দীর্ঘদিনের শারীরিক সম্পর্ক ছিন্ন হলে তা ধর্ষণ নয় বলে পর্যবেক্ষণ জানিয়েছে ভারতের এলাহাবাদ হাইকোর্ট। এ সময় আদালতের বিচারক জানান, দীর্ঘ শারীরিক সম্পর্কের পরও কেউ যদি বিয়ে করতে অসম্মত হন বা শারীরিক সম্পর্ক ছিন্ন করেন, তা ধর্ষণ বল বিবেচিত হবে না। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এই সময়ের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওই মামলায় প্রেমিকার সম্মতিতে প্রেমিকের সঙ্গে দীর্ঘদিনের শারীরিক সম্পর্ক ছিল। বিয়ের প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিলেন প্রেমিক। তাদের দুইজনের পরিবারও এই শারীরিক সম্পর্কের কথা জানত। যদিও পরে এ সম্পর্ক ভেঙে যায় এবং বিয়ে করতেও অস্বীকার করেন ওই প্রেমিক। এতে আদালতে দ্বারস্থ হন প্রেমিকা। আর সে মামলার পর্যবেক্ষণে আদালত এমনটি জানিয়েছে।
মামলার বিচারক অনীশ কুমার গুপ্তা জানিয়েছেন, ১৫ বছরের বেশি সময় ধরে পরিচিত ছিলেন প্রেমিক-প্রেমিকা। এমনকি ৮ বছরের বেশি সময় ছিল তাদের মধ্যকার এমন সম্পর্ক। তিনি প্রেমিকার আবেদন খারিজ করে দেন।
তিনি জানান, দীর্ঘ শারীরিক সম্পর্কের পরও কেউ যদি বিয়ে করতে অসম্মত হন তাহলে তা ধর্ষণ বল বিবেচিত হবে না। ওই ব্যক্তির প্রতিশ্রুতি অনুসারে তার প্রেমিকাকে বিয়ে করতে অস্বীকার করার পর এফআইআরটি নথিভুক্ত করা হয়েছিল। এখানে এটা স্পষ্ট যে, তার বিয়ের প্রতিশ্রুতি মিথ্যা ছিল না। কিন্তু পরবর্তী ঘটনাবলির কারণে, প্রেমিক ভুক্তভোগীকে বিয়ে করতে অস্বীকার করেন।
এর আগে গত আগস্ট মাসে ধর্ষণ সংক্রান্ত অনুরূপ একটি রায় দিয়েছিল কর্নাটক হাইকোর্ট। ওই মামলায় বলা হয়, ২০১৯ সাল থেকে প্রেমিক -প্রেমিকার মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক ছিল। তারা উভয়ের সম্মতিতে এমন সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন। এ মামলায় বিচারপতি এম নাগাপ্রসন্ন তার পর্যবেক্ষণে জানান, এই ধরনের সম্পর্ককে কখনই ধর্ষণ বলা যাবে না।
ওই মামলায় ধর্ষণের অভিযোগ করে ওই নারী কর্নাটক হাইকোর্টে দায়ের করেন। পিটিশনে তিনি বলেন, ২০১৩ সালে ফেসবুকের মাধ্যমে তাদের বন্ধুত্ব হয়। ওই নারীর বাড়ির কাছেই থাকতেন ওই যুবক। তিনি ভালো রান্না পারতেন। আর সে অসিলায় প্রায়ই নারীকে নিমন্ত্রণ করতেন তিনি। এরপর একসাথে বিয়ারও খেতেন তারা। পরে তাদের মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক হতো।
পিটিশনে ওই নারী আরও উল্লেখ করেন, প্রায় ৬ বছর ধরে তাদের মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক ছিল। পরে তাকে বিয়ে করতে অস্বীকার করেন ওই যুবক। এ ঘটনায় ওই নারী ধর্ষণের অভিযোগ করে কর্নাটক হাইকোর্টের দ্বারস্থ হলে আদালত এমন পর্যবেক্ষণ জানিয়ে আবেদন খারিজ করে দেয়।
মন্তব্য করুন