রাজনৈতিক নানা টানাপোড়েনের মধ্যেই নতুন বছর অর্থাৎ ২০২৪ সালের শুরুতেই দেশে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এতে বিভিন্ন দল অংশ নিয়েছে। দেশজুড়ে এখন উৎসবের জোয়ার বইছে। এই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে দেশে আবারও নতুন একটি সরকার আসছে। নতুন মন্ত্রিপরিষদ গঠন হবে। নতুন সরকার ২০২৪ সালজুড়ে শান্তির বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় কাজ করবে এ ব্যাপারে আমি আশাবাদী।
আগামী ৭ জানুয়ারি জাতীয় সংসদ নির্বাচন। নতুন বছরে নির্বাচনের মধ্য দিয়ে যারাই ক্ষমতায় আসুক তারা শান্তি, সুখি, সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে কাজ করবে। নতুন সরকারের লক্ষ্য হোক মানুষের দুঃখ, কষ্টের সমাধান করা। এটাই নবগঠিত সরকারের প্রথম কাজ বা উদ্যোগ বা অঙ্গীকার হতে পারে। আশা করি, তারা এ বিষয়টি ইতিবাচকভাবে নিবে। এই অঙ্গীকার বাস্তবায়ন করা গেলে দেশে চলমান অনেক সমস্যার সমাধান হবে। মানুষ সুখে থাকবে, শান্তিতে বসবাস করবে। রাষ্ট্রের কাছে সাধারণ মানুষের এর চেয়ে বেশি প্রত্যাশা থাকতে পারে না।
নানা চ্যালেঞ্জের মধ্যদিয়ে কেটেছে বিদায়ী বছর ২০২৩। গত বছর সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশও নানামুখী সংকট অতিক্রম করেছে। এর মধ্যে অর্থনীতি, রাজনীতি ও নিত্যপণ্যের দাম বেশি আলোচনায় ছিল। সবকিছু মোকাবিলা করে দেশ এগিয়ে গেছে এ নিয়ে সন্দেহ নেই।
বিদায়ী বছরে পৃথিবীজুড়ে অশান্তি, যুদ্ধ-বিগ্রহ লক্ষ্য করেছি। ৩৬৫ দিন বিশ্বের সর্বত্রই অশান্তি দেখেছি। ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ এখনো চলমান। তেমনি গাজায় ইসরায়েলের হামলা অব্যাহত রয়েছে। গাজায় মানুষের মৃত্যু বিশ্বের সব মানবিক মানুষকে কষ্ট দিচ্ছে। এই যুদ্ধ বন্ধে দেশে দেশে প্রতিবাদ হচ্ছে। এর বাইরেও নানা সংকট রয়েছে পৃথিবীজুড়ে। বিশ্ব নেতাদের প্রতি অবিলম্বে চলমান এসব সংকট ও অশান্তি নিরসনের দাবি উঠছে। এর সঙ্গে রয়েছে অর্থনীতিসহ নতুন নতুন অনেক সমস্যা।
নতুন বছরে পৃথিবীর ৮০০ কোটি মানুষ যেন শান্তিতে থাকতে পারে, এ কমনা করি। পুরোনো দিনের কোনো সংকট, যুদ্ধ, অশান্তি, হত্যা, হানাহানি আর দেখতে চাই না। শান্তি না থাকলে পৃথিবী এগিয়ে যেতে পারে না। আশা করি, শান্তি প্রতিষ্ঠায় বিশ্ব নেতারা এক হয়ে কাজ করবেন। শান্তির বিকল্প কিছু হতে পারে না। আমি চাই, নতুন বছরে শান্তির পৃথিবী প্রতিষ্ঠা হোক।
আমাদের দেশে নির্বাচনের প্রাক্কালে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কর্মকাণ্ড দেখেছি। সারা বছরই বিভিন্ন দলের রাজনৈতিক তৎপরতা ছিল। কারও কম, কারও বেশি। বছর শেষে রাজনীতির নামে নাশকতা দেশবাসীকে আতঙ্কিত ও উদ্বিগ্ন করে তুলেছিল। এ ধরনের বাস্তবতা কেউ প্রত্যাশা করেনি। চেষ্টা থাকলে এসব এড়ানো যেত।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্বাস করতেন, শান্তি প্রতিষ্ঠা না হলে গণতন্ত্র ও দেশ এগিয়ে যেতে পারে না। তাই যে কোনো মূল্যে দেশকে এগিয়ে নিতে হবে। প্রতিযোগিতাময় বিশ্বে পিছিয়ে থাকার কোনো সুযোগ নেই। জাতি হিসেবে আমাদের এগিয়ে চলার কোনো বিকল্প নেই। আমরা চাই গণতন্ত্রের চর্চা হোক সর্বস্তরে। দিন দিন আরও বিকশিত হোক গণতন্ত্র। এ নিয়ে সবার ভাবনা থাকা উচিত। সবাই মিলে শান্তির পৃথিবী গড়ে তুলতে হবে।
লেখক: সাবেক উপাচার্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়