সিরিয়ায় ইরানের বহুল আকাঙ্ক্ষিত অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তারের পরিকল্পনা ব্যর্থ হয়েছে। দূতাবাস থেকে ফাঁস হওয়া গোপন নথিতে এমনটাই উঠে এসেছে।
শুক্রবার (০২ মে) বার্তাসংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের মার্শাল প্ল্যানের আদলে যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়া পুনর্গঠনের মাধ্যমে দেশটিকে নিজের প্রভাববলয়ে আনার চেষ্টা করেছিল তেহরান। কিন্তু বিদ্রোহীদের হাতে বাশার আল-আসাদের পতনের পর সে পরিকল্পনা ধসে পড়ে।
রয়টার্সের অনুসন্ধানে দেখা যায়, দামেস্কে ইরানি দূতাবাসে লুটপাটের পর সেখান থেকে উদ্ধার হওয়া নথিতে ইরানের ৪০০ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ পরিকল্পনার কথা উল্লেখ রয়েছে। বিদ্রোহীরা আসাদকে ক্ষমতা থেকে উৎখাত করে রাশিয়ায় পালাতে বাধ্য করলে ইরানি কূটনীতিক, ব্যবসায়ী ও প্যারামিলিটারি বাহিনী সিরিয়া ছাড়ে।
প্রকাশিত নথি ও সাক্ষাৎকারে উঠে আসে, প্রায় ৪০টি প্রকল্পে অন্তত ১৭৮ মিলিয়ন ডলারের পাওনা রয়েছে ইরানি কোম্পানিগুলোর। এর মধ্যে একটি ৪১১ মিলিয়ন ইউরোর বিদ্যুৎ প্রকল্প রয়েছে লাতাকিয়ায়। এ প্রকল্পটি এখন পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে। ইউফ্রেটিস তথা ফোরাত নদীর ওপর একটি রেলসেতু মার্কিন বিমান হামলায় ধ্বংস হলেও পুনর্গঠন হয়নি।
ইরানের রেভল্যুশনারি গার্ডসের প্রকৌশলী আব্বাস আকবরির নেতৃত্বে গঠিত ‘সিরিয়া-ইরান অর্থনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়ন সদর দপ্তর’ এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে যুক্ত ছিল। কিন্তু যুদ্ধ, দুর্নীতি, নিষেধাজ্ঞা ও নিরাপত্তাজনিত কারণে প্রকল্পগুলো আটকে যায়।
ইরানি ব্যবসায়ীরা জানান, সিরিয়ায় তাদের বহু পণ্য বন্দরেই আটকে গেছে কিংবা লুট হয়ে গেছে। অনেকেই দাবি করেছেন যে তারা কোনো অর্থই ফেরত পাননি।
বিশ্লেষকরা বলছেন, সিরিয়ায় ইরানের এই ব্যর্থতা শুধু অর্থনৈতিক ক্ষতি নয়, কূটনৈতিকভাবে এক বড় ধাক্কা। আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বী তুরস্ক ও ইসরায়েল এখন শূন্যতা পূরণে উদ্যোগী হয়েছে। এদিকে নতুন সিরীয় সরকারকে এখন জমে থাকা অসমাপ্ত প্রকল্প ও ঋণের চাপ সামলাতে হচ্ছে।
মন্তব্য করুন