ঈদের পর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে পাকিস্তানের আজাদ কাশ্মীরভিত্তিক সুশীল সংস্থাগুলোর জোট জম্মু কাশ্মীর জয়েন্ট আওয়ামী অ্যাকশন কমিটি (জেকেজাক)। ঈদের আগেই তারা ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যকার দীর্ঘমেয়াদি ইস্যু কাশ্মীর সংকটের শান্তিপূর্ণ ও স্থায়ী সমাধানের দাবি জানিয়েছে। অন্যথায় ঈদের পর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে জোট।
সোমবার (২৬ মে) পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ডনের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আজাদ জম্মু ও কাশ্মীরে (এজেকে) জনগণের অধিকারের জন্য সংগ্রামরত নাগরিক সমাজ জোট জম্মু কাশ্মীর যৌথ জনগণের ক্রিয়া কমিটি (জেকেজেএএসি) আঞ্চলিক সরকারকে তাদের দাবি বাস্তবায়নের জন্য ৮ জুন পর্যন্ত সময়সীমা দিয়েছে। মুজাফফরাবাদের লাল চৌক এ রোববার ভোরে অনুষ্ঠিত একটি বিশাল সমাবেশে জোটের নেতা শওকত নওয়াজ মির এই ঘোষণা দেন। তিনি সতর্ক করে বলেন, সরকারের ঢিমেতাল বা নিষ্ক্রিয়তার ক্ষেত্রে আরও ব্যাপক গণমুখী আন্দোলনের মাধ্যমে চাপ সৃষ্টি করা হবে।
‘জম্মু ও কাশ্মীরের শহীদ ও জনগণের অধিকার সম্মেলন’ শীর্ষক এই সমাবেশ শনিবার বিকেলে শুরু হয় এবং সন্ধ্যা পর্যন্ত অঞ্চলের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত হাজার হাজার মানুষের কাফেলা এতে যোগ দেয়। সমাবেশটি রাতভর চলে এবং ভোর পর্যন্ত স্থায়ী হয়। এ সময় জেকেজেএএসি’র মূল কমিটির সদস্যসহ দুই ডজনেরও বেশি বক্তা বক্তৃতা করেন। সমাবেশে আগতদের স্থানীয় হোটেল ও ব্যবসায়ী সমিতিগুলো অংশগ্রহণকারীদের বিনামূল্যে থাকার ব্যবস্থা ও খাবার সরবরাহ করে সহায়তা করে।
শওকত নওয়াজ মির সমাবেশে ১৩ দফা ঘোষণা করেন। এতে অভ্যন্তরীণ শাসনব্যবস্থা, কাশ্মীর সংঘাত এবং দক্ষিণ এশিয়ায় পারমাণবিক যুদ্ধের ঝুঁকি নিয়ে আলোচনা করা হয়। ঘোষণায় জোর দেওয়া হয়, কাশ্মীরি জনগণের ইচ্ছা অনুযায়ী কাশ্মীর সমস্যার সমাধান ছাড়া পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে স্থায়ী শান্তি এবং দক্ষিণ এশিয়ায় স্থিতিশীলতা অসম্ভব।
ঘোষণায় বলা হয়, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে অবশ্যই জাতিসংঘের সনদের অধীনে কাশ্মীরি জনগণের সম্মিলিত ইচ্ছা ও অবিচ্ছেদ্য স্ব-নিয়ন্ত্রণের অধিকার অনুযায়ী কাশ্মির সমস্যার শান্তিপূর্ণ ও স্থায়ী সমাধান নিশ্চিত করতে হবে। এতে আরও সতর্ক করা হয় যে, কাশ্মীরিদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে কোনো সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়া হলে বা এই অঞ্চলে যুদ্ধ চাপিয়ে দেওয়া হলে জনগণ শান্তিপূর্ণভাবে তথাকথিত নিয়ন্ত্রণ রেখা (LoC) ভেঙে ফেলার অধিকার সংরক্ষণ করবে।
এই ঘোষণায় ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে পারমাণবিক সংঘাতের সম্ভাবনা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। এছাড়া উভয় দেশের নাগরিকদের পাশাপাশি বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, নেপাল, ভুটান, মালদ্বীপ, আফগানিস্তান ও ইরানের নাগরিকদের কাশ্মীরিদের স্ব-নিয়ন্ত্রণের আহ্বান সমর্থন করার আবেদন জানানো হয়।
এছাড়া, ঘোষণায় বিশিষ্ট কাশ্মীরি প্রতিরোধ নেতা ইয়াসিন মালিক এবং ভারতীয় কারাগারে আটক অন্যান্য রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তির দাবি জানানো হয়। এছাড়া আজাদ কাশ্মীরে ‘জোরপূর্বক গুম’ এবং গিলগিট-বালতিস্তানে ‘রাজনৈতিক কর্মীদের গ্রেপ্তারের’ নিন্দা করা হয়।
মন্তব্য করুন