ইয়েমেনের রাজধানী সানার কাছে একটি বিদ্যুৎকেন্দ্রে ইসরায়েলি নৌবাহিনী হামলা চালিয়েছে। ইসরায়েলি গণমাধ্যমে রবিবার এ খবর জানানো হয়েছে। হামলায় বিদ্যুৎকেন্দ্রে বড় ধরনের বিস্ফোরণ ঘটেছে। তবে এতে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদনে এ খবর জানানো হয়।
এ ছাড়া হুথি সংযুক্ত আল মাসিরাহ টিভি জানিয়েছে, এই ‘আগ্রাসনে’ হেজইয়াজ বিদ্যুৎকেন্দ্রের জেনারেটর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেখানে আগুন লাগলে তা নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে।
পাশাপাশি দেশটির উপ-প্রধানমন্ত্রী নিশ্চিত করেছেন, জরুরি কর্মীরা বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি ঠেকাতে সক্ষম হয়েছেন। সানার বাসিন্দারাও অন্তত দুটি তীব্র বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছেন বলে জানিয়েছেন।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী দাবি করেছে, হুথি ওই স্থাপনাটি ব্যবহার করছিল। তবে একটি বেসামরিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে হামলার যৌক্তিকতা প্রমাণে কোনো প্রমাণ হাজির করেনি তারা, যা এ হামলাকে যুদ্ধাপরাধ হিসেবে বিবেচিত হওয়ার আশঙ্কা বাড়িয়েছে।
আরও পড়ুন : গাজার বাসিন্দাদের ভিসা স্থগিত করল যুক্তরাষ্ট্র
ইসরায়েলি গণমাধ্যমে রোববার প্রকাশিত এক বিবৃতিতে সেনাবাহিনী জানায়, এ হামলা ছিল হুথির ধারাবাহিক আক্রমণের প্রত্যক্ষ জবাব। এসব আক্রমণের মধ্যে ইসরায়েলের দিকে ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোনও অন্তর্ভুক্ত।
২০২৩ সাল থেকে গাজায় ইসরায়েলের গণহত্যার প্রতিক্রিয়ায় হুথি বারবার ইসরায়েলের দিকে রকেট ও ড্রোন ছুড়ছে। এর জবাবে ইসরায়েল ইয়েমেনের অবকাঠামোতে হামলা চালিয়েছে, যার মধ্যে মানবিক সহায়তার জন্য গুরুত্বপূর্ণ হোদেইদা বন্দরও রয়েছে।
ইসরায়েলের দিকে নিক্ষিপ্ত অধিকাংশ হুথি ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করা হলেও এসব পাল্টা আক্রমণ গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধকে আঞ্চলিকভাবে আরও বিস্তৃত করেছে। যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যও ইয়েমেনে হামলা চালিয়েছে। কারণ হুথি লোহিত সাগরে ইসরায়েল সংশ্লিষ্ট জাহাজে হামলা চালাচ্ছিল। তারা বলেছিল, গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধ ও অবরোধের জবাবে তারা এই পদক্ষেপ নিয়েছে।
এতে বৈশ্বিক বাণিজ্যও বিঘ্নিত হয়। গত মে মাসে যুক্তরাষ্ট্র হঠাৎ করেই হুথির সঙ্গে একটি যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছায়। এ চুক্তির অংশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র তার বিমান হামলা বন্ধ করে এবং হুতি যুক্তরাষ্ট্র সংশ্লিষ্ট জাহাজে আক্রমণ স্থগিত করে। তবে হুথি জানায়, এই সমঝোতা তাদের ইসরায়েলবিরোধী কার্যক্রমে প্রযোজ্য নয়।
যুদ্ধবিরতির আগে মার্কিন বাহিনী ইয়েমেনে শত শত বিমান হামলা চালায়, যাতে আড়াই শতাধিক মানুষ নিহত হয়। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছিলেন, এই সমঝোতা ‘বোমাবর্ষণ বন্ধ করবে’।
অন্যদিকে, চুক্তিটি ইসরায়েলকে হতবাক করে দেয় বলে মনে হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু জোর দিয়ে বলেন, প্রয়োজনে তাদের দেশ একাই নিজেদের রক্ষা করবে।
মন্তব্য করুন