মশায় অতিষ্ঠ চট্টগ্রাম নগরীর বাসিন্দারা। সিটি কর্তৃপক্ষের মশক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম নিয়ে প্রায়ই চলে সমালোচনা। পাশাপাশি বর্ষায় জলাবদ্ধতা তো আছেই। এর সঙ্গে নতুন করে আলোচনায় এসেছে ফুটপাত দখল ও ব্যাটারিচালিত রিকশার দৌরাত্ম্য ঠেকানো এবং পরিচ্ছন্নতা বিভাগে শৃঙ্খলা ফেরানোর চ্যালেঞ্জ। সবমিলিয়ে নিজের মেয়াদের তিন বছর শেষে নগরীর এ পাঁচ চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী। এখন এগুলো মোকাবিলায় নতুন করে ভাবছে কর্তৃপক্ষ।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, সবশেষ চসিকের ৩৯তম সাধারণ সভায় নগরীর এসব সমস্যা নিয়ে জোরালো আলোচনা হয়েছে। অলিগলিজুড়ে দাপিয়ে বেড়ানো ব্যাটারিচালিত রিকশা নিয়ে বিপত্তির কথা তুলে ধরেছেন কাউন্সিলররা। সভায় নগরীর সড়ক ও ফুটপাত থেকে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ, যত্রতত্র ময়লা ফেলা রোধে কঠোর হওয়ার আভাস দিয়েছেন মেয়র রেজাউল। এডিস মশার প্রকোপ শুরু হওয়ার আগেই মশক নিয়ন্ত্রণ জোরদার এবং নগরবাসীর সচেতনতার ব্যাপারে জোর দিয়েছেন কাউন্সিলরা।
এসব সমস্যায় দীর্ঘদিন ধরে জর্জরিত চট্টগ্রাম নগরী। বন্দরনগরীর মশার প্রকোপ নিয়ে প্রায় আলোচনা হয়। বিষয়টি নিয়ে গবেষণার পাশাপাশি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের দ্বারস্থ হয় সংস্থাটি। তবে মশা নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হয়নি। গত বছরও নগরীতে রেকর্ড পরিমাণ মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন।
এদিকে মার্চে নগরীতে সবচেয়ে বড় উচ্ছেদ অভিযান চালায় চসিক। নিউমার্কেট, চট্টগ্রাম রেলস্টেশন, আমতলসহ আশপাশের এলাকায় এক হাজারের বেশি অবৈধ স্থাপনা ও ভ্রাম্যমাণ দোকান উচ্ছেদ করা হয়। উচ্ছেদ চলাকালে ম্যাজিস্ট্রেট-পুলিশের ওপর হামলা, পাল্টাপাল্টি শোডাউন, মামলা, সড়ক অবরোধের মতো ঘটনা ঘটে। এত কিছুর পরও নগরীর বিভিন্ন সড়ক ও ফুটপাত দখলমুক্ত করা যায়নি। সবশেষ চসিকের পক্ষ থেকে ঘোষণা আসে ঈদের পর ফের জোরদার উচ্ছেদ অভিযান চালানো হবে। পাশাপাশি হকারদের জন্য হলিডে মার্কেট চালুর কথা ভাবছে সংস্থাটি।
এ ছাড়া বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতার সংকটও রয়েছে। গত বছরও চার দিন পানিবন্দি থাকতে হয়েছিল নগরবাসীকে। এবারও একই আশঙ্কা করছেন তারা। নগরীর বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় শৃঙ্খলা ফেরানো গেলে জলাবদ্ধতা সমস্যা থেকে মুক্তি মিলবে বলে মনে করছেন চসিক সংশ্লিষ্টরা। তাই বর্ষা মৌসুমের আগেই নগরীর দোকান, বাসাবাড়িসহ বিভিন্ন স্থাপনার ময়লা যত্রতত্র ফেলা ঠেকাতে একজন ডেডিকেটেড ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগের কথা ভাবছে সংস্থাটি।
মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, আমি নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে কাজ করছি। ভালো কাজ করতে গেলে বিভিন্ন বাধা আসবে। সব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেই কাজ করতে হবে। উচ্ছেদ অভিযানের ব্যাপারে ঈদের সময় একটু নমনীয়তা দেখিয়েছি। এখন আবারও ফুটপাত-সড়ক উদ্ধারে অভিযান চলবে। এতে অন্যান্য সংস্থার সম্পৃক্ততা বাড়াতে যোগাযোগ চলছে। উচ্ছেদের পর পুনর্দখল ঠেকাতে মনিটরিং কার্যক্রম জোরদারেও পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এরপর ব্যাটারিচালিত রিকশা নিয়ন্ত্রণে অভিযান চালাব। এ ছাড়া যত্রতত্র ময়লা ফেলা ঠেকাতে একজন ডেডিকেটেড ম্যাজিস্ট্রেট দেব।