বিনোদন প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:৩৫ এএম
আপডেট : ০৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:১৪ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

১৪ বছরের কিশোরের গ্রাফিতিতেই ‘পতন’ বাশারের

সিরিয়ায় কিশোর আঁকা গ্রাফিতি। ছবি : সংগৃহীত
সিরিয়ায় কিশোর আঁকা গ্রাফিতি। ছবি : সংগৃহীত

সিরিয়ায় মাত্র ১২ দিনের মাথায় বাশার আল আসাদ সরকারের ‘পতন’ হয়েছে। তবে এ সরকারের পতনের অন্যতম কারণ রয়েছেন ১৪ বছরের এক কিশোর। ১৩ বছর আগে ২০১১ সালে স্বৈরশাসক বাশার আল আসাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে এক গ্রাফিতি একেছিলেন তিনি। তার সেই গ্রাফিতিতেই বদলে গেছে সিরিয়ার ভাগ্য।

রোববার (০৮ ডিসেম্বর) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সিরিয়ার দক্ষিণাঞ্চলের দারা এলাকার একটি সড়কে গ্রাফিতি একেছিলেন মুয়াবিয়া সায়সানেহ নামের এক কিশোর। গ্রাফিতিতে তিনি স্পে করে লিখেন, ‘এজাক এল দরজা, ইয়া ডাক্তার’। যার অর্থ এবার আপনার পালা ডাক্তার। মূলত প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদকে নিশানা করে এ গ্রাফিতি আঁকেন তিনি।

সিরিয়ার সাবেক এ প্রেসিডেন্ট দামেস্কের ইউনিভার্সিটি থেকে চক্ষুবিজ্ঞানে পড়াশোনা করেছেন। চিকিৎসক হওয়ার ইচ্ছা ছিল তার। এ জন্য লন্ডন থেকে চক্ষুবিজ্ঞানের ওপর উচ্চতর ডিগ্রিও অর্জন করেন তিনি। তবে বড় ভাই সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হলে তিনি বাবার নির্দেশে দেশে ফিরেন। পরে সিরিয়ায় সামরিক বিষয়ে পড়াশোনা করেন তিনি।

এনডিটিভি জানিয়েছে, আসাদকে নিয়ে আকা ওই গ্রাফিতি সিরিয়ার জাতীয় বিদ্রোহের স্মারক হয়ে ওঠে। এর ফলে ২১ শতকের ভয়াবহ গৃহযুদ্ধের সূচনা হয়। এটি আকার কারণে পুলিশি হয়রানির শিকার হন মুয়াবিয়া ও তার বন্ধুরা। গোপনে পুলিশ তাদের ২৬ দিন আটকে রাখে। তাদের ওপর নির্যাতনের কারণে দারার বাসিন্দারা বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। ফলে মুক্তির দাবিতে বাবা-মা, প্রতিবেশী এবং আন্দোলনকারীরা প্রতিবাদ করেন। এ সময় তাদের ওপর টিয়ার গ্যাস ও গুলি ছোড়া হয়।

মুয়াবিয়ার এ ছবি ছড়িয়ে পড়লে জনগণ ঐক্যবদ্ধ হতে থাকে। কেবল দারা নয়, পুরো সিরিয়াতেই বিদ্রোহ ছড়িয়ে পড়ে। ২০১১ সালের ১৫ মার্চ সিরিয়ায় প্রথমবারের মতো ধারাবাহিক আন্দোলন শুরু হয়। পরে তা স্বাধীনতা ও আসাদ শাসনের অবসানের দাবিতে দেশব্যাপী বিক্ষোভে পরিণত হয়। শান্তিপূর্ণ এ বিক্ষোভকে সহিংসতায় পরিণত করে আসাদ বাহিনী। তারা শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের ওপর নির্বিচারে গুলিবর্ষণ করে।

বাবা হাফিজ আল বাশাদের মৃত্যুর পর ২০০০ সালে বাশার আল আসাদের শাসনকাল শুরু হয়। প্রথমে সংস্কারের প্রতিশ্রুতি দিলেও পরবর্তী সময়ে বাবার মতোই কর্তৃত্ববাদী শাসক হয়ে ওঠেন তিনি। বাশার আসাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে মানবাধিকার লঙ্ঘন ও বিরোধীদের ওপর দমন-পীড়নের। এর আগে ২০১১ সালে আরব বসন্ত ঘিরে বাশার আসাদের ক্ষমতার মসনদ নড়ে উঠেছিল।

কিন্তু সে যাত্রায় রাশিয়া ও ইরানের সমর্থনে ক্ষমতায় টিকে গিয়েছিলেন বাশার আসাদ। এবার অবশ্য শেষরক্ষা হয়নি। রাশিয়া ও ইরান আগেই তাদের সামরিক উপস্থিতি কমিয়ে ফেলে। এরপরই হায়াত তাহরির আল শামের নেতৃত্বে বিদ্রোহীদের গ্রুপ মাত্র তিনটি শহর দখল করে নেওয়ার পরই দেশ ছেড়ে পালাতে হয় বাশার আসাদকে। গোপনে প্লেনে চড়ে ছাড়তে হয় মাতৃভূমিও।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

দেশে ফিরেছে তারেক রহমানের প্রিয় বিড়াল জেবু

ফুলের মালা দিয়ে তারেক রহমানকে বরণ করলেন শাশুড়ি 

বিপিএল শুরুর আগের দিন মালিকানা ছাড়ল চট্টগ্রাম রয়্যালস

গণপিটুনিতে সম্রাট নিহত

টঙ্গী ফ্লাইওভার বন্ধ, হেঁটে ৩০০ ফিট যাচ্ছেন বিএনপি নেতাকর্মীরা

তারেক রহমানকে স্বাগত জানালেন সিনিয়র নেতারা

‘দিনশেষে আমি পর্দার মেহরিন হলেও বাস্তবে কেয়া পায়েল’

জনসমুদ্রে পরিণত ঢাকার ৩০০ ফিট এলাকা

অপেক্ষার প্রহর শেষ, ঢাকায় তারেক রহমান

আমি সবকিছু স্তব্ধ হয়ে দেখেছি: শুভশ্রী

১০

মারা গেলেন সেই বিএনপি নেতার আরেক মেয়ে

১১

সিলেট থেকে ঢাকার পথে তারেক রহমান

১২

বিমানবন্দরে লাল-সবুজের বুলেটপ্রুফ বাস 

১৩

কেটি পেরির প্রাক্তন স্বামীর বিরুদ্ধে আরও ২ ধর্ষণের অভিযোগ

১৪

দেশে ফিরে ইতিহাস গড়া চার বিশ্বনেতা

১৫

শাহজালাল বিমানবন্দরে মির্জা ফখরুলসহ স্থায়ী কমিটির সদস্যরা

১৬

তারেক রহমানের সংবর্ধনায় আসার পথে দুর্ঘটনায় আহত ৩২

১৭

তীব্র শীত উপেক্ষা করে জনসমুদ্রে পরিণত ৩০০ ফিট এলাকা

১৮

দেশের ৫৫ বছরের ইতিহাসে আজ অবিস্মরণীয় ঘটনা ঘটতে যাচ্ছে : সালাহউদ্দিন

১৯

যুদ্ধবিরতি সত্ত্বেও আলেপ্পোতে টানটান পরিস্থিতি

২০
X