ভারতের তামিলনাড়ু রাজ্য সরকার হিন্দি ভাষার ব্যবহার নিষিদ্ধ করার জন্য একটি বিল আনার প্রস্তুতি নিচ্ছে। ক্ষমতাসীন দ্রাবিড়া মুনেত্রা কাজাগাম (ডিএমকে) দলের মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্ট্যালিন চলমান রাজ্য বিধানসভার অধিবেশনের শেষ দিনে আইনটি উপস্থাপন করতে পারেন বলে জানা গেছে।- খবর দ্য ইকোনমিক টাইমস
প্রস্তাবিত এই আইনের লক্ষ্য হলো তামিলনাড়ুজুড়ে হিন্দি ভাষার হোর্ডিং, সাইনবোর্ড ও চলচ্চিত্র নিষিদ্ধ করা।
ডিএমকের জ্যেষ্ঠ নেতা টি কে এস এলানগোভন বলেন, ‘আমরা সংবিধানের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নেব না। আমরা সংবিধানের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তবে হিন্দি চাপিয়ে দেওয়ার যে প্রবণতা, আমরা সেটার বিরোধী।’
অন্যদিকে, বিজেপি নেতা বিনোজ সেলভম বিলটিকে ‘বোকামি ও হাস্যকর’ বলে আখ্যায়িত করেছেন। তিনি বলেন, ‘ভাষাকে রাজনৈতিক হাতিয়ার বানানো উচিত নয়। এ ধরনের পদক্ষেপ রাজ্যের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করবে।’
সেলভমের অভিযোগ, তিরুপরমকুন্দ্রম, করুর তদন্ত ও আর্মস্ট্রং ইস্যুসহ সম্প্রতি কয়েকটি মামলায় আদালতে বিপর্যয়ের মুখোমুখি ক্ষমতাসীন দল ডিএমকে। তাই এসব ইস্যু থেকে মনোযোগ সরাতে ভাষা বিতর্ক সামনে নিয়ে আসা হয়েছে।
এর আগে, চলতি বছরের শুরুতে রাজ্য সরকার রাজ্যের বাজেট নথিতে ব্যবহৃত ভারতীয় রুপি প্রতীকের (₹) জায়গায় তামিল অক্ষর ‘ரு’ (রু) ব্যবহার শুরু করে।
রাজ্য সরকার জানায়, এর মাধ্যমে সরকারি কাজে তামিল ভাষার ব্যবহার জোরদার করা হচ্ছে। তবে এই পদক্ষেপ নতুন করে বিতর্ক সৃষ্টি করেছে।
তবে শাসক দল ডিএমকের দীর্ঘদিনের অভিযোগ, কেন্দ্রীয় সরকার হিন্দি ভাষা চাপিয়ে দিচ্ছে।
মুখ্যমন্ত্রী স্ট্যালিন একাধিকবার বলেছেন, ডিএমকে হিন্দি ভাষার বিরুদ্ধে নয়। তবে রাজ্যের মানুষের ওপর জোর করে হিন্দি চাপিয়ে দেওয়ার যে কোনো প্রয়াসের বিরোধিতা করবে।
তার ভাষায়, ‘তামিলদের ওপর হিন্দি চাপিয়ে দেওয়া মানে তাদের আত্মসম্মানে আঘাত করা।’
স্ট্যালিন অভিযোগ করেছেন, জাতীয় শিক্ষানীতির (এনইপি) প্রস্তাবিত তিন ভাষার সূত্রের মাধ্যমে বিজেপি নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকার ‘প্রথমে হিন্দি, পরে সংস্কৃত’ চাপিয়ে দিতে চাইছে।
তিনি বলেন, তামিলনাড়ুর দুই ভাষার নীতিতে (তামিল ও ইংরেজি) চলবে। যা রাজ্যের শিক্ষা, দক্ষতা উন্নয়ন এবং কর্মসংস্থানে সাফল্যের অন্যতম কারণ।
স্ট্যালিন আরও বলেন, কেন্দ্রীয় সরকারের যে নীতি ভাষাগত বৈচিত্র্য নষ্ট করছে, তার বিরুদ্ধে ডিএমকে প্রতিটি পদক্ষেপে প্রতিরোধ গড়ে তুলবে। তিনি প্রতিশ্রুতি দেন, তামিল ভাষা ও রাজ্যের সাংস্কৃতিক পরিচয় রক্ষায় কোনো ত্রুটি থাকবে না।
ডিএমকে অভিযোগ করেছে, বিজেপি নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকার এনইপির মাধ্যমে হিন্দি চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে। যদিও কেন্দ্রীয় সরকার এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
মন্তব্য করুন