ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধে না জড়িয়েও বড় ক্ষতির মুখে পড়েছে ফ্রান্স। কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে, দাসো অ্যাভিয়েশনের শেয়ার দরপতনে আর্থিক ক্ষতির মুখে প্রতিষ্ঠানটি। পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যমে এমন প্রচার চলছে।
সামা টিভির প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, পাকিস্তানের বিমানবাহিনী ভারতের ছয়টি বিমান ভূপাতিত করে। যার মধ্যে তিনটি রাফাল জেট। ফ্রান্সের কোম্পানি দাসো অ্যাভিয়েশন এ রাফাল ফাইটার জেট তৈরি করে।
মঙ্গলবার মধ্যরাতে ভারত পাকিস্তানে হামলা করে। এরপর সকাল নাগাদ রাফাল যুদ্ধবিমান ধ্বংসের খবর এলে শেয়ারবাজারে অস্থিরতার মুখে পড়ে দাসো অ্যাভিয়েশন। বুধবার কর্মদিবসের শুরুতেই ৬% শেয়ার হ্রাস পায় প্রতিষ্ঠানটির।
পাকিস্তানের জ্যেষ্ঠ প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা এবং উচ্চপর্যায়ের নিরাপত্তা সূত্রের মতে, এই সংঘর্ষে মোট ছয়টি ভারতীয় বিমান ধ্বংস করা হয়েছে। তিনটি রাফাল জেট, একটি মিগ-২৯, একটি এসইউ-৩০ এবং একটি নজরদারি ড্রোন।
তবে রাফাল যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের দাবি স্বীকার করেনি ভারত। ফলে এ নিয়ে ধোঁয়াশা সৃষ্টি হয়েছে। পাকিস্তানি সেনাবাহিনীও নির্ভরযোগ্য প্রমাণ উপস্থাপন করতে পারেনি। তবে যে ধ্বংসাবশেষ উদ্ধার করা হয়েছে তা ফ্রান্সের তৈরি। এ থেকে ধারণা করা হচ্ছে, যুদ্ধবিমানগুলো রাফাল হতে পারে।
পাকিস্তানের সামরিক মুখপাত্র দাবি করেছেন, সব বিমান ভারতীয় আকাশসীমায় উড়ছিল কিন্তু দূর থেকে নিক্ষেপযোগ্য অস্ত্র ব্যবহার করে পাকিস্তানের ভূখণ্ডে আঘাত করার চেষ্টা করে। এ ঘটনায় পাকিস্তানের কোনো বিমানের ক্ষতি হয়নি। সব ইউনিট ভারতীয় বিমান প্রতিহত করে নিরাপদে ঘাঁটিতে ফিরে এসেছে।
এদিকে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যমে ফ্রান্সের ক্ষতির প্রচার চললেও বিশ্বাসযোগ্য কোনো সূত্র উল্লেখ করা হচ্ছে না। নির্ভরযোগ্য আর্থিক উৎস থেকে (যেমন, রয়টার্স, ফিনান্সিয়াল টাইমস, অথবা ইয়াহু ফাইন্যান্স) শেয়ার ধসের নিশ্চিতভাবে কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তবে বাজার, ভূ-রাজনৈতিক ঘটনাবলী অথবা কোম্পানির অভ্যন্তরীণ কারণসহ বিভিন্ন কারণে স্টকের দাম ওঠানামা করতে পারে।
দাসো-এর স্টক ২০২৫ সালের শুরুতে ৫২ সপ্তাহের সর্বোচ্চ ৩৩২.২০ ইউরোতে পৌঁছেছিল বলে প্রতিষ্ঠানের এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। এই সময়ের মধ্যে ৫৯.৪৩% বৃদ্ধি পেয়েছিল প্রতিষ্ঠানটির শেয়ার। যা শক্তিশালী প্রতিরক্ষা চাহিদার কারণে হয়েছে বলে প্রতিবেদনে দাবি করা হয়। হঠাৎ ৬% কমে যাওয়ার জন্য কোনো উল্লেখযোগ্য তথ্য আর্থিক সংবাদদাতা এজেন্সিগুলো দেয়নি। তবে নেতিবাচক খবরের জন্য হয়তো দিনের কার্যদিবস শেষ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হতে পারে।
এদিকে ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর পাকিস্তানের নিরাপত্তা উপদেষ্টা (এনএসএ) লেফটেন্যান্ট জেনারেল মুহাম্মদ অসিম মালিককে ফোন করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও।
সূত্রের বরাত দিয়ে জিও নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতের এই হামলার পর উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করতে পাকিস্তানের নিরাপত্তা উপদেষ্টার সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তাদের আলোচনায় দক্ষিণ এশিয়ার এই দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে বাড়তে থাকা উত্তেজনা এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
মন্তব্য করুন