বিশ্বের বুকে তথাকথিত সভ্য দেশ ও একসময়কার সাম্রাজ্যবাদী শক্তি ব্রিটেনের বুকে ভয়াবহ আকারে বাড়ছে ধর্মীয় বিদ্বেষমূলক অপরাধের ঘটনা। সম্প্রতি যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে ফুটে উঠে এমনই দৃশ্য। এতে দেখা যায় দেশটিতে ধর্মীয় বিদ্বেষমূলক অপরাধের বড় অংশই সংগঠিত হচ্ছে মুসলিমদের বিরুদ্ধে।
বৃহস্পতিবার প্রকাশিত ব্রিটিশ হোম অফিসের প্রকাশিত প্রতিবেদনে দেখা যায়, ২০২৩ সালের মার্চে শেষ হওয়া বছরে ইংল্যান্ড ও ওয়েলসে মোট ১ লাখ ৪৫ হাজার ২১৪টি বিদ্বেষমূলক অপরাধ রেকর্ড করা হয়েছে। প্রতিবেদনে জাতিগোষ্ঠী, ধর্ম, যৌন আকাঙ্ক্ষা, শারীরিক প্রতিবন্ধকতা ও ট্রান্সজেন্ডার পরিচয়ের ওপর ভিত্তি করে বিদ্বেষের ঘটনাগুলো লিপিবদ্ধ করা হয়েছে।
প্রকাশিত প্রতিবেদনে তথ্য বলছে, পূর্বের চেয়ে ইংল্যান্ড ও ওয়েলসে ধর্মীয় বিদ্বেষমূলক অপরাধের ঘটনা বেড়েছে ৯ শতাংশ। এ সময় দেশটিতে মোট ৯ হাজার ৩৮৭টি ধর্মীয় বিদ্বেষমূলক অপরাধের ঘটনা লিপিবদ্ধ করে পুলিশ। এসব ঘটনার সর্বোচ্চ ৩৯ শতাংশ ঘটে মুসলিমদের বিরুদ্ধে। উল্লিখিত সময়ে ইংল্যান্ডে মুসলিম নাগরিক ও অভিবাসীদের সঙ্গে মোট ৩ হাজার ৪৫২টি। এ সময় দেশটিতে মুসলিমদের ওপর মোট ৩ হাজার ৪৫২টি হামলার ঘটনা ঘটে।
একই সময়ে ইহুদিদের সঙ্গে ধর্মীয় বিদ্বেষমূলক অপরাধের ঘটনা ঘটেছে ১ হাজার ৫১০টি যা মোট অপরাধের ১৭ শতাংশ, শিখ ও হিন্দুদের সঙ্গে ধর্মীয় বিদ্বেষমূলক অপরাধের ঘটনা ঘটেছে যথাক্রমে ৩০৮ ও ২৯১টি যা মোট অপরাধের ৩ শতাংশ। খ্রিস্টানদের সঙ্গে ধর্মীয় বিদ্বেষমূলক অপরাধের ঘটনা ঘটেছে ৬৪৯টি যা মোট অপরাধের ৭ শতাংশ।
২০২৩ সালের মার্চ পর্যন্ত বিগত ১২ মাসের মধ্যে ট্রান্সজেন্ডারদের সঙ্গে বিদ্বেষমূলক ঘটনা ঘটেছে মোট ৪ হাজার ৭৩২টি। পূর্বের তুলনায় তাদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষমূলক অপরাধের হার বেড়েছে ১১ শতাংশ। তবে সবচেয়ে বেশি বিদ্বেষমূলক অপরাধ সংগঠিত হয়েছে গোষ্ঠীগত পরিচয়ের বিচারে। উল্লিখিত সময়ে ইংল্যান্ডে জাতীগত বিদ্বেষের ঘটনা ঘটে ১ লাখ ৮ হাজার ৪৭৬টি। তবে অপরাধের হার বিবেচনায় তা পূর্বের চেয়ে ৬ শতাংশ কমে এসেছে বলে প্রতিবেদনে দেখা যায়।
স্থানীয় মুসলিমরা বলছেন, ইংল্যান্ডের বিভিন্ন স্থানে বিশেষ করে মুসল্লি ও হিজাব পরা নারীদের ওপর নিয়মিতই হামলার ঘটনা ঘটছে, যা অত্যন্ত উদ্বেগের। ব্রিটিশ মুসলিম নাগরিকদের দাবি এসব ঘটনা আধুনিক ব্রিটেনের মূল্যবোধকে প্রতিফলিত করে না।
মন্তব্য করুন