ইসরায়েলের রাজধানী তেল আবিবের বেন গুরিয়ান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাছে আঘাত হেনেছে ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীদের ছোড়া একটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র। রোববার সকালে এই হামলার ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ। ইরান-সমর্থিত গোষ্ঠীটির এ হামলায় তেল আবিবের সব ফ্লাইট স্থগিত করা হয়েছে।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, ইসরায়েলের প্রধান বিমানবন্দর হিসেবে পরিচিত বেন গুরিয়ান টার্মিনালের কাছে আঘাত হানা ক্ষেপণাস্ত্রটির বিস্ফোরণে চারজন আহত হয়েছে। এছাড়া আরও দুজন বাংকারে পালানোর সময় আঘাত পেয়েছে।
ঘটনার সময়কার বেশ কিছু ভিডিও ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে, যাতে দেখা যায় তেল আবিবের বিমানবন্দরের কাছাকাছি সড়কে আতঙ্কিত গাড়িচালকেরা যানবাহন থামিয়ে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিচ্ছেন। একপর্যায়ে একটি বস্তু আছড়ে পড়ার পর কালো ধোঁয়ার কুণ্ডলী আকাশে ছড়িয়ে পড়ে। তবে এসব ভিডিও ফুটেজের সত্যতা যাচাই করা সম্ভব হয়নি।
হামলার পর পরই ইসরায়েলের বিভিন্ন শহরে সাইরেন বাজাতে শোনা যায়। এবং বিমান চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়। পরে আবার ফ্লাইট চলাচল শুরু হয়।
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ এ হামলার তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেন, যে আমাদের আঘাত করবে, আমরা তাকে সাতগুণ জবাব দেব।
অন্যদিকে, হুথি সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র ইয়াহিয়া সারি এক টেলিভিশন বিবৃতিতে বলেন, ইসরায়েলের বিমানবন্দর এখন আর নিরাপদ নয়। আমাদের হামলা চলবে যতক্ষণ না গাজায় আগ্রাসন বন্ধ হয়।
ইসরায়েলি বিমানবাহিনী জানিয়েছে, তারা ক্ষেপণাস্ত্রটি থামাতে ব্যর্থ হওয়ার কারণ তদন্ত করছে। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত চিত্রে দেখা যায়, বিস্ফোরণের ফলে ভূমিতে একটি বড় গর্ত তৈরি হয়েছে।
হুথি গোষ্ঠী দীর্ঘদিন ধরে গাজায় হামাসের প্রতি সংহতি জানিয়ে ইসরায়েলের দিকে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করছে, যদিও সাধারণত এসব ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলের আয়রন ডোম প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার কারণে লক্ষ্যভেদ করতে ব্যর্থ হয়।
সম্প্রতি হুথিরা লোহিত সাগরেও আন্তর্জাতিক বাণিজ্যিক জাহাজগুলোর ওপর হামলা বাড়িয়েছে। এর জবাবে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য যৌথভাবে ইয়েমেনে হুথি নিয়ন্ত্রিত স্থানে বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে।
এই সাম্প্রতিক হামলা মধ্যপ্রাচ্যের ক্রমবর্ধমান উত্তেজনা ও অস্থিরতাকে আরও ঘনীভূত করল বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
মন্তব্য করুন