গাজায় ইসরায়েরি হামলায় আরও অন্তত ৯১ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় তারা প্রাণ হারান। এ নিয়ে ইসরায়েলি হামলায় নিহতদের সংখ্যা ৬৫ হাজার ৩০০ ছাড়িয়েছে।
রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শনিবারের এই হামলায় নিহতদের মধ্যে নারী, শিশু ও চিকিৎসকদের পরিবারের সদস্যরা রয়েছেন। এমনকি ট্রাকে করে পালিয়ে যাওয়া মানুষকেও নিশানা করেছে ইসরায়েল। ।
প্রত্যক্ষদর্শী ও চিকিৎসা সূত্র জানায়, ইসরায়েলি বাহিনী নির্বিচারে আকাশ ও স্থল হামলা জোরদার করেছে। হামলায় বসতবাড়ি, স্কুলে আশ্রয় নেওয়া কেন্দ্র, ত্রাণশিবির এবং একটি ট্রাক লক্ষ্যবস্তু করা হয়। যেখানে মানুষ ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর নির্দেশে শহর ছেড়ে পালাচ্ছিল।
আলাজাজিরা জানিয়েছে, ইসরায়েলি বিমান হামলায় অন্তত ৭৬ জন নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে রয়েছেন গাজার সবচেয়ে বড় হাসপাতাল আল-শিফার পরিচালক ডা. মোহাম্মদ আবু সালমিয়ার পরিবারের সদস্যরাও। শনিবার ভোরে তার পারিবারিক বাড়িতে এক বিমান হামলায় তার ভাই, ভাবি ও তাদের সন্তানরা নিহত হন।
ডা. আবু সালমিয়া বলেন, আমি হাসপাতালে কাজ করছিলাম, তখন আমার ভাই ও তার স্ত্রীর মরদেহ দেখে আমি হতবাক হয়ে যাই। এখন সবকিছুই সম্ভব—কারণ আপনি হয়তো পরে আপনার প্রিয়জনদের মৃত অবস্থায় পাবেন।
হামাস এই হামলাকে চিকিৎসকদের প্রতি একটি ‘রক্তাক্ত সন্ত্রাসী বার্তা’ বলে আখ্যায়িত করেছে এবং জানায়, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া যুদ্ধে ইসরায়েলি বাহিনী প্রায় ১ হাজার ৭০০ স্বাস্থ্যকর্মীকে হত্যা ও ৪০০ জনকে আটক করেছে।
এদিকে, গাজা শহরের নাসর এলাকায় একটি ট্রাক লক্ষ্য করে চালানো আরেকটি হামলায় চারজন নিহত হয়েছে। ট্রাকটিতে বাসিন্দারা নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে পালাচ্ছিলেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাস্তায় রক্তাক্ত মৃতদেহ ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিল।
আলজাজিরার সাংবাদিক হিন্দ খুদারি জানান, ইসরায়েলি ড্রোন, কামান, বিস্ফোরক রোবট দিয়ে পুরো এলাকা ধ্বংস করছে। এটি যেন ভূমিকম্পের মতো অনুভূত হচ্ছে। তিনি বলেন, অনেক সময় উদ্ধারকারী দল ও মেডিকেল কর্মীরা আহতদের কাছে পৌঁছাতে পারছেন না, কারণ পরিস্থিতি অত্যন্ত বিপজ্জনক।
গাজা সিভিল ডিফেন্স জানায়, আগস্ট মাস থেকে শুরু হওয়া হামলায় গাজা সিটি থেকে এখন পর্যন্ত সাড়ে চার লাখের বেশি মানুষ পালিয়ে গেছে। শহরটিতে একসময় প্রায় ১০ লাখ মানুষ বসবাস করত।
মন্তব্য করুন