বিশ্ববেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ২৭ জুন ২০২৩, ১২:০০ এএম
আপডেট : ২৭ জুন ২০২৩, ০৭:৫২ পিএম
প্রিন্ট সংস্করণ

ওয়াগনারের বিদ্রোহ যেভাবে প্রভাব ফেলবে ইউক্রেন যুদ্ধে

বিশ্লেষকদের মত
রাশিয়ার দক্ষিণাঞ্চলীয় রোস্তভ শহর ছেড়ে চলে যাচ্ছে ওয়াগনার সদস্যরা। ফাইল ফটো
রাশিয়ার দক্ষিণাঞ্চলীয় রোস্তভ শহর ছেড়ে চলে যাচ্ছে ওয়াগনার সদস্যরা। ফাইল ফটো

রাশিয়ার ভাড়াটে সেনা সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ওয়াগনারের সাম্প্রতিক বিদ্রোহ ইউক্রেন যুদ্ধে কোনো প্রভাব ফেলবে কি না, তা নিয়ে শুরু হয়েছে বিশ্লেষণ। রাশিয়া দাবি করেছে, ওয়াগনার বাহিনীর বিদ্রোহ এখন পর্যন্ত ইউক্রেন অভিযানে কোনো প্রভাব ফেলেনি। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, রাশিয়ায় সামনের দিনগুলোয় প্রতিদ্বন্দ্বী ইউনিটগুলোর মধ্যে লড়াই শুরু হতে পারে। ইউক্রেনে রাশিয়া তার সম্পৃক্ততা বাড়াতে পারে—এমন উদ্বেগের মধ্যে সামরিক নেতারা সীমান্তের অস্থিতিশীলতার সুযোগ নিতে পারেন। সব মিলিয়ে রাশিয়ার পক্ষে পরিস্থিতি অনেক জটিল হয়ে উঠতে পারে, যার সুবিধা নিতে পারে ইউক্রেন। খবর বিবিসি ও রয়টার্সের।

ওয়াগনার গ্রুপ ইউক্রেনের যুদ্ধে সবচেয়ে সফল সেনা দল পাঠিয়েছে, যদিও এর অনেক যোদ্ধাকে কারাগার থেকে আনা হয়েছে, স্বাধীনতার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ফ্রন্টলাইন সার্ভিসের হয়ে লড়াই করতে প্রলুব্ধ করা হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, বাখমুত শহর রাশিয়ার দখলে আনতে এই ওয়াগনার সেনাদের ব্যাপক সম্পৃক্ততা ছিল। রাশিয়া দাবি করেছে, ওয়াগনার বাহিনীর বিদ্রোহ এখন পর্যন্ত ইউক্রেন অভিযানে কোনো প্রভাব ফেলেনি।

তবে শনিবারের ঘটনার পর আগামী দিনগুলোয় কী ধরনের প্রতিক্রিয়া হতে পারে, সেটি ব্যাখ্যা করতে গিয়ে কোনো কোনো বিশ্লেষক বলছেন, রাশিয়ায় সামনের দিনগুলোয় প্রতিদ্বন্দ্বী ইউনিটগুলোর মধ্যে লড়াই শুরু হতে পারে। ইউক্রেনে রাশিয়া তার সম্পৃক্ততা বাড়াতে পারে—এমন উদ্বেগের মধ্যে সামরিক নেতারা সীমান্তের অস্থিতিশীলতার সুযোগ নিতে পারে। কিয়েভের বাহিনী দখলদারদের দখলকৃত এলাকা পুনরুদ্ধার করতে পাল্টা আক্রমণ শুরু করেছে এবং তাদের বিশ্বাস, রাশিয়ার এ অস্থিরতা তাদের জন্য ‘বড় সুযোগ’ তৈরি করবে। বিশেষ করে এখন বাখমুতের যেসব এলাকা নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে কিয়েভ, তা ফিরে পেতে আরও তীব্র লড়াই চালাবে ইউক্রেন। ইউক্রেনে নিযুক্ত সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত বিল টেলর বিবিসিকে বলেন, ওয়াগনার যোদ্ধাদের আকস্মিক বিদ্রোহের ফলে রাশিয়ার যে কৌশলগত দুর্বলতা সামনে এসেছে, তা কাজে লাগাতে ইউক্রেনীয় বাহিনী ‘ভালো অবস্থানে’ রয়েছে। প্রিগোজিনের বিদ্রোহের বিষয়ে মার্কিন গুপ্তচর সংস্থাগুলো আগে থেকেই ইঙ্গিত পেয়েছিল। এ সপ্তাহের শুরুতে কংগ্রেসের প্রধান নেতাদের পাশাপাশি প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে বিষয়টি জানানো হয়, মার্কিন মিডিয়ার প্রতিবেদন তাই বলছে। সিএনএন জানিয়েছে, মার্কিন গোয়েন্দারা দেখেছে যে, ভাড়াটে গোষ্ঠীর নেতা রাশিয়ার সীমান্তের কাছে অস্ত্র, গোলাবারুদ এবং অন্যান্য সরঞ্জাম সংগ্রহ করছেন।

