মানবসভ্যতার ইতিহাসে অন্যতম ভয়াবহ গণহত্যা চলছে ফিলিস্তিনের গাজায়। দিন দিন দখলদার ইসরায়েলি বাহিনীর তাণ্ডব বাড়ছে। ফিলিস্তিনিদের হত্যায় ব্যবহৃত হচ্ছে অত্যাধুনিক সব অস্ত্র ও কৌশল। নতুন করে সেই কৌশলে যোগ হয়েছে ‘খাবারের প্রলোভন’।
ক্ষুধার্ত ফিলিস্তিনিদের পক্ষে সেই প্রলোভন এড়ানো সম্ভব হচ্ছে না। সেই সুযোগটিই নিচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। খাবারের আশায় ত্রাণ শিবিরে জড়ো হওয়া গাজাবাসীর ওপর বোমা ফেলে তাদের হত্যা করা হচ্ছে।
গত আট দিনে বিভিন্ন ত্রাণসহায়তা কেন্দ্রে হামলা চালিয়ে অন্তত ১০২ জনকে হত্যা করেছে দখলদাররা। সর্বশেষ মঙ্গলবার রাফাহ শহরে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল পরিচালিত সহায়তা সংস্থা গাজা হিউম্যানিটেরিয়ান ফাউন্ডেশনে (জিএইচএফ) হামলা চালায় তারা। সেখানে ২৭ ফিলিস্তিনি নিহত হন।
গাজার বেসামরিক সুরক্ষা দপ্তরের মুখপাত্র মাহমুদ বাসাল বলেন, ‘রাফার আল আলম এলাকায় মার্কিন প্রতিষ্ঠান থেকে ত্রাণ পেতে আসা বেসামরিক মানুষদের ওপর অমানবিক হামলা চালানো হয়েছে।’
মাহমুদ আরও বলেন, ‘ইসরায়েলি বাহিনী ট্যাঙ্ক ও ড্রোন ব্যবহার করে এলোপাতাড়ি গুলি চালিয়েছে, এতে ব্যাপক হতাহতের ঘটনা ঘটেছে।’ এর আগে রোববার একই স্থানে হামলায় ৩১ জন নিহত ও ১৭৬ জন আহত হয়েছিল, যদিও ইসরায়েল সেই হামলার দায় অস্বীকার করেছে।
গাজা উপত্যকার উদ্ধারকারীদের বরাত দিয়ে এএফপি জানিয়েছে, ভোরবেলা থেকে হাজারো মানুষ ত্রাণ পেতে আল আলম মোড়ের কাছে জড়ো হতে শুরু করেন। সে সময় ইসরায়েলি সেনারা ট্যাঙ্ক ও ড্রোন থেকে গুলি চালাতে থাকে। তখন ত্রাণপ্রত্যাশীরা কোনোভাবে সেনাদের জন্য বিপজ্জনক ছিলেন না।
খাদ্যসহায়তা প্রত্যাশাকারীদের ওপর হামলাকে অযৌক্তিক বলে জাতিসংঘের মানবাধিকার অফিস জানিয়েছে , গাজার বেসামরিক নাগরিকদের খাদ্য ও ত্রাণ পৌঁছানোর পথে বাধা সৃষ্টি করা যুদ্ধাপরাধ। জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার টার্কের মুখপাত্র জেরেমি লরেন্স জেনেভায় সাংবাদিকদের বলেন, আমরা শুনেছি, ত্রাণসহায়তা কেন্দ্রে তিন দিন ধরে ফিলিস্তিনিদের হত্যা করা হচ্ছে। এটি অগ্রহণযোগ্য।
জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস এই ঘটনার ন্যায়বিচার ও নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানিয়েছেন। তিনি বলেন, গাজাবাসী খাবারের জন্য জীবন বিপন্ন করছে, যা একদমই মেনে নেওয়া যায় না।
মন্তব্য করুন