ভারতের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক ও শিল্প নগরী আহমেদাবাদ থেকে লন্ডনের উদ্দেশে উড্ডয়ন করার বিধ্বস্ত হয় আধুনিক প্রযুক্তির বোয়িং ৭৮৭ ড্রিমলাইনার এআই১৭১ ফ্লাইট। এখন পর্যন্ত এয়ার ইন্ডিয়ার এই বিমান দুর্ঘটনায় ২ শতাধিক নিহত হয়েছে।
সেই বিমানের যাত্রী ছিলেন ভূমি চৌহান নামে এক নারী। বিমানবন্দরে পৌঁছাতে ১০ মিনিট দেরি হয়েছিল তার। ভাগ্যের জোরে মৃত্যুর মুখ থেকে বেঁচে ফিরেছেন তিনি।
ভূমি অনাবাসী ভারতীয়। থাকেন ব্রিটেনের ব্রিস্টলে। তার স্বামীও সেখানেই থাকেন। ছুটি কাটাতে দেশে এসেছিলেন। বৃহস্পতিবারের (১২ জুন) এই ফ্লাইটে আবার ব্রিটেনে ফেরার কথা ছিল তার। তবে ১০ মিনিট দেরি হওয়ার কারণে বিমান দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পান তিনি।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে ভূমি চৌহান বলেন, ‘আমার পুরো শরীর এখনো কাঁপছে!’
ভূমি জানান, বিমানবন্দরে যাওয়ার পথে অহমদাবাদের যানজটে ফেঁসে গিয়েছিলেন তিনি। ওই যানজটের কারণেই এ যাত্রায় তিনি রক্ষা পেয়েছেন। দুর্ঘটনার খবর পাওয়ার পরে সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত ভূমি।
তিনি বলেন, ‘আমি ঈশ্বরের কাছে কৃতজ্ঞ। আমার ঈশ্বরই আমাকে বাঁচিয়েছেন।’
বিমানে উঠতে না পেরে বিমানবন্দর ছেড়ে গুজরাটের বাড়িতে ফিরে আসেন ভূমি। বেলা দেড়টা নাগাদ বিমানবন্দর ছাড়েন তিনি। দুর্ঘটনার খবর ছড়ানোর পর বিমানবন্দরের কী পরিস্থিতি, তা আর দেখা হয়নি ভূমির। তবে রাস্তায় অনেক পুলিশের গাড়ি দেখেছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার দুপুরে অহমদাবাদ বিমানবন্দর থেকে ব্রিটেনের গ্যাটউইক বিমানবন্দরে উদ্দেশে যাওয়ার পথে ভেঙে পড়ে এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান। বেলা ১টা ৩৮ মিনিটে বিমানবন্দর থেকে রওনা দেওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যে লোকালয়ের মধ্যে ভেঙে পড়ে বিমানটি। মাত্র ৬২৫ ফুট ওপরে ওঠার পরেই গুজরাটের মেঘানিনগরে একটি ছাত্রাবাসের ওপর ভেঙে পড়ে এয়ার ইন্ডিয়ার ওই বিমান। বিমানটিতে মোট ২৪২ জন ছিলেন। তাদের মধ্যে ২৩২ জন যাত্রী এবং ১০ জন ক্রু সদস্য।
সংবাদ সংস্থা এপি সূত্রে খবর, দুর্ঘটনায় সবারই মৃত্যুর আশঙ্কা করা হচ্ছে। সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত শতাধিক দেহ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
বিমান দুর্ঘটনার খবর পাওয়ার পেয়েই অহমদাবাদে হাসপাতালের বাইরে ছুটে এসেছেন যাত্রীদের স্বজনরা। তাদের চোখেমুখে উৎকণ্ঠার ছাপ। প্রিয়জনকে একঝলক দেখার জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে কাকুতি-মিনতি করছেন তারা।
দুর্ঘটনার পরে প্রশাসনকে উদ্ধারকাজে সাহায্যের জন্য প্রায় ১৩০ জন সেনাকর্মীকে অহমদাবাদে মোতায়েন করা হচ্ছে। ভারতীয় সেনার ওই দলের মধ্যে রয়েছে ‘কুইক অ্যাকশন টিম’ (কিউএটি), ডাক্তার এবং অন্য প্রতিনিধিরা। তৈরি রাখা হয়েছে সেনা হাসপাতালও।
সূত্র : আনন্দবাজার
মন্তব্য করুন