নিউইয়র্ক টাইমস বলছে, মার্কিন গোয়েন্দাপ্রধানরা কয়েক মাস ধরে প্রিগোজিন এবং রাশিয়ান প্রতিরক্ষা কর্মকর্তাদের মধ্যে বিরূপ সম্পর্কের ওপর নজর রাখছিলেন এবং তারা মনে করেন, ইউক্রেনের যুদ্ধ ওয়াগনার এবং রুশ সামরিক বাহিনী উভয়ের জন্যই খারাপ হয়েছে। এদিকে ওয়াশিংটন পোস্ট বলেছে, যুক্তরাষ্ট্র হয়তো জেনেছে যে প্রিগোজিন জুনের মাঝামাঝি থেকে কিছু পরিকল্পনা করছেন। এর মূল লক্ষ্য ছিল ১০ জুন রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি ডিক্রি। যেখানে মন্ত্রণালয় ওয়াগনার গ্রুপের মতো সব বিদ্রোহী দলকে নির্দেশ দিয়েছিল সরকারের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করতে, যা কার্যকরভাবে প্রিগোজিনের ভাড়াটে সেনাদের দখলে নেওয়া হবে। প্রেসিডেন্ট পুতিনকেও তার নিজস্ব গোয়েন্দারা বলেছিল যে, প্রিগোজিন কিছু একটা ষড়যন্ত্র করছেন। ঠিক কখন পুতিনকে বলা হয়েছিল তা স্পষ্ট নয়, তবে সেটি ‘অবশ্যই ২৪ ঘণ্টারও বেশি সময় আগে’ ছিল, শনিবার এক মার্কিন কর্মকর্তার বরাত দিয়ে পত্রিকাটি বলেছে। টেলিগ্রামে একজন শীর্ষস্থানীয় রাশিয়া বিশ্লেষক তাতিয়ানা স্ট্যানোভায়া লিখেছেন, এলিট বাহিনীর মধ্যে অনেকেই ব্যক্তিগতভাবে পুতিনকে দোষারোপ করবে যে, সবকিছু এতদূর গড়াল অথচ প্রেসিডেন্টের কাছ থেকে যথাযথ প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি; কিন্তু এ পুরো ঘটনাটি পুতিনের অবস্থানের জন্যও একটি আঘাত। যদিও সামগ্রিক রুশ জনমত সম্পর্কে এক কথায় কিছু বলা কঠিন। কেননা রোস্তভ শহরে ওয়াগনার ইউনিট চলে যাওয়ার সময় বেসামরিক মানুষ তাদের যেভাবে সাধুবাদ জানিয়েছে, তা নিয়ে নেতারা উদ্বিগ্ন। তবে এটি লক্ষণীয় যে, কিছু বাসিন্দা ওয়াগনার আসার পর শনিবার ট্রেনে করে শহর ছেড়ে যায়। বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি দেওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই তাদের সঙ্গে সমঝোতা করতে হয়েছে প্রেসিডেন্ট পুতিনকে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

দেশের মাটিতেই ক্যারিয়ারের ইতি টানতে চান সাকিব

মধ্যরাতে শিক্ষা ভবনের সামনে শিক্ষার্থীদের অবস্থান

অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্তসহ আরও যা আছে নতুন এমপিও নীতিমালায়

ফেব্রুয়ারিতেই জাতীয় নির্বাচন সম্পন্ন করতে হবে : বুলবুল

সময়মতো স্বাস্থ্যসেবা পাওয়া আমাদের মৌলিক অধিকার : মাসুদুজ্জামান

‎জকসু নির্বাচন / প্রার্থীদের ডোপটেস্ট আগামী ৯ ও ১০ ডিসেম্বর

ডিসেম্বরের ৬ দিনে রেমিট্যান্স এলো ৬৩ কোটি ২০ লাখ ডলার 

সালমান এফ রহমানসহ ৬ জনের ‎বিরুদ্ধে পৃথক তিন মামলা

ডা. আসিবুলের বেতন বন্ধের নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না : আদালত

আইজিপির অপসারণ ও বিচার চাইলেন পিন্টুর স্ত্রী

১০

নিবন্ধনহীন নারী রাষ্ট্রের চোখে অদৃশ্য : নারীর অধিকার সুরক্ষায় শতভাগ নিবন্ধন জরুরি

১১

চট্টগ্রামে নিহত স্বেচ্ছাসেবক দল নেতার বাড়িতে ব্যারিস্টার মীর হেলাল

১২

কালবেলার অনুসন্ধানে ধরা হানিট্র্যাপ চক্র, আটক ২

১৩

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৬ নেতাকে শোকজ

১৪

দুর্নীতির বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে ব্যর্থ অন্তর্বর্তী সরকার : টিআইবি

১৫

‘দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা এবং দুর্যোগ মোকাবিলায় সর্বদা প্রস্তুত থাকতে হবে’

১৬

আরএমপির ১২ থানায় ওসি পদে রদবদল

১৭

রাবির দ্বাদশ সমাবর্তন নিয়ে অসন্তোষ

১৮

খালেদা জিয়ার সুস্থতার জন্য আইইবিতে দোয়া মাহফিল

১৯

৩২ হাজার সহকারী শিক্ষককে দুঃসংবাদ দিলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা

২০
X