ইরানি নকশায় তৈরি ভেনেজুয়েলার ড্রোন কারখানা এখনো ইরানি বিশেষজ্ঞদের তত্ত্বাবধানে রয়েছে। ক্যারিবীয় অঞ্চলে মোতায়েন করা মার্কিন যুদ্ধজাহাজ নিয়ে অস্থিরতার মধ্যে স্থানীয় কর্মীদের অনুমতি ছাড়া প্রবেশে বাধাও দিচ্ছে তারা। সেখানে ঠিক কী ধরনের প্রস্তুতি চলছে তা নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে।
মিয়ামি হেরাল্ডের বরাত দিয়ে ইরান ইন্টারন্যাশনাল জানিয়েছে, ২০০৬ সালে কারাকাস তেহরানের সঙ্গে সামরিক চুক্তি স্বাক্ষর করার পর ড্রোন কর্মসূচি শুরু হয়। ইরানি সংস্থা কুদস এভিয়েশন ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসেম্বলি কিট সরবরাহ করে। ইরানে প্রশিক্ষিত ভেনেজুয়েলার প্রকৌশলীরা এবং ইরানি দলগুলো পরবর্তীতে মারাকাইয়ের এল লিবার্তাদোর বিমান ঘাঁটিতে কাজে যোগ দেয়।
এই কর্মসূচি তখন থেকে ইরানি সিস্টেমের আদলে তৈরি গোয়েন্দা, সশস্ত্র এবং কামিকাজে ড্রোন তৈরি করছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সূত্র মিয়ামি হেরাল্ডকে জানিয়েছে, ইরানের সাথে সহযোগিতা অপরিহার্য ছিল। ভেনেজুয়েলা কেবল নিজেরাই ড্রোন তৈরি করতে পারত না, আজও ইরানিরা এই সুযোগ-সুবিধাগুলো নিয়ন্ত্রণ করে। ভেনেজুয়েলার কর্মীরা তাদের অনুমোদন ছাড়া প্রবেশ করতে পারে না।
পত্রিকাটি জানিয়েছে, তারা কারাকাস এবং তেহরানের মধ্যে সম্পর্ক আছে এমন অর্ধডজন ব্যক্তির সাক্ষাৎকার নিয়েছে। সে সঙ্গে ভেনেজুয়েলার সরকারি নথি পর্যালোচনা করেছে। এসব নথির কিছু শ্যাভেজের স্বাক্ষরিত। তাতে দেখা যায়, অংশীদারত্বের ভিত্তিতে ড্রোন কারখানায় কোটি কোটি ডলার বিনিয়োগ করা হয়েছে।
অনেক প্রকল্প বেসামরিক উদ্যোগের ছদ্মবেশে চলছে। সাইকেল বা ট্র্যাক্টর কারখানার নামে যুদ্ধ ড্রোন তৈরি হচ্ছে বলেও সূত্র দাবি করেছে। হেরাল্ড জানিয়েছে, মূলে শ্যাভেজ এমন অস্ত্র খুঁজছিলেন যা মার্কিন সামরিক শক্তিকে চ্যালেঞ্জ করতে পারে। আর তার জন্যই তারা ইরানের দ্বারস্থ হয়।
এদিকে ভেনেজুয়েলার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের উত্তেজনা দিন দিন বাড়ছে। এতে সর্বশেষ সংযোজন ঘটেছে বৃহস্পতিবার। ওই দিন ভেনেজুয়েলার দুটি সামরিক বিমান আন্তর্জাতিক জলসীমায় মার্কিন নৌবাহিনীর একটি জাহাজের কাছে উড়ে গেছে। মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগ এ তথ্য জানিয়েছে। বিবৃতিতে তারা এই পদক্ষেপকে অত্যন্ত উসকানিমূলক বলে বর্ণনা করে।
ওয়াশিংটন এবং কারাকাসের মধ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মধ্যে ঘটনাটি ঘটল। মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগ বৃহস্পতিবার গভীর রাতে এক বিবৃতিতে ভেনেজুয়েলাকে আরও উসকানিমূলক পদক্ষেপ বন্ধ করতে হুঁশিয়ারি দিয়েছে। সতর্ক করে বলেছে, গাইডেড-ক্ষেপণাস্ত্রবাহী মার্কিন জাহাজ জেসন ডানহামের উপর দিয়ে ভেনেজুয়েলার বিমান উড়ে গেছে। আমাদের মাদক-সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানে হস্তক্ষেপ করার প্রচেষ্টা এটি।
পেন্টাগন এক্স প্ল্যাটফর্মে একটি পোস্টে আরও বলেছে, মাদুরো সরকারের দুটি সামরিক বিমান আন্তর্জাতিক জলসীমায় মার্কিন নৌবাহিনীর একটি জাহাজের কাছে উড়ে গেছে। ভেনেজুয়েলাকে মার্কিন সেনাবাহিনী কর্তৃক পরিচালিত মাদক-সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানে বাধা বা হস্তক্ষেপ করার জন্য আর কোনো প্রচেষ্টা না করার জন্য দৃঢ়ভাবে সতর্ক করা হচ্ছে।
মন্তব্য করুন