ইসরায়েল চলতি সপ্তাহে গাজায় অভিযান চালিয়ে চারজন জিম্মিকে উদ্ধার করে। এ ঘটনায় ২৭৪ জন ফিলিস্তিনি নিহত হন। ওই অভিযান নিয়ে নতুন তথ্য সামনে এসেছে। জানা যাচ্ছে, ইসরায়েলি বাহিনী ফিলিস্তিনি শরণার্থীর ছদ্মবেশে সেখানে আগে থেকেই অবস্থান করছিল।
ইসরায়েলি নিরাপত্তা বাহিনীর দুটি সূত্রের বরাত দিয়ে মার্কিন গণমাধ্যম এবিসি নিউজের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ফিলিস্তিনি শরণার্থীর ছদ্মবেশে জিম্মিদের বন্দি করে রাখা ভবনে ঢোকে ইসরায়েলের বিশেষ বাহিনীর সদস্যরা। ভবনগুলোর চারপাশে আগে থেকেই অবস্থান নিয়েছিল দুর্ধর্ষ এই বাহিনী।
তারা ইসরায়েল ভূখণ্ডে অবস্থান করা কমান্ডারের কাছ থেকে কেবল ‘go’ শব্দটি শোনার অপেক্ষায় ছিল।
পরে অভিযান চালানোর অনুমতি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই নৃশংসভাবে হামলে পড়ে তারা। ছদ্মবেশী শরণার্থীরা মুহূর্তেই রূপ নেয় ভয়ংকর ঘাতকে।
সূত্র জানায়, স্থানীয় সময় শনিবার বেলা ১১টায় অভিযান চালানোর অনুমতি দেওয়া হয়। ইসরায়েলের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বাহিনী শিনবেত, প্রতিরক্ষা বাহিনী এবং সোয়াত সদস্যদের সমন্বয়ে গঠিত ইয়ামাম নামক বাহিনী এই উদ্ধার অভিযানে অংশ নেয়।
ইসরায়েল এই অভিযানের নাম দিয়েছিল ‘সামার সিডস’। তবে অভিযানে গিয়ে নিহত হন ইসরায়েলি বাহিনীর সদস্য আরনন জামোরা। পরে তার নামেই এই অভিযানের নাম দেওয়া হয় ‘অপারেশন আরনন’।
ইসরায়েলি বাহিনীর ওই অভিযানে উদ্ধার হওয়া চার জিম্মি হলেন- আলমগ মেইর জান, নোয়া আরগামানি, অ্যান্ড্রে কোজলভ ও শিলোমি জিভ। গত বছরের ৭ অক্টোবর নোভা মিউজিক ফেস্টিভ্যাল থেকে তাদের অপহরণ করা হয়েছিল।
ইসরায়েলির প্রতিরক্ষা বাহিনী জানায়, জিম্মিদের উদ্ধার করা হয় নুসেইরাত ও মধ্য গাজার দুটি ভিন্ন স্থান থেকে। তিনজন পুরুষ জিম্মিকে একই স্থান থেকে আর আরগামানিকে অন্য একটি স্থান থেকে মুক্ত করা হয়। উদ্ধারের পর ইসরায়েলি কর্মকর্তারা দাবি করেন, শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন জিম্মিরা। পাশাপাশি মানসিক নির্যাতনেরও শিকার হন তারা।
ফিলিস্তিনের ভেতর ইসরাইলী বাহিনী এমন নিবিড়ভাবে তাদের কার্যক্রম চালায় যে, তাদের আলাদা করে চিনতে পারা খুব মুশকিল। কেননা, তারা ফিলিস্তিনিদের মতোই অবিকল আরবি ভাষায় কথা বলে এবং তাদের চালচলনও অনুসরণ করে। মার্কিন কর্মকর্তাদের ভাষ্য অনুযায়ী, সুনির্দিষ্ট গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতেই এই অভিযান চালানো হয়েছে।
ইসরায়েলে হামাসের নজিরবিহীন হামলার পর গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় হামলা শুরু করে নেতানিয়াহুর বাহিনী। গাজার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের মতে, ইসরায়েলের হামলায় ৩৭ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। এ ছাড়া ৮৩ হাজারের বেশি আহত হয়েছেন। এদের অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
এদিকে গাজায় তীব্র হয়েছে খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি ও ওষুধের সংকট। ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছে বহু লাশ।
মন্তব্য করুন