ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় অব্যাহতভাবে অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলি সেনারা। গত অক্টোবর মাসে শুরু হওয়া এ অভিযানে ৩৪ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। দেশটির সেনাদের হামলায় বিধ্বস্ত জনপদের শহরে পরিণত হয়েছে গাজা উপত্যকা। এমন পরিস্থিতিতে অস্ত্র সমর্পণের জন্য শর্তারোপ করেছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামীদের সংগঠন হামাস। শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) সিএনএনের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
হামাস জানিয়েছে, দ্বিরাষ্ট্রভিত্তিক সমাধান তথা স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হলে তারা অস্ত্র সমর্পণ করবে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হামাসের কিছু কর্মকর্তা ইঙ্গিত দিয়েছেন, ১৯৬৭ সালের যুদ্ধে ইসরায়েলের দখলকৃত এলাকায় স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা হলে তারা সশস্ত্র সংগ্রাম ছেড়ে দিতে পারে।
সিএনএন জানিয়েছে, হামাসের কিছু কর্মকর্তার এমন বার্তা তাদের কিছুটা নমনীয়তার ইঙ্গিত দিচ্ছে। কারণ গাজার নিয়ন্ত্রণে থাকা এ গোষ্ঠীটি দীর্ঘদিন ধরে ইসরায়েলকে ধ্বংস করার আহ্বান জানিয়ে আসছে।
হামাসের পলিট ব্যুরোর ইস্তাম্বুলভিত্তিক সদস্য বাসেম নাইম সিএনএনকে বলেন, স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা হলে হামাস নিজেদের নিরস্ত্র করতে রাজি হবে।
হামাসের সামরিক শাখার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, শরণার্থীদের প্রত্যাবর্তনের অধিকার সংরক্ষণের পাশাপাশি জেরুজালেমকে রাজধানী করে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এমনটি করা হলে আল কাসেম ব্রিগেডকে জাতীয় সেনাবাহিনীতে একীভূত করা যেতে পারে।
হামাস বরাবরই দ্বিরাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানকে প্রত্যাখ্যান করে আসছে। এ নীতি অনুযায়ী ইসরায়েলের পাশাপাশি একটি ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত থাকবে। এর বদলে হামাসের দাবি হলো- সমস্ত ঐতিহাসিক ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র গঠন করতে হবে।
প্যালেস্টাইন ন্যাশনাল ইনিশিয়েটিভের প্রেসিডেন্ট মোস্তফা বারঘৌতি বলেন, হামাসের অস্ত্র সমর্পণের প্রস্তাবের বিষয়টি তার জানা নেই। তিনি বলেন, এটি সত্য হলে তা একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হবে।
অন্যদিকে হামাসের এক শীর্ষ কর্মকর্তার বরাতে এপি জানিয়েছে, ফিলিস্তিনের এ গোষ্ঠীটি ইসরায়েলের সঙ্গে ৫ বছর বা তার বেশি সময়ের জন্য যুদ্ধবিরতির বিষয়ে সম্মত হতে ইচ্ছুক। ১৯৬৭ সালের আগের সীমান্ত অনুযায়ী স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা হলে তারা অস্ত্র সমর্পণ ও রাজনৈতিক দলে রূপান্তরিত হতে আগ্রহী বলেও জানান তিনি।
মন্তব্য করুন