যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহরের মেয়র নির্বাচনের ডেমোক্র্যাটিক পার্টির প্রাথমিক পর্বে জয় পেয়েছেন জোহরান মামদানি। আগামী নভেম্বরের নির্বাচনে যদি বিজয়ী হন তাহলে তিনিই হবেন নিউইয়র্ক শহরের প্রথম মুসলিম, দক্ষিণ এশীয় তথা ভারতীয় বংশোদ্ভূত মেয়র।
তবে মামদানির এই সাফল্যকে কেন্দ্র করে ভারতের ক্ষমতাসীন বিজেপি সমর্থকদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। বিষয়টি উঠে এসেছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে, যা প্রকাশিত হয়েছে শুক্রবার (৬ জুলাই)।
মোদি-সমর্থকদের ক্ষোভের কারণ কী?
আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতীয় বংশোদ্ভূত মামদানি নিউইয়র্ক শহরের মেয়র নির্বাচিত হলে তাতে ভারতীয়দের গর্বিত হওয়ার কথা। কিন্তু দেখা যাচ্ছে ঠিক এর উল্টো। ডেমোক্র্যাটিক পার্টির প্রাথমিক পর্বে জয় পাওয়া মামদানির ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করছেন প্রবাসী ভারতীয়রা।
বিশেষজ্ঞরা আল জাজিরাকে বলেছেন, মামদানির ধর্মীয় পরিচয়, স্পষ্টবাদিতা এবং মানবাধিকার ইস্যুতে তার সোচ্চার অবস্থান—এসব কারণে তাকে আক্রমণের লক্ষ্য বানিয়েছেন মোদি-ভক্তরা।
বিশ্লেষকরা জানিয়েছেন, মামদানি যেহেতু মুসলিম এবং তিনি ভারতের রাজনৈতিক ও সাম্প্রদায়িক অবস্থা নিয়ে সমালোচনা করে থাকেন, সেহেতু তাকে ‘দেশবিরোধী’ ও ‘হিন্দুবিরোধী’ বলে প্রচার চালানো হচ্ছে। অনলাইনে মামদানিকে ‘জিহাদি’, ‘ইসলামপন্থি’ এমনকি ‘ভারতের শত্রু’ বলেও আখ্যায়িত করছেন অনেক মোদি-অনুগামী।
সংবাদমাধ্যমেও আক্রমণ
ভারতের প্রভাবশালী ডানপন্থি সংবাদমাধ্যম ‘আজ তাক’ মামদানিকে নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, যেখানে বলা হয়েছে—তিনি নাকি ‘ভারতবিরোধী’ কিছু সংগঠনের কাছ থেকে অর্থ সহায়তা নিয়েছেন। যদিও এসব অভিযোগের পক্ষে কোনো সুনির্দিষ্ট প্রমাণ উপস্থাপন করা হয়নি।
প্রবাসী দক্ষিণ এশীয়দের সমর্থন পাচ্ছেন মামদানি
তবে মোদি-সমর্থকদের তীব্র সমালোচনার মধ্যেও জোহরান মামদানি দক্ষিণ এশীয় অভিবাসীদের বড় একটি অংশের সমর্থন অর্জন করতে পেরেছেন। বিশেষ করে যেসব ভারতীয় বা বাংলাদেশি-সহ দক্ষিণ এশীয় প্রবাসী ডেমোক্র্যাটিক পার্টির সমর্থক—তাদের মধ্যে মামদানির প্রতি সহানুভূতি ও সমর্থন বাড়ছে।
খবরে বলা হয়, মানবাধিকার, ধর্মীয় সহিষ্ণুতা এবং অভিবাসীদের অধিকার নিয়ে মামদানির বক্তব্য অনেকের কাছে গ্রহণযোগ্য হয়ে উঠছে। একারণে আস্তে আস্তে জনপ্রিয় মুখ হয়ে উঠছেন তিনি।
মন্তব্য করুন