মধ্যপ্রাচ্যের তিন দেশ সফরে গিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার এ সফরে বড় সুখবর পেয়েছে সিরিয়া। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প জানান, সিরিয়ার ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যহারের পরিকল্পনা করছে যুক্তরাষ্ট্র।
বুধবার (১৪ মে) সিএনএনের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মঙ্গলবার ঘোষণা করেছেন যে, গত বছর আসাদ শাসনের পতনের পর সিরিয়ার উপর আরোপিত কঠোর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার পরিকল্পনা করছে তার প্রশাসন। এ পদক্ষেপকে তিনি সিরিয়ার জন্য মহানতার সুযোগ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
ট্রাম্প রিয়াদে একটি সৌদি বিনিয়োগ ফোরামে বলেন, তিনি সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান এবং তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের সঙ্গে আলোচনা করার পর এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সিরিয়ার জনগণ বহু বছর ধরে যুদ্ধ ও ধ্বংসের শিকার হয়েছে। তাই আমার প্রশাসন সিরিয়ার সঙ্গে স্বাভাবিক সম্পর্ক পুনঃপ্রতিষ্ঠার প্রথম পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে নেওয়ার এ সিদ্ধান্ত সিরিয়ার নতুন সরকারের জন্য একটি বড় সাফল্য, যার নেতৃত্বে রয়েছেন আহমেদ আল-শারা। গত ডিসেম্বরে আসাদ শাসনের অবিশ্বাস্য পতনের পর তিনি ক্ষমতা দখল করেন। তবে, এই পদক্ষেপ ইসরায়েলের জন্য একটি ধাক্কা হিসেবে বিবেচিত হতে পারে, যারা আসাদের পতনের পর সিরিয়ায় সামরিক ও ভূখণ্ডগত অগ্রগতি বাড়িয়েছে।
ট্রাম্প জানান, পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এই সপ্তাহের শেষে তুরস্কে সিরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদ আল-শায়বানির সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। এছাড়া, বুধবার রিয়াদে ট্রাম্প আল-শারার সঙ্গে অনানুষ্ঠানিকভাবে সাক্ষাৎ করবেন বলে হোয়াইট হাউসের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন। এটি নতুন সিরিয়ার সরকার এবং ট্রাম্প প্রশাসনের মধ্যে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ পর্যায়ের সংযোগ। যদিও যুক্তরাষ্ট্র এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনঃপ্রতিষ্ঠা বা আল-শারা সরকারকে স্বীকৃতি দেয়নি।
ট্রাম্প বলেন, নিষেধাজ্ঞাগুলো ছিল কঠোর এবং অর্থনীতির জন্য ধ্বংসাত্মক, তবে সেগুলো তখন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। এখন সিরিয়ার উজ্জ্বল হওয়ার সময়। আমি বলি, ‘শুভকামনা, সিরিয়া। আমাদের বিশেষ কিছু দেখান।’
সিরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদ আল-শায়বানি নিষেধাজ্ঞা উঠানোর খবরকে স্বাগত জানিয়ে এক্স-এ পোস্ট করেন, আমরা নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে নেওয়াকে পুনর্গঠনের পথে একটি নতুন সূচনা হিসেবে দেখছি। আমাদের আরব ভাইদের, বিশেষ করে সৌদি আরবের অবস্থানের জন্য ধন্যবাদ, আমরা সিরিয়ার জনগণ ও তাদের ইতিহাসের জন্য উপযুক্ত একটি নতুন অধ্যায় শুরু করছি।
জাতিসংঘের সিরিয়াবিষয়ক বিশেষ দূত গিয়ের পেডারসেনও এই ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা এবং অর্থনীতি পুনরুজ্জীবনের জন্য নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে নেওয়া অত্যন্ত জরুরি।
এর আগে এই বছর যুক্তরাজ্য এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন সিরিয়ার উপর থেকে তাদের কিছু নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছিল, তবে সব নয়।
মন্তব্য করুন