন বিষয় নিয়ে আসছেন বিপ্র-শাদিদ

১৪

ভারতে গেইল-থিসারা পেরেরাদের হোটেলে রেখে পালিয়ে গেছে আয়োজকরা

১৫

নিম্নচাপের প্রভাবে আমনের ক্ষতি ‎

১৬

স্বামীর মৃত্যুর শোক শেষ না হতেই স্ত্রীর মৃত্যু

১৭

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ, তীব্র যানজট

১৮

নির্বাচনে প্রবাসী বাংলাদেশিরা ভোট দেবেন যেভাবে

১৯

মামলা করলেন ঢাবি শিক্ষিকা মোনামী

২০
